এশিয়া মহাদেশে পরিযায়ী শ্রমিকদের অভিবাসন নিয়ে তিনদিনের আন্তর্জাতিক কনফারেন্সের আয়োজন করল এশিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি। তিন দিনের এই অনুষ্ঠান শুরু হয় ২৩ এপ্রিল। ‘মাইগ্র্যান্ট এশিয়া: ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন মাইগ্র্যান্টস ইন দ্য মেকিং অফ এশিয়া’ এই অনুষ্ঠানে ৬০ জনেরও বেশি অধ্যাপক, গবেষকরা অংশগ্রহণ করেন। এশিয়ার বিভিন্ন শহর, তার শ্রম ব্যবস্থা, সামাজিক কাঠামো এবং রাজনৈতিক-ভৌগোলিক অবস্থান নিয়ে আলোচনা হয়। কীভাবে এই বিষয়গুলি অভিবাসন ব্যবস্থার উপর প্রভাব ফেলছে, তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন বিশিষ্ট গবেষক ও অধ্যাপকরা।
যাঁরা বক্তব্য রাখেন, তাঁদের মধ্যে প্রথমেই ছিলেন AIT-র প্রেসিডেন্ট পাই চি লি। তিনি বলেন, ‘বর্তমান যুগে মাইগ্রেশন নিয়ে নতুন করে ভাবনাচিন্তা করতে হবে। কারণ এই শব্দটা মাথায় এলেই নেতিবাচক মনোভাব চলে আসে।’ কনফারেন্সে বক্তারা এই বিষয়ে আলোচনা করেন, কীভাবে এশিয়া তৈরি হওয়ার পিছনে ভূমিকা ছিল এই মাইগ্রেশনের। এর মধ্যে পরিযায়ী শ্রমিকরা সদর্থক ভূমিকা পালন করেছেন। ইমিরের মুখ্য কোঅর্ডিনেটর অধ্যাপক লিডিয়া পটস এর পরে বলেন, এই কনফারেন্সে প্রায় ৬০ থেকে ৬৫ জন অংশগ্রহণ করেছেন। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তাঁরা এসেছেন। অধ্যাপক লিডিয়ার মতে, এই নানা এলাকার নানা ধরনের মানুষের অংশগ্রহণই প্রমাণ করে দেয়, এই ধরনের মাইগ্রেশন কেন আদতে দরকারি।
অনুষ্ঠানে অধ্যাপক রণবীর সমাদ্দারকে সম্মান জানানো হয় তাঁর রবীন্দ্র পুরস্কারের জন্য। এই অনুষ্ঠানের প্রধান আয়োজক অধ্যাপক পলা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বলেন, এই শতাব্দীর সবচেয়ে আলোচিত শব্দ হল মাইগ্রেশন। তার পাশাপাশি এই ধরনের একটি কনফারেন্সে যেভাবে নানা মহাদেশ থেকে ছাত্রছাত্রী গবেষকরা এসে যোগদান করেছেন, সেটিই প্রমাণ করে বৈচিত্র্য কেন দরকারি। কারণ এই বৈচিত্র্যের মধ্যে দিয়েই ভাবনার আদান প্রদান হয় এবং নতুন ভাবনার জন্ম হয়।
অধ্যাপক সমাদ্দারও তুলে ধরেন কীভাবে এখন দেশের সুরক্ষার কথা ভাবতে গিয়ে মানুষের সুরক্ষার কথা ভাবা হয় না। সকলের কথাতেই ঘুরে ফিরে সেই একটি প্রসঙ্গই ফিরে ফিরে আসে কীভাবে মানুষের স্বাভাবিক গতিপ্রকৃতি ব্যাহত হয় রাজনৈতিক সীমারেখার কারণে। একে অপরকে নিয়ে চলার মাধ্যমেই যে আসলে এর সমাধান সূত্র খুঁজে পাওয়া সম্ভব, সেটার কথাই তুলে ধরেন তাঁরা। একই সুর শোনা যায় অধ্যাপক নেড রসিটারের কথাতেও।

তিনদিনের এই কনফারেন্স আৎওজনের নেপথ্যে ছিল AIT-এর সেন্টার অন জেন্ডার অ্যান্ড ফোর্সড ডিসপ্লেসমেন্ট (CGFD), ইউরোপিয়ান মাস্টার ইন মাইগ্রেশন অ্যান্ড ইন্টারকালচারাল রিলেশনস (EMMIR) এবং মহানির্বান ক্যালকাটা রিসার্চ গ্রুপ (CRG)। সম্মেলনটিকে সমর্থন করে ইউরোপিয়ান এডুকেশন অ্যান্ড কালচারাল একজিকিউটিভ এজেন্সি ও কানডার ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট রিসার্চ সেন্টার।
আরও পড়ুন - পাক ইউটিউবার হানিয়ার জন্য দুশ্চিন্তায় নাজেহাল, শেষমেশ জলের বোতল পাঠাল ভারতীয় ফ্যান, ভাইরাল ভিডিয়ো
উদ্বোধনী অধিবেশনে বক্তৃতা দেন অধ্যাপক নেড রসিটার এবং অধ্যাপক রণবীর সমাদ্দার। অভিবাসন ব্যবস্থাপনায় ডিজিটাল পরিকাঠামোর ভূমিকার কথা উঠে আসে তাঁদের কথায়। শহরাঞ্চলের প্রশাসনে অভিবাসীদের প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ স্থানের উপর আলোকপাত করা হয়। অধিবেশনটির সভাপতিত্ব করেন AIT-এর উন্নয়ন ও স্থায়িত্ব বিভাগের (DDS) প্রধান অধ্যাপক মকবুল মোরশেদ আহমেদ।