কোচবিহারের ঐতিহ্যবাহী রাসমেলার বিখ্যাত রাসচক্র তৈরি করতেন। প্রয়াত হলেন সেই আলতাফ মিঁয়া। তাঁর প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘কোচবিহারের বিখ্যাত রাসমেলার রাসচক্রের প্রস্তুতকারক আলতাফ হোসেনের প্রয়াণে আমি মর্মাহত। আমি তাঁর বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করি। বাংলার 🦩যে ধর্মনিরপেক্ষ ঐতিহ্য, তার অন্যতম ধারক-বাহক ছিলেন তিনি। তাঁর শোকতপ্ত পরিবারকে আমার আন্তরিক সমবেদনা জানাই। আমি জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছি যে শেষকৃত্যে পরিবারকে সবধরনের সাহায্য করার জন্য।’
পারিবারিক ঐতিহ্য বহন করতেন আলতাফ
আর আলতাফ যে রাসচক্র ত🐻ৈরি করতেন, সেই ঐতিহ্যটা পারিবারিক উত্তরাধিকার সূত্র পেয়েছিলেন। কয়েক পুরুষ ধরে আলতাফের পরিবার কোচবিহারের রাস উৎসবের সেই বিখ্যাত রাসচক্র তৈরি করে আসছে। বাবা আজিসের হাত থেকে যে ব্যাটন পেয়েছিলেন, সেটা ধরে রেখে ৪০ বছর ধরে সেই ঐতিহ্য বহন করে এসেছিলেন আলতাফ। তবে বার্ধক্যজনিত কারণে বছরদুয়েক আগে থেকেই আর রাসচক্র বানাতে পারতেন না। সেই কাজ করছেন ছেলে।
রবিবার শিল্পীর দেহ কবর দেওয়া হবে
তারইমধ্যে কয়েকꦗদিন আগে আলতাফকে কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালে ভরতি করানো হয়েছিল। শনিবার রাতেই শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মহকুমা শাসক কুণাল বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, অনেক দিন ধরেই বার্ধক্যজনিত কারণে অসুস্থ ছিলেন শিল্পী। সম্প্রতি তাঁকে হাসপাতালে ভরতি করꦇানো হয়েছিল। তবে চিকিৎসায় তেমন সাড়া মিলছিল না। শনিবার রাতে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। রবিবার শিল্পীর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে। দেহ কবর দেওয়া হবে বলে বলে জানিয়েছেন মহকুমা শাসক।
আরও পড়ুন: Kolkata Heritage Cab: ন💞তুন সাজে ফিরছে হলুদ ট্যাক্সি, কলকাতায় হেরিটেজ🐲 ক্যাব, বুক করবেন কীভাবে?
শিল্পীর প্রয়াণে শোকের ছায়া নেমে এসেছে কোচবিহার-সহ🍬𒀰 রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে। যিনি সাধারণত লক্ষ্মীপুজোর দিন উপোস করে রাসচক্র তৈরির কাজ শুরু করতেন। যখন রাসচক্র তৈরি করবেন, সেই সময় নিরামিষ খাবার খেতেন। নিজের হাতে যে রাসচক্রকে ‘প্রাণ’ দিতেন, তা বসানো হত কোচবিহারের মদনমোহন মন্দির প্রাঙ্গণে।
আরও পড়ুন: ‘চা–বাগান নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছ﷽ে কিছু ভূতুড়ে দল’, নবান্ন থেকে তোপ মমতার
শিল্পীকে কুর্নিশ সকলের
আর সেই শিল্পীর সেই অবিস্মরণীয় সৃষ্টি꧋ নিয়ে বছরপাঁচেক আগে কোচবিহারের পুলিশের তরফেღ বলা হয়েছিল, তোর্সা নদীর তীরে উত্তরবঙ্গের অন্যতম প্রধান শহর ঐতিহ্যবাহী কোচবিহার। তার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত মদনমোহন ঠাকুরবাড়ি। এই মদনমোহন ঠাকুরবাড়ি কেন্দ্র করে অনুষ্ঠিত হয় উত্তর-পূর্ব ভারতের অন্যতম প্রধান রাস উৎসব। মদনমোহন ঠাকুরবাড়িতে রাসচক্র ঘুরিয়ে এই অনুষ্ঠানের সূচনা করা হয়। এক মাস ধরে আলতাফ মিঁয়া নিষ্ঠাভরে তোর্সা নদীর চরে বসে আপন মনে বানিয়ে যান দেবতার রাস চক্র।'
ওই পোস্টে বলা হয়েছিল যে এই রাসচক্রের মধ্যে যেমন ধর্মের বৈশিষ্ট্য পাওয়া যাবে, তেমনই ৩২টি দেবদেবীর চিত্র দিয়ে ফুটে হয়ে উঠবে প্রাণের ঠাকুর মদনমোহনের রাসচক্র। কোচবিহ🍎ারের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য নজির। প্রাণের ঠাকুর মদনমোহনের পাদপদ্মে কোচবিহারের এই চিরকালীন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এবং সমস্ত কোচবিহারবাসীর সুমঙ্গল প্রার্থনা করা হচ্ছে।