ধারাবাহিকভাবে ঘণ্টায় ১৪৫ কিলোমিটারের বেশি গতিতে বল ছুঁড়ে একটা সময়ে সেনসেশন হয়ে উঠেছিলেন উমরান মালিক। কিন্তু বর্তমানে তিনি কোথায়? কীভাবে হারিয়ে গেলেন উমরান মালিক? ভারতীয় দলে তাঁর ফিরে আসার উপায় কী? সব প্রশ্নের উত্তর দিলেন বোলিং কোচ পরশ মামব্রে।
ভারতীয় দল থেকে কীভাবে হারিয়ে গেলেন স্পিড স্টার উমরান মালিক? (ছবি-এএফপি)
ভারতের পেস বোলিংয়ের কথা আসলে একটা নাম বারবার সামনে উঠে আসবে সেটি হল উমরান মালিক। আইপিএলে নিজের প্রথম মরশুমেই বিশ্ব ক্রিকেট দেখেছিল তাঁর গতি। সকলকে অবাক করে দিয়েছিলেন কাশ্মিরের এই ছেলে। এত দ্রুত গতির বোলার ভারতে সাধারণত দেখা যায় না। বিশেষজ্ঞরা বলতেন উমরান মালিক বিরল প্রতিভা। ধারাবাহিকভাবে ঘণ্টায় ১৪৫ কিলোমিটারের বেশি গতিতে বল ছুঁড়ে একটা সময়ে সেনসেশন হয়ে উঠেছিলেন উমরান মালিক। কিন্তু বর্তমানে তিনি কোথায়? কীভাবে হারিয়ে গেলেন উমরান মালিক? ভারতীয় দলে তাঁর ফিরে আসার উপায় কী? সব প্রশ্নের উত্তর দিলেন বোলিং কোচ পরশ মামব্রে।
২০২১ সালে আইপিএলে স্প্ল্যাশ করার পরে, উমরান মালিক ২০২২ সালে ভারতের হয়ে তার টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক অভিষেক করার সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু ভারতের জার্সিতে বেশিদিন দেখা যায়নি তাঁকে। শীঘ্রই তিনি রাডার থেকে অদৃশ্য হয়ে যান। ২০২৪ সালের আইপিএলে সানরাইজার্সের প্লেয়িং ইলেভেনেও তিনি নিয়মিত জায়গা পাননি। ভারতের বিদায়ী বোলিং কোচ পরশ মামব্রে এ বিষয়ে আলোকপাত করেছেন। নিজের মতামত জানিয়েছেন মামব্রে। তিনি জানিয়েছেন কেন উমরান মালিক আর দলে নেই। মামব্রে স্বীকার করেছেন যে এই ধরনের গতি সত্যিই বিরল, কিন্তু নিয়ন্ত্রণের অভাবের কারণেই, বর্তমানে উমরান মালিক ভারতীয় দলের অংশ নন।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সঙ্গে কথোপকথনের সময়ে পরশ মামব্রে বলেন, ‘আমি মনে করি প্রতিভা তৈরি করতে হবে। কারো যদি এত গতি থাকে তবে সে বিরল। তিনি যখন প্রথমবার আসেন, তখন তিনি ১৪৫-১৪৮ গতিতে বোলিং করছিলেন। আমি মুগ্ধ নই যে স্পিডগানের গতি প্রতি ঘণ্টায় ১৬০ কিলোমিটার দেখানো হয়েছে। কারণ আমি এটা ঠিক মনে করি না। আপনি বুঝতে পারেন যে গতি তার শক্তি। তিনি অবশ্যই খুব দ্রুত। একটানা ১৪০ এর উপরে বল করতে পারেন। এই গতিতে একটানা বল করা ভালো। এবং তিনি তাই করেছেন। কিন্তু কীভাবে তিনি এটা করবেন? টি-টোয়েন্টিতে নিয়ন্ত্রণ না থাকলে লড়াই করতে হবে। যদি একবার আপনার সঙ্গে এটি ঘটে তবে আপনি অধিনায়কের বিশ্বাস হারাবেন।’
মামব্রে ব্যাখ্যা করেছেন কেন মালিকের জন্য রঞ্জি ট্রফি খেলা গুরুত্বপূর্ণ। তিনি মনে করেন, এই তরুণ পেসারের উচিত চাপ সামলানো এবং কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হয় সেটা শেখা। তিনি আরও বলেছেন, ‘তাঁকে নিজের গতিকে নিয়ন্ত্রণ করতে শিখতে হবে। এটা শুধুমাত্র রঞ্জি ট্রফি খেলেই অর্জন করা যায়। তাই আমরা তাঁকে রঞ্জি ট্রফি খেলতে বলছি। সেখানে একটা মরশুম খেলার পর যখন সে ফিরে আসবে, সেটাও চাপের মধ্যে, সে তার দক্ষতা কাজে লাগাতে শিখবে।’
উমরান মালিককে একবার পাকিস্তানের শোয়েব আখতারের সঙ্গে তুলনা করা হচ্ছিল। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দ্রুততম বল করার রেকর্ডটি রয়েছে আখতারের নামে। ২০০৩ বিশ্বকাপে, আখতার ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে নিক নাইটের কাছে ১৬১.৩ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা গতিতে বলটি বোলিং করেছিলেন। তবে শোয়েবের সঙ্গে তুলনা করার কিছুদিনের মধ্যেই যেন উধাও হয়ে যান উমরান মালিক। মালিক, যিনি ভারতের হয়ে ১০টি ওডিআই এবং ৮টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন, এই দুটি ফর্ম্যাটে যথাক্রমে ১৩ এবং ১১টি উইকেট নিয়েছেন। ৫০ ওভারের ফর্ম্যাটে তার ইকোনমি রেট ৬.৫৪ এবং টি-টোয়েন্টিতে হয়েছে ১০.৪৮।