বাবা ও ছেলে মিলে এবার এক অন্য টুইস্ট! খ্যাতনামা নাট্য ব্যক্তিত্ব জয়ন্তমোহন বন্দোপাধ্যায় এবং তাঁর পুত্র, বাংলা টেলিভিশনের অত্যন্ত জনপ্রিয় মুখ জয়জিৎ বন্দোপাধ্যায় মিলে তৈরি হল এক সংক্ষিপ্ত চলচিত্র। এখানে কিন্তু পুত্র জয়জিৎ রয়েছেন পরিচালকের আসনে। এবং ছবির একমাত্র চরিত্রে অভিনয় করেছেন পিতা জয়ন্তমোহন বন্দোপাধ্যায়। ছবিটি প্রযোজনা করেছেন অলিভিয়া রায়। জয়জিৎ জানিয়েছেন, জিকো, অভিজিৎ, অলিভিয়ারা পাশে না থাকলে এই কাজটা সম্ভব হতো না।

জয়জিৎ এই ছবি সম্বন্ধে আমাদের জানান,'মূলত জীবনকে উজ্জীবিত করার ইতিবাচক ভাবনাই তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন এই ছোট ছবির মধ্যমে। ছবিতে কোনও সংলাপ ব্যাবহার করা হয় নি, সেক্ষেত্রে ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকের ভূমিকা এই ছবিটিতে অবশ্যই এক অন্য মাত্রা যোগ করবে'। ছবির গল্প এবং চিত্রনাট্য জয়জিৎ-এর নিজের। ছবিতে সিনেমাটোগ্রাফার হিসেবে কাজ করেছেন অভিজিৎ নন্দী। সম্পাদনা নীলাদ্রি রায়। প্রোডাকশন ডিজাইন করেছেন জিকো অধিকারী।
তিনি বলেন, ‘ এর আগেও পরিচালনার কাজ করেছি, তবে এই প্রথম বাবাকে ডিরেক্ট করছি। বাপ ব্যাটা মিলে একটা মনের মতো কাজ, স্বভাবতই একটা উত্তেজনা তো থাকবেই! আসলে আমি এমন একজন মানুষ খুঁজছিলাম যাঁর বয়স, চেহারা এবং ম্যানারিজম অনেকটা আমার বাবার সঙ্গে মিলে যায়। তাই বাবাকেই প্রথম অ্যাপ্রোচ করি এই চরিত্রটার জন্য। বাবা রাজি হতেই কাজ শুরু করি। বাবা মূলত থিয়াটারের মানুষ। থিয়েটারের কিছু ট্রিটমেন্ট রয়েছে যা বাবার কাছ থেকে খুব সহজেই পেয়েছি। এবং ওটাই ছবির জন্য প্রয়োজন ছিল। এই ছবিটা মূলত ফেস্টিভ্যালের জন্যই তৈরি করা। ছবিটি নির্মান হয়েছে সাদা কালোয়।

'রিষড়ার একটি বাড়িতে ছবির শুটিং হয়। শুটিং চলাকালীন ফ্লোরে আমরা সবাই যথেষ্ট প্রফেশনালিজম রেখেই কাজ করেছি। বাবাকে আমি স্যার বলে সম্বোধন করতাম, আর বাবা আমার সঙ্গে ‘আপনি ’ করে কথা বলত। ফলে মনে হতো কোনও ব্যক্তিগত সম্পকের কারণে নয়, শুধুমাত্র কাজের জন্যই আমরা একত্রিত হয়েছি। এবং প্রত্যেকেই পেশাদার। বাবাকে কিন্তু খুব খাটিয়েছি শুটিংয়ে। মাঝেমধ্যে চিৎকার চেঁচামেচিও করে ফেলেছি। আসলে যতক্ষণ না মনের মতো শট পাচ্ছিলাম ততক্ষণ কাজ করিয়ে গিয়েছি। বাবার এখন ৭২ বছর বয়স। উনিও যথাসাধ্য নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন।
অনেক সময় এমন অনেক ভাবনা মনের মধ্যে ঘুরপাক খায় যা সবসময় ভাষায় প্রকাশ করার প্রয়োজন হয় না, আমাদের প্রতিদিনের যাপনের মধ্যে দিয়েই প্রতিফলিত হয় ভিন্ন ভিন্ন দর্শন। যা রেখে যায় অনেক আলো এবং পজিটিভ কিছু চেতনা, যা আজকের পরিস্থিতিতে খুবই প্রাসঙ্গিক। আমার এই ছবিটিও খানিকটা তেমন। বলা যেতে পারে পুরো ছবিটিই একটি মুভিং কোলাজ। কাজটা ভালো করে শেষ করতে পেরে নিজেরই ভালো লাগছে। পোস্ট প্রোডাকশনের কাজ ইতিমধ্যেই শুরু করে দিয়েছি। কিন্তু যতক্ষণ না পুরো কাজটা শেষ হচ্ছে ততক্ষণ সন্তুষ্ট হতে পারছি না। চেষ্টা করব ফেস্টিভ্যালে পাঠানোর সময় কিছু বিশিষ্ট পরিচালক, সংবাদমাধ্যম এবং সিনেমাপ্রেমী মানুষেরদের আমাদের এই ভালোবাসার ছবিটি দেখানোর।’