পূর্ব মেদিনীপুরে এক পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উঠল। অভিযোগ উঠেছে, শিক্ষকের স্ত্রীর আপত্তিকর ছবি ও ভিডিয়ো তুলে তাঁকে ব্ল্যাকমেল এবং ঘনিষ্ঠ হওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন তিমি। আর তাতে রাজি না হওয়ায় পরিবারের সদস্যদের প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনায় কাঠগড়ায় এএসআই শেখর নস্কর। ইতিমধ্যেই তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছেন শিক্ষকের স্ত্রী। তার ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। ঘটনাকে ঘিরে জেলা পুলিশ মহলে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
আরও পড়ুন: FB-তে বন্ধুত্ব, টাকা চেয়ে ছবি ফাঁসের হুমকি যুবকের, উদ্ধার শিক্ষিকার ঝুলন্ত দেহ
অভিযোগকারিণী মহিলা এক শিক্ষকের স্ত্রী। সম্প্রতি জেলার পুলিশ সুপারের দফতরের পাবলিক গ্রিভান্স সেলে লিখিত অভিযোগ জানান। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। তারপরেই গত ৩০ মে অভিযুক্ত এএসআইকে পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয়। একইদিনে সুতাহাটা থানায় তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআরও দায়ের হয়।
দাবি করা হয়েছে, অভিযুক্ত শেখর নস্কর আগে সুতাহাটা থানায় কর্মরত ছিলেন। তখনই স্থানীয় ওই শিক্ষকের পরিবারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে তাঁর। নিয়মিত যাতায়াত ও পারিবারিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে একপ্রকার আত্মীয়তার সম্পর্ক তৈরি হয়। অভিযোগ, সেই ঘনিষ্ঠতার সুযোগ নিয়ে ওই পুলিশ অফিসার বাড়ি নির্মাণ ও মেয়ের বিয়ের খরচ বাবদ ওই পরিবারের কাছ থেকে প্রায় ১০ লক্ষ টাকা ধার নেন। এমনকী তাঁর ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠানও ওই শিক্ষকের বাড়িতে আয়োজিত হয়।
দাবি করা হয়েছে, পরবর্তীতে পাঁশকুড়ায় বদলি হওয়ার পর সম্পর্কের অবনতি ঘটে। তখন টাকা ফেরত দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে বিরোধ শুরু হয়। অভিযোগকারিণীর দাবি, শেখর নস্কর গোপনে তাঁর কিছু আপত্তিকর ছবি ও ভিডিয়ো নিজের ফোনে তুলেছিলেন এবং সেগুলি দেখিয়ে তাঁর ওপর মানসিক চাপ তৈরি করতে থাকেন। অভিযোগ অনুযায়ী, এইসব দেখিয়ে তাঁকে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চাপ দেন এএসআই। মহিলা রাজি না হওয়ায় তাঁর স্বামী, পুত্র ও কন্যাকে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয়।
এই অভিযোগের তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় সুতাহাটা থানার এসআই গৌরব মিত্রকে। তদন্তকারী অফিসার প্রাথমিকভাবে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার পর পুলিশ সুপার সৌম্যদীপ ভট্টাচার্যের নির্দেশে শেখর নস্করের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয় এবং তাঁকে ক্লোজ করা হয়।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত এএসআই শেখর নস্কর জানান, ওই পরিবারের সঙ্গে তাঁর দীর্ঘদিনের সম্পর্ক ছিল। ভুল বোঝাবুঝির জেরে এমন ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগকারিণী নিজেই পরে অভিযোগ তুলে নিতে চেয়েছেন। তবে মহিলা জানান, তিনি লিখিতভাবে অভিযোগ জানিয়েছেন। ঘটনা নিয়ে পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, তদন্ত প্রক্রিয়া চলছে। অভিযোগের প্রমাণ মিললে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।