গান গাইতে, গাইতে মঞ্চে এন্ট্রি নিলেন অডিয়েন্স এর মধ্যে দিয়ে । রূপম ইসলামের একক উপস্থাপনায় সবসময়ই মূল বিষয়— সমসময়। সমসাময়িক সমাজ সম্পর্কে তাঁর একক অনুষ্ঠান মন্তব্য করে, গানের উদাহরণ সহযোগে। ঠিক তেমনই, রূপমের ব্যক্তিগত ইতিহাস, তাঁর জীবনের গল্পও একক অনুষ্ঠানের বিষয় হয়ে ওঠে বরাবরই। এবারের একক তেমনই তাঁর সাঙ্গীতিক জীবনের এক ইন্টারেস্টিং বৃত্ত সম্পূর্ণ করলোন। ইংরেজিতে যেটাকে বলা হয় ‘হোমকামিং’। সংরাইটার/পারফর্মার রূপমের জীবনে একটা খুব গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটেছিল এই মঞ্চেই।
তাঁর পথচলার একদম শুরুর দিকে, ১৯৯৫ সালের ৪ঠা সেপ্টেম্বর, এই মঞ্চেই একটি অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটেছিল। তরুণ রূপমকে তাঁর নিজের লেখা গান পারফর্ম করতে না দিয়ে সেদিন রক সংগীতে অনভ্যস্ত শ্রোতারা উদ্ধত ভঙ্গীতে মঞ্চে উঠে এসে আক্রমণে উদ্যত হন। তাঁকে এভাবেই তাঁরা মঞ্চ থেকে জোর করে নামিয়ে দেন। রূপমকে সেদিন সেই সব উগ্র দর্শক-শ্রোতার মুখে শুনতে হয়েছিল — ‘বাংলায় রক হয় না। গান না থামালে মার খেতে হবে।’ এভাবেই ‘বাংলা রক-জীবন’ শুরু করেছিলেন সেদিনের প্রত্যাখ্যাত সেই তরুণ, রূপম ইসলাম। গানের ফাঁকে শোনালেন সেই মুহূর্তের কথা।
এবারে একক আয়োজনের অন্য আরেকটি উদযাপনযোগ্য কারণও আছে। যখনই একটি একক সাফল্যের সঙ্গে অনুষ্ঠিত হয়, তখনই প্রচুর ভাল, ভাল দর্শক প্রতিক্রিয়া আসতে থাকে এবং সেই সব প্রতিক্রিয়া সমাজ মাধ্যমে যাঁরা পড়েন, তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ বলেন— তাঁরা আগের অনুষ্ঠানটি কোনও কারণে মিস করেছেন। তখন আর একক-সংগঠকদের পক্ষেও আর কিছু করা সম্ভব থাকে না। টাইম মেশিন তো হাতে নেই! আগের এককটিতে দর্শক হিসেবে আসবার সুযোগ আবার ফিরিয়ে দেওয়া তো অসম্ভব! এইবার একটা সুযোগ এসেছিল যে, আমরা আগের এককের সাফল্য উদযাপন করতে পারছি। এই উদযাপন করা হচ্ছে অপেক্ষাকৃত বৃহদাকার পরিসরে, প্রায় দ্বিগুণ সংখ্যক দর্শক শ্রোতার জন্য।
রূপম ইসলামের কথায়,"আমরা বেশিরভাগ সময়ই একটা একক শেষ করে আরেকটা এককের আয়োজন দ্রুত করে উঠতে পারিনি। তার অনেকরকম কারণ আছে। একটা বড় কারণ, এতদিন আমরা এককের জন্য তেমন করে স্পন্সরশিপ গ্রহণে বিশ্বাসী ছিলাম না। তবে বোরোলীন যখন ভালবেসে এগিয়ে এলেন, তাঁদের কথা স্বতন্ত্র।’