পাখি ಌহিসেবে সমাজে কাকের তেমন মানসম্মান নেই। কিন্তু ব্রিটিশ সাম্রাজ্যে বিশেষ কিছু কাকের অস্তিত্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূ্র্ণ। বেতনভোগী এক মানুষ সারাদিন সেই কাকের দেখাশোনা করেন। নানাভাবে এই প্রাণীর তোয়াজ করে চলেছেন তিনি।
টাওয়ার অব লন্ডন, তথা ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের প্রকৃত রক্ষী হিসেবে দাঁড়কাক পরিচিত। এই প্রাণীর উপর ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের ভাগ্য নির্ভর করছে। ক্রিস্টোফর স্কাইফ ‘হার ম্যাজেস্টি’-র কাকের দেখাশোনার দায়িত্ব পালন করেন। তিনি টাওয়ার অব লন্ডনে রেভেন মাস্টার। নিজের কাজের গুরুত্ব বর্ণনা করে তিনি বলেন, ‘কিংবদন্তি অনুযায়ী ক💦াক যদি কখনও টাওয়ার অব লন্ডন ছেড়ে চলে যায়, তাহলে সেটি ধুলায় মিশে যাবে এবং আমাদের সাম্রাজ্যের অনিষ্ট হবে। সে কারণে এই প্রাণীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমা🥃র দায়িত্ব।’
রোজ সকালে অবশ্যই তাঁকে সবার আগে কাকের কাছে যেতে হয়। ২০১১ সাল থেকে ক্রিস্টোফার স্কাইফ টাওয়꧑ার অব লন্ডনে রেভেন মাস্টারের দায়িত্ব পালন করছেন। বর্তমানে আটটি পাখির দেখাশোনাই তাঁর একমাত্র কাজ। কাকগুলি ইচ্ছামতো উড়ে বেড়াতে পারে। ক্রিস্টফ তাঁদের সব কিছু খুব ভালো করেই চেনেন। তার মতে, ‘প্রাণীগুলি বড়ই অদ্ভুত। প্রত্যেকের নিজস্ব চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। কয়েকটি বেশ উদ্ধত। কয়েকটি আবার খুব লাজুক। কিছু কাকের ভীষণ কৌতূহল রয়েছে। আমাকে তাই কাকের চরিত্র সম্পর্কে অভ্যস্ত হতে হয়। শুধু পর্যবেক্ষণের মাধ্যমেই আমি সেই কাজ করতে পারি।’
টাওয়ার অব লন্ডনকে ঘিরে কাহিনি ও রহস্যের শেষ নেই। কুসংস্কারের বেড়াজালের কারণে সপ্তদশ শতাব্দী থেকে রাজকীয় ডিক্রির দৌলতে সেখানকার কাক বিশেষ সুরক্ষার আওতায় রয়েছে। ‘ইওম্যান ওয়ার্ডার্স’-রা টাওয়ারের রক্ষী হিসেবে কাক পাহারা দেন। টাওয়া𒅌রটি এককালে রাজপ্রাসাদ, কারাগার এবং অস্ত্রাগার হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।
ক্রিস্টোফর স্কাইফ আজীবন এই দায়িত্ব পালনের ব্রত নিয়েছেন। তিনি সপরিবারে টাওয়ারেই বাস করেন। কাক যাতে পালিয়ে না যায়, সারা দিন ধরে তিনি সে♉ বিষয়ে মাথা ঘামান। সঠিক খোরাক এ ক্ষেত্র൲ে অন্যতম নিরাপদ কৌশল।
ইঁদুর ও ছুঁচোর পাশাপাশি রক্তমাখা বিস্কুটও কাকের পছন্দ। কিন্তু কখনও সেটাও যথেষ্ট হয় না। ক্রিস্টোফর স্কাইফ বলেন, ‘এখানে কাক ধরে রাখতে মাঝে মাঝে আমি ওড়ার পꦺাখা একটু ছেঁটে দেই। ‘কাটা' শব্দটি আমার সঠিক মনে হয় না। তবে রেভেন মাস্টার হিসাবে আমি অনেক বছর সেই কাজ থ🅰ামাতে পেরেছি। ফলে এখন কাক টাওয়ারের আশেপাশে উড়ে বেড়ায়। আমি কাকের মাপ ও ওজন অনুযায়ী ডানা খুব সামান্য ছেঁটে দিই। সেগুলির সঙ্গী ও বছরের সময় অনুযায়ীও আমি তা স্থির করি।’
কখনও কাক ফুটবল খেলতে ভালোবাসে। এই প্রাণীর অশুভ ভূমিকার সঙ্গে এমন আচরণ মোটেই খাপ খায় না। স্কাইফ মনে করেন, ‘ইতিহাস জুড়ে দাঁড়কাককে অশুভ লক্ষণ ও মৃত্যুর সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। কাক একেবারে প্রথম যুগের পাখি। কারণ অত্যন্ত বুদ্ধিমান প্রাণী হিসেবে কাক মানুষকে যুদ্ধে অনুসরণ করেছে। ফলে কাকেরও অশুভ ভাবমূর্তি গড়ে উঠেছে। কিন্তু এখানে, টাওয়ার অব লন্ডনে কাকের গুরুত্ব অন্যরকম। কারণ কাক কখনও টাওয়ার অব লন্ডন ছেড়ে চলে গেলে সেটি ধসে পড়বে এবং সাম্🌳রাজ্যের অনিষ্ট ⛄হবে। তাই এখানে কাক শুভ শক্তি।’
প্রতি সন্ধ🗹্যায় ক্রিস্টোফর স্কাইফ তার কাকেদের ঘুম পাড়ান। এভাবেই তার দিনের কাজ শেষ হয়। সাম্রাজ্যের পতন এড়াতে তিনি আরো একবার স🐎ফল হন।