ঘরে-বাইরে চাপের মুখেই কি শেষমেশ পদক্ষেপ করতে বাধ্য হল মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের পুলিশ প্রশাসন? পড়শি দেশের সংবাদমাধ্যম মারফত সর্বশেষ যে তথ্য জানা যাচ্ছে, সেই অনুসারে - প্রবীণ মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই ভুঁইয়া কানুকে যারা জুতোর মালা পরিয়ে হেনস্থা করেছিল, অবশেষে তাদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হল।
প্রথম আলো-এ প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, এই বিষয়ে ইতিমধ্যেই লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন মুক্তিযোদ্ধা কানু। অবেশেষে, আজ রাতে (২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪) সেই অভিযোগ মামলা হিসাবে নথিভুক্ত করার কথা ঘোষণা করে স্থানীয় চৌদ্দগ্রাম থানার পুলিশ।
এর আগে বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমের তরফেই দাবি করা হয়েছিল, এই ঘটনায় মোট পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে। ধৃতদের মধ্য়ে তিনজনকে অভিযুক্ত এবং বাকি দু'জনকে সাক্ষী বলেও উল্লেখ করা হয়েছিল। পরবর্তীতে তাদের গ্রেফতার করার খবর সামনে আসে।
এরপর জানা যায়, ধৃতদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনের ৫৪ নম্বর ধারা প্রয়োগ করা হয়েছে। মঙ্গলবার ধৃতদের আদালতে পেশ করা হয় এবং তারপর হাজতে পাঠানো হয়। যদিও আদালতে পেশ করার সময় একজনকে অভিযুক্ত এবং দু'জনকে সাক্ষী হিসাবে দেখানো হলেও বাকি দু'জনের ক্ষেত্রে কী অবস্থান নেওয়া হয়েছে, সেটা তখনও পর্যন্ত স্পষ্ট ছিল না।
পুলিশ সূত্রে দাবি করা হয়েছে, এই ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে একসঙ্গে একাধিক অভিযোগ আনা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে - ২৫ লক্ষ টাকা চাঁদার দাবি, জুতোর মালা পরিয়ে পরিয়ে আক্রান্তের অসম্মান এবং মারধর। বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমের দাবি, প্রবীণ মুক্তিযোদ্ধার মানহানি করায় অভিযুক্তদের কাছ থেকে ১০০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করা হয়েছে।
এই প্রেক্ষাপটে বুধবার রাত ৮টা নাগাদ (স্থানীয় সময়) চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক (ওসি) এটিএম আক্তার উজ্জামান জানান, তাঁরা সংশ্লিষ্ট মামলাটি রেকর্ড করেছেন। এবং মোট ১০ জনকে অভিযুক্ত হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
তিনি আরও জানিয়েছেন, পুলিশ যে পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে, তাদের মধ্যে কুলিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা, ৪৩ বছরের ইসমাইল হোসেন মজুমদারকে এই মামলার আসামি করা হয়েছে। এবং আরও দু'জনকে সাক্ষী হিসাবে পেশ করা হয়েছে।
এই প্রেক্ষিতে বাকি দুই ধৃতের অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে পুলিশের ওই আধিকারিক বলেন, এই বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করার পরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, এর আগে বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমের তরফেই জানা গিয়েছিল, মুক্তিযোদ্ধাকে হেনস্থার ঘটনায় পালটা তাঁকেই কার্যত কাঠগড়ায় তুলেছে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন। তাদের দাবি ছিল, ২০০৮ সালের একটি ঘটনার প্রেক্ষিতেই ওই প্রবীণকে হেনস্থার শিকার হতে হয়েছিল। এমনকী, স্থানীয় বাসিন্দারাও পুলিশের দাবি সঠিক বলে জানিয়েছিলেন। বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমে অন্তত এমনটাই দাবি করা হয়েছিল।