ঘুরতে যেতে বরাবর ভালোবাসতেন রবীন্দ্রনাথ। আর সেই সুবাদে গাড়ি চড়তেও বেশ ভালোবাসতেন কবিগুরু। ১৯৩৮ সাল। কবির শরীর তেমন ভালো নেই। কিন্তু আশ্রম প্রাঙ্গণে হাঁটাহাঁটি করতেন নিয꧂়মিত। এই বছরই আমেরিকা থেকে কৃষিবিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা শেষ করে দেশে ফিরলেন রবীন্দ্রনাথের জ্যেষ্ঠ পুত্র রথীন্দ্রনাথ ঠাকুর। পিতার কষ্ট লাঘব করতে সেই বছরই হাম্বার মডেলের গাড়ি কিনে দেন রথী। ১৯৩৩ সালের হাম্বার মডেলের গাড়িটি পেয়ে ভীষণ খুশি হন কবি। দুই বেলা নিয়ম করে গাড়ি চেপে ঘুরতে বেরোতেন রবীন্দ্রনাথ।
সুভাষ, নেহরু চড়েছেন অনেকেই
শান্তিনিকেতনে থাকাকালীন এই গাড়ি রবীন্দ্রনাথের প্রায় নিত্যসঙ্গী হয়ে উঠেছিল। রাস্তাঘাটে ওই গাড়ি দেখা গেলেই কারও বুঝতে অসুবিধা হত না ভিতরে কে বসে আছেন। তবে শুধু রবীন্দ্রনাথ নন, হাম্বার মডেলের এই গাড়িতে চড়েছেন সুভাষচন্দ্র বসু, মহাত্মা গান্ধী, জওহরলাল নেহরুও। কলকাতার পার্ক স্ট্রিট থেকে রথীন্দ্রনাথ গাড়িটি কেনেন তাঁর বাবার জন্য। তখনকার দিনে ৪০০ পাউন্ড (অরꦍ্থাৎ ভারতীয় মুদ্রায় ৫৩ হাজার টাকা) খরচ হয় এই গাড়ি কিনতে। ভারত আর তখনকার বর্মাদেশে হাম্বার গাড়ির একমাত্র ডিলার ছিল ‘এইচ এইচ লিলি’। তাদের থেকেই কেনা হয়েছিল একজোড়া হাম্বার গাড়ি। একটি গাড়ি ছিল জোড়াসাঁকোতে, অন্যটি রাখা হয়েছিল বিশ্বভারতীতে।
গাড়ির উপর শীতলপাটি দেন কবি
১৮৬৮ সাল। থমাস হাম্বার নিজের নামে তৈরি করলেন হাম্বার কোম্পানি। ব্রিটিশ গাড়ির কোম্পানি ধীরে ধীরে বিখ্যাত হয়ে উঠল গোটা পৃথিবীতে। ꦺএই সংস্থার অন্যতম সেরা গাড়ি ছিল ১৯৩৩ সালের হাম্বার স্নাইপ এবং পুলম্যান সেডান। ৪ লিটারের ইঞ্জিন ধারনক্ষমতা ছিল এই গাড়ির। যা সেই সময়ের নিরিখে যথেষ্ট শক্তিশালী। তবে রবীন্দ্রনাথ তাঁর কেনা গাড়িকে নিজের মতো সাজিয়ে নিয়েছিলেন। শান্তিনিকেতনের দাবদাহ। গাড়ির মধ্যে বসলে গরম ল⛎াগা স্বাভাবিক। তখনও গাড়িতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের প্রযুক্তি আসেনি। তাই গাড়ির উপর শীতলপাটি বিছিয়ে নিয়েছিলেন কবি। বর্তমানে এই গাড়িটি বিশ্বভারতীর রবীন্দ্র ভবনে সংরক্ষিত রয়েছে।