করোনা আতঙ্কে এখন 🦩কাঁপছে গোটা দেশের মানুষ। তীব্র এক ভয় গ্রাস করেছে সকলকে। এই পরিস্থিতিতে নিজের কথা না 🌸ভেবেই করোনা-যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন ধৃতিমান সেনগুপ্ত। মঙ্গলবারই নিজের থেকে ৮ বছরের ছোট বোনকে করোনায় হারিয়েছেন। তবু তিনি ভেঙে পড়েননি। থামেনি তাঁর লড়াই।
হাজরার বাসিন্দা ধৃতিমান করোনার একেবারে শুরু মানে গত বছর থেকেই নানা ভাবে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছিলেন। একেবারে শুরুতে কাছের পাঁচ-ছয় জন বন্ধুকে পাশে পেয়েছিলেন। তারা কয়েক জন মিলেই করোনা আক্🏅রান্ত বা লক ডাউনের জেরে যাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত, তাঁদের নানা ভাবে সাহায্য করার চেষ্টা করতে শুরু করেছিলেন।
বাড়ি বাড়ি অস্কিজেন স🍰িলিন্ডার পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা থেকে হাসপাতালের বেডের ব্যবস্থা করা, ওষুধ থেকে শুরু করে যাঁর যা প্রয়োজন, সবটাই ব্যবস্থা করে দিচ্ছিলেন ধৃতিমানরা। তবে পরের দিকে কাজের চাপ বাড়তে শুরু করে, সাহায্যের জন্য চারদিক থেকে অনুরোধ আসতে শুরু করলে সামলে🐈 উঠতে পারছিলেন না। এর পরই একটি হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ খোলেন ধৃতিমান। নাম দেন কোভিড লোক্যাল টাস্ক ফোর্স-জেড। এই গ্রুপে তিনি বিভিন্ন পরিচিতদের অ্যাড করতে শুরু করেন। এখন এই গ্রুপে দু'শোর উপর সদস্য রয়েছেন। বড় বড় পোস্টে চাকরি করেন, এমনও অনেকেই রয়েছেন। যে যাঁর মতো করে সাহায্য করার জন্য ধৃতিমানের পাশে দাঁড়িয়েছেন।
এখন ধৃতিমানরা আরও বড় করেই এই কোভিড যুদ্ধে সামিল হতে পেরেছেন। শুধু কলকাতা বা কলকাতার আশেপাশে নয়, ধৃতিমান ব্রিগেড ছড়িয়ে পড়েছে গোটা বাংলায়। এমন কী শিলিগুড়িতেও♊ তারা সাহা♚য্য করতে পৌঁছে যাচ্ছে।
ধৃতিমান বলছিলেন, ‘প্রথমে আমরা কয়েক জন মিলেই কাজটা শুরু করেছিলাম, কিন্তু এত বেশি অনুরোধ আসতে শুরু করে, সামলে উঠতে পারছিলাম না। তাই হোয়াটস গ্রুপটা তৈরি করি। এর পর আমরা আরও বেশি মানুষের সাহায্যে এগিয়ে যেতℱে পেরেছি। এমন কী বিভিন্ন ভলেন্টিয়ারের মাধ্যমে শিলিগুড়িতেও আমাদের পরিষেবা পৌঁছে দিয়েছি।’
ধৃতিমান জানিয়েছেন, এই গ্রুপের সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক বা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা যুক্ত নয়। শুধুমাত্র সাধারণ কয়েক জন মানুষ নিজেদের ত﷽াগিদ আর বিবেক থেকেই এই কোভিড-যুদ্ধে সামিল হয়েছেন। দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার পর আরও কাজের চাপ বেড়েছে। তবে অক্সিজেন, রক্ত, ওষুধ, খাবার যখন যাঁর যা প্রয়োজন, সবটাই হাসিমুখে পৌঁছে দিচ্ছে ধৃতিমানের দল।
করোনায় আক্রান্ত হয়ে মঙ্গলবার মারা গিয়েছেন ধৃতিমানের বোন। সেই যন্ত্রণা বুকে নিয়েই বুধবার দুঃস্থদের কাছে বিনা মূল্যে খাবার প﷽ৌঁছে দিয়েছেন। ধৃতিমান বলছিলেন, ‘আমার কাছেই থাকত বোন। ও তো এখন চলেই গিয়েছে। তবে যাঁরা এখনও বেঁচে রয়েছেন, তাঁদের লড়াইটা কিছুটা হলেও সহজ করার চেষ্টা করছি। লকডাউন চলছে বলে বহু মানুষ এখন সমস্যায় পড়েছে। তাই একটা ফুড ক্যান্টিনের ব্যবস্থা করেছি। যাঁরা খাবার বানাচ্ছেন, তাঁরাও কিছু টাকা রোজগার করতে পাচ্ছেন। আর যাঁরা অভুক্ত, লকডাউনের জন্য কোনও কাজ করতে পারছেন না, তাঁদের মুখে দু'মুঠো ভাত তুলে দেওয়ার চেষ্টা করছি।’
নিজে একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করেন। তাতে কী যায় আসে! মানুষের এই অসহায়তাই তাঁকে ঘরে বসে থাকতে দেয়নি। ৩৯ বছরের ধৃতিমান যেন কলকাতার সোনু সুদ হয়ে উঠেছেন। সব কিছুর মুশকিল আসান। না জানি এমন কত ধৃতিমান রয়েছেন পর্দার আড়ালে, যাঁরা কোভিড-যুদ্ধ অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছেন। এর বিনিময়ে কোনও চাহিদাও তাঁদের নেই। শুধু আগের মতো কলকাতা-সহ গোটা ভারতকে তাঁরা মুক্ত বাতাসে অক্সিজেন নিতে♏ দেখতে চায়, প্রাণ খুলে হাসতে দেখতে চায়!