বিহারের বক্সারে অবস্থিত একটি জনপ্রিয় রেস্তোরাঁকে সাড়ে তিন হাজার টাকা জরিমানা করল বিহার প্রশাসন। কিন্তু কেন এমন জরিমানা? পচা খাবার দেওয়া বা বিষক্রিয়ার অভিযোগ কিন্তু নেই এই রেস্তোরাঁর বিরুদ্ধে। অভিযোগ, মশলা ধোসার সঙ্গে সম্বর না দেওয়ার। হ্যাঁ, ঠিক এমনই ঘটনা ঘটেছে বিহারের বক্সার জেলায়। অভিযোগকারী মণীশ এই কারণেই অভিযোগ করেছিলেন রেস্তোরাঁর বিরুদ্ধে। সূত্রের খবর প্রায় ১১ মাস আগে, গত বছরেরে অগস্ট মাসে তিনি ডিস্ট্রিক্ট কমিশন অফ বক্সারে এই মর্মে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। প্রায় এক বছর পর মামলার শুনানিতে অভিযুক্ত হল রেস্তোরাঁ কর্তৃপক্ষ।গত বছরের ১৫ অগস্ট অভিযোগকারী মণীশ পাঠক বক্সারের ওই রেস্তোরাঁতে গিয়ে স্পেশাল মশলা ধোসা অর্ডার দেন। পারিবারিক অনুষ্ঠান থাকায় মশলা ধোসা বাড়িতে পার্সেল করে পাঠানোর কথা জানায় সে। মশলা ধোসার জন্য তিনি ১৪০ টাকার বিলও দিয়ে আসেন।। কিন্তু বিপত্তি ঘটে এরপর। মণীশবাবুর অভিযোগ, রেস্তোরাঁ থেকে নিয়ে আসা মশলা ধোসার পার্সেলে সম্বর ছিল না। মশলা ধোসার মেনুর সাথে সম্বর না পেয়ে বিরক্ত হন তিনি। অভিযোগ জানান রেস্তোরাঁ কর্তৃপক্ষকে। মণীশবাবু জানতে চান, কেন পার্সেলে মশলা ধোসার সঙ্গে সম্বর দেওয়া হয়নি। কিন্তু, রেস্তোরাঁ তাঁর অভিযোগকে খুব একটা গুরুত্ব দেয়নি। বিরক্ত হয়ে তিনি যখন রেস্টুরেন্টে পৌঁছান, তখন বিবাদ চরমে পৌঁছায়। রেস্তোরাঁর মালিক মণীশবাবুর প্রশ্নের জবাব না দিয়ে উল্টে বলেন, ‘আপনি কি ১৪০ টাকায় পুরো রেস্টুরেন্টটি কিনতে চাইছেন?’ এরপরেও মণীশ রেস্তোরাঁর ম্যানেজারের কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ করেন। তারও কোনও সদুত্তর পাননি তিনি। এরপরই ক্রেতা সুরক্ষা দপ্তরের শরণাপন্ন হন মণীশ। তিনি জেলার ক্রেতা কমিশনের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ।প্রায় বছর খানেক আগের এই অভিযোগের শুনানি হয় সম্প্রতি। শুনানিতে রেস্তোরাঁর গাফিলতিই স্পষ্ট হয়। এরপর প্রধান বিচারপতি জে জয়প্রকাশের ডিভিশন বেঞ্চ কড়া পদক্ষেপ নেন বক্সারের রেস্তোরাঁটির বিরুদ্ধে। ক্রেতাকে মানসিকভাবে অপদস্ত করার জন্য দুই হাজার টাকা এবং শারীরিক ও আর্থিক ভাবে হেনস্থার জন্য ১৫০০ টাকা জরিমানা করা হয় রেস্তোরাঁটিকে। নির্দেশ দেওয়ার হয়েছে, ৪৫ দিনের মধ্যে ক্রেতাকে ৩,৫০০ টাকা জরিমানা হিসেবে দেওয়ার জন্য। ৪৫ দিন সময়সীমার মধ্যে জরিমানা দিতে না পারলে আট শতাংশ সুদে ওই টাকা আদায় করা হবে বলে ক্রেতা সুরক্ষা আদালত ওই রেস্তোরাঁকে এই হুঁশিয়ারি দিয়েছে। রেস্তোরাঁর এহেন দায়হীন আচরণের ফলই ভোগ করতে হয় তাদের। আশা করা যায় বিহারের এই ঘটনার পর আগামীতে ক্রেতাদের প্রতি আরও যত্নশীল হবেন বিক্রেতারা।