পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনা প্রশমনে ভারতেরই প্রথম পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। এমনই পরামর্শ দিয়েছেন জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতি।অপারেশন সিঁদুরের পরেই ভারতের সীমান্তে বাড়ছে পাক আগ্রাসন।তার যোগ্য জবাব দিচ্ছে ভারতীয় সেনাবাহিনীও।এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স জানিয়েছিলেন, ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কোনও বিষয় নয়। কিন্তু শনিবার সকালে হতেই ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর এবং পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনিরকে ফোন করে সংঘাত মেটাতে এক প্রকার মধ্যস্থতার প্রস্তাব দেন মার্কিন বিদেশ সচিব মার্কো রুবিও।
আরও পড়ুন-'কিসের জন্য শোক পালন?' পাকিস্তানি সেনাকে প্রশ্ন নিহত সাংবাদিক ড্যানিয়েলের বাবার
আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতা প্রস্তাবের কথা তুলে ধরে এক্স হ্যান্ডেলে মেহবুবা মুফতি বলেন, 'এখন ভারতের মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর এবং প্রমাণ করার সময় যে তার আসল শক্তি রয়েছে শান্তির প্রতি অঙ্গীকারে, পারমাণবিক অস্ত্রের মধ্যে নয়।' তিনি জোর দিয়ে বলেন যে বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক শক্তি হিসেবে, ভারতের আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উপর নির্ভর করা উচিত নয়।পিডিপি প্রধান বলেন, 'যদিও প্রথমে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স বলেছিলেন যে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হস্তক্ষেপ করবে না। এখন পরিস্থিতির উদ্বেগজনক হতেই মার্কিন বিদেশ সচিব মার্কো রুবিও পাকিস্তানি সেনাপ্রধানের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন এবং উত্তেজনা প্রশমনের আহ্বান জানিয়েছেন।'
কিন্তু উপত্যকার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, 'বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক, সর্বাধিক জনবহুল দেশ হিসেবে- অর্থনীতিতে বিশ্বব্যাপী তৃতীয় স্থানে থাকা ভারতকে আন্তর্জাতিক সমর্থনের উপর নির্ভর করা উচিত নয়। পরিবর্তে, ভারতের উচিত উপমহাদেশে নেতৃত্বের ভূমিকা গ্রহণ করা এবং উত্তেজনা প্রশমনের জন্য প্রথম পদক্ষেপ নেওয়া।' এর আগে শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠক করে পিডিপি নেত্রী বলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং পাকিস্তানের নেতাদের অনুরোধ করছি, এই লড়াই বন্ধ করা উচিত। দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী যদি একবার ফোনে কথা বলেন, তা হলে সব সমস্যা মিটে যায়।’
আরও পড়ুন-'কিসের জন্য শোক পালন?' পাকিস্তানি সেনাকে প্রশ্ন নিহত সাংবাদিক ড্যানিয়েলের বাবার
প্রসঙ্গত, অপারেশন সিঁদুরের পর থেকেই সীমান্ত এলাকায় প্রবল গোলাবর্ষণ চালিয়েছে পাক সেনা। টানা তিন রাত পাকিস্তান ভারতের উত্তর ও পশ্চিম সীমান্তে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে চলেছে। ভারতও পাল্টা প্রতিরোধ করেছে। শনিবারও জম্মু ও কাশ্মীরের বিস্তীর্ণ অংশে প্রবল গোলাবর্ষণ করা হয়েছে। যার জেরে কাশ্মীরে সরকারি আধিকারিক-সহ তিন জনের মৃত্যুও হয়েছে। এই আবহে ভারতীয় সেনা সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছে, পশ্চিম সীমান্তে পাকিস্তান সেনা মোতায়েন বৃদ্ধি করছে। সীমান্তের দিকে এগোচ্ছে পাকিস্তানি সেনা। এদিকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, 'পাকিস্তান ২০২৫ সালের ১০ মে জম্মুর বিখ্যাত শম্ভু মন্দির এবং আবাসিক এলাকাগুলিকে লক্ষ্য করে তাদের হামলা অব্যাহত রেখেছে। রাতভর একাধিক সশস্ত্র ড্রোন পাঠানো হয়েছে, যা সাধারণ মানুষ এবং ধর্মীয় স্থানগুলিকে বিপদে ফেলেছে। ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী সতর্ক রয়েছে।'