খড়গপুর আইআইটির ডিরেক্টর ভিকে তিওয়ারির বিরুদ্ধে অনেক আগেই স্বজনপোষণ থেকে শুরু করে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। তা নিয়ে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রীর কাছে নালিশও জানিয়েছিলেন শিক্ষকরা। এবার খড়গপুর আইআইটি মেন ক্যাম্পাসে থাকা বিসি রায় টেকনোলজি হাসপাতাল সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় তীব্র বিক্ষোভ হল খড়গপুরে। স্থানীয় এবং শিক্ষা কর্মীরা সোমবার সেখানে বিক্ষোভ দেখান। সেইসঙ্গে ডিরেক্টর এবং রেজিস্ট্রারের অপসরণের দাবি জানান। এমনকী হাসপাতাল সরানো হলে সমাবর্তন অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: IIT খড়গপুরে স্বজনপোষণ? অধিকর্তাকে কাঠগড়ায় তুলে মন্ত্রীকে চিঠি শিক্ষকদের
জানা যাচ্ছে, খড়গপুর আইআইটি মেইন ক্যাম্পাসে রয়েছে বিসি রায় হাসপাতাল। সেটি বহু পুরনো। এই হাসপাতালে আইআইটির শিক্ষক, শিক্ষা কর্মী এবং পড়ুয়াদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষ চিকিৎসা করাতে পারেন। ২০২১ সাল থেকে হাসপাতালে আউটডোর চালু হয়েছিল। তাতে সাধারণ মানুষের চিকিৎসার সুযোগ রয়েছে। তবে বিপত্তি ঘটে একটি বিজ্ঞপ্তিকে ঘিরে। আইআইটি কর্তৃপক্ষের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়, এই হাসপাতালটি সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে বলরামপুরে আইআইটি-র দ্বিতীয় ক্যাম্পাসে। সেখানে আরও একটি হাসপাতাল তৈরি হয়েছে, যার নাম শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল। তবে এটি মূল ক্যাম্পাস থেকে ৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
আগামী ৩০ ডিসেম্বর একটি সমাবর্তন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এই হাসপাতালটি পুরোদমে চালু করার কথা রয়েছে। ইতিমধ্যেই অত্যাধুনিক এই হাসপাতালে বিসি রায় হাসপাতাল থেকে বেশ কিছু সরঞ্জাম নিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ হয়েছে। পাশাপাশি কয়েকজন চিকিৎসক, স্বাস্থ্য কর্মীকে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত হয়েছে ।
আসলে দুটি হাসপাতালকে জুড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আইআইটি কর্তৃপক্ষ। তার ফলে বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে বিসি রায় হাসপাতাল। ফলে স্বাভাবিকভাবেই যারা এতদিন বিসি রায় হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য যাচ্ছিলেন তাদেরকে চিকিৎসার জন্য যেতে হতে পারে ৩ কিলোমিটার দূরে।
সেই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেই সোমবার ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ শুরু হয়। এ বিষয়ে পেনসার্স অ্যাসোসিয়েশনের এক সদস্য জানান, এই ধরনের অন্যায় কোনওভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। প্রয়োজনে সমাবর্তন অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হবে। এদিকে, স্থানীয়রা শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখান। তাদের বক্তব্য, হাসপাতাল জুড়ে দেওয়া হলে সেক্ষেত্রে সাধারণ মানুষ চিকিৎসার সুযোগ পাবেন না।
যদিও আইআইটি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, যে বলরামপুর হাসপাতালে অত্যাধুনিক অপারেশন থিয়েটার এবং উন্নতমানের যন্ত্রপাতি রয়েছে। সেখানে ৫০ শয্যা রয়েছে। স্থানীয়রা আগের মতোই চিকিৎসার সুযোগ পাবেন। পাশাপাশি যাদের বিসি রায় হাসপাতাল থেকে শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী হাসপাতালে স্থানান্তর করা হবে তাদের আগের মতোই বেতন কাঠামো থাকবে। তাছাড়া কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, হাসপাতালের দূরত্ব খুব বেশি নয়। ফলে যাতায়াতে খুব বেশি খরচ হবে না। শুধু তাই নয়, যাতায়াতের জন্য টোটোর ব্যবস্থা করা হবে বলেও আইআইটির তরফে জানানো হয়েছে। তাদের বক্তব্য, এই হাসপাতালের ফলে রোগীদের চিকিৎসার জন্য আর কলকাতায় যেতে হবে না। কারণ এখানে অত্যাধুনিক চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে।