খলিস্তানি জঙ্গি হরদীপ সিং নিজ্জরের খুনের অভিযোগে ধৃত চারজন ভারতীয়ের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করল কানাডার সুপ্রিম কোর্ট। বৃহস্পতিবার সেদেশের শীর্ষ আদালতের সংশ্লিষ্ট বিচারপতি এই আবেদন মঞ্জুর করেন। একইসঙ্গে, আদালতের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি।
আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যথাযথ প্রমাণ না থাকাতেই আদালত তাঁদের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেছে। উল্লেখ্য, এর আগে এই নির্দিষ্ট মামলাটির শুনানি নিম্ন আদালতে স্থগিত হয়ে যায়। সেই কারণেই শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হন অভিযুক্তরা।
আদালত সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত চারজনের মধ্যে তিনজনই আদালতে ভার্চুয়াল মাধ্যমের দ্বারা উপস্থিত হন এবং শুনানিতে অংশ নেন। চতুর্থ জনের হয়ে আদালতে সওয়াল করতে উপস্থিত ছিলেন তাঁর আইনজীবী।
এই মামলার শুনানি চলাকালীন ব্রিটিশ কলম্বিয়া আইন বিভাগের এক আধিকারিক আদালতকে জানান, যখন মূল মামলার শুনানি শুরু হবে, সেই সময় তাঁদের পক্ষ থেকে কিছু প্রি-ট্রায়াল মোশন পেশ করা হবে। কিন্তু, সেই প্রি-ট্রায়াল কত দিন ধরে চলবে, সেই বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছুই বলতে পারেননি ওই আধিকারিক।
সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছে, স্থানীয় প্রশাসনের এই মন্তব্য ও অবস্থানের ফলেই অভিযুক্তদের জামিনের পথ প্রশস্থ হয়ে যায়।
উল্লেখ্য, ইদানীংকালে কানাডায় ভারতবিরোধী খলিস্তানি জঙ্গিদের রমরমা বেড়েছে। শুধু তাই নয়, জাস্টিন ট্রুডোর সরকার লাগাতার এই খলিস্তানি সন্ত্রাসবাদীদের সমর্থন করে গিয়েছে। ফলত, ভারতের সঙ্গে কানাডার সম্পর্ক ক্রমেই তলানিতে নেমেছে। তাতেও হুঁশ ফেরেনি ট্রুডো সরকারের।
ভারত বারবার দাবি তুলেছে, যাতে কানাডায় বসবাসকারী ভারতবিরোধী খলিস্তানপন্থীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হয়। কিন্তু, কানাডা সেটা তো করেইনি, উলটে ভারতীয় আধিকারিকদের নানাভাবে বিপাকে ফেলা হয়েছে।
তথ্যাভিজ্ঞ মহলের একাংশের দাবি, আজ যে জাস্টিন ট্রুডোর এমন নাজেহাল দশা হয়েছে, তার একটা বড় কারণ, ভারত সরকারের আবেদন, দাবির তোয়াক্কা না করে একগুঁয়ে আচরণ করে গিয়েছেন তিনি। যা কানাডীয়দের একাংশই ভালোভাবে নেননি।
তারপরও কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো দাবি করেন, তাঁদের দেশে খলিস্তানি জঙ্গি হরদীপ সিং নিজ্জরের খুনের সঙ্গে নাকি ভারতীয় আধিকারিকদের যুক্ত থাকার 'নির্ভরযোগ্য প্রমাণ' পাওয়া গিয়েছে!
প্রথম থেকেই ট্রুডোর এই দাবির বিরোধিতা করেছে নয়া দিল্লি। উলটে ভারত সরকার তার অবস্থান স্পষ্ট করে জানিয়েছে, কানাডার এই ধরনের অভিযোগ আদতে 'হেনস্থামূলক' এবং 'উদ্দেশ্যপ্রণোদিত'।
ভারতের পালটা অভিযোগ, খলিস্তানি জঙ্গিদের প্রতি নরম মনোভাব দেখিয়ে আদতে কানাডার মাটিতে ভারতবিরোধিতাকেই প্রশ্রয় দিচ্ছে ট্রুডো সরকার। তারপরও অবশ্য কানাডা সরকারের তরফে ইতিবাচক তেমন কোনও পদক্ষেপ চোখে পড়েনি।