মোটা টাকার প্রয়োজন ছিল। কিন্তু, নিজের কাছে সেই টাকা ছিল না। তাই বন্ধুদের বুদ্ধিতে নিজেই নিজের ভুয়ো অপহরণের গল্প ফেঁদে শ্রীঘরে যেতে হল ২৬ বছরের এক যুবককে! উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগর থানা এলাকার বাসিন্দা ওই যুবককে তাঁর 'অপহৃত' হওয়ার দিন দুই পর শিয়ালদা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ছেলের কীর্তি নিয়ে কিছু বলতে না চাইলেও গোটা ঘটনায় পুলিশের ভূমিকায় খুশি ওই যুবকের বৃদ্ধ বাবা।
ঘটনা প্রসঙ্গে জানা গিয়েছে, গত শনিবার (২৪ মে, ২০২৫) অন্য়ান্য় দিনের মতোই কাজে গিয়েছিলেন ফিরোজ মণ্ডল। কিন্তু, নির্দিষ্ট সময় কাজ থেকে বাড়ি ফেরেননি তিনি। তাতে পরিবারের লোকজন খুব স্বাভাবিকভাবেই দুশ্চিন্তা করতে শুরু করে দেন। এমন সময়ে শনিবার রাতেই ফিরোজের বাবার মোবাইলে একটি অচেনা নম্বর থেকে ফোন আসে।
ফোন তুলে 'হ্যালো' বলতেই ফিরোজের কণ্ঠস্বর শুনতে পান তাঁর বাবা। কিন্তু, তিনি কিছু বলার আগেই ফিরোজ তাঁর বাবাকে বলেন, তাঁকে অপহরণ করা হয়েছে। অপহরণকারীরা বলছে, ৫ লক্ষ টাকা দিলেই তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হবে।
এই ঘটনায় মারাত্মক ভয় পেয়ে গেলেও পুলিশের দ্বারস্থ হওয়াই শ্রেয় বলে মনে করেন ফিরোজের বাবা। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নামে পুলিশ। প্রথমেই যে অচেনা নম্বর থেকে ফোন এসেছিল, সেটি সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। পরবর্তীতে টোপ দেওয়া হয়, ৫ লক্ষ টাকা নিতে হলে শিয়ালদায় আসতে হবে। সোমবার রাতে ফিরোজ নিজেই নিজের 'মুক্তিপণের টাকা' নিতে আসেন। এবং পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যান। পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। গোটা ঘটনায় হতবাক হয়ে গিয়েছেন ফিরোজের বাবা।
জেরায় ফিরোজ পুলিশকে জানান, বন্ধুদের 'পরামর্শেই' তিনি এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন। কারণ, তাঁর টাকার দরকার ছিল। অপহরণের গল্প ফাঁদার পর বাড়ি থেকে দূরে থাকতে এখানে ওখানে ঘুরে বেড়িয়েছেন তিনি। নিজের ফোনটি রেখেছিল 'এরোপ্লেন মোড'-এ। অন্য একটি ফোনে অন্য সিম ঢুকিয়ে ওয়াইফাই-এর সাহায্যে বাড়িতে কল করতেন তিনি। তবে, এত কিছু করেও শেষ রক্ষা হল না। লোভের ফাঁদে পড়ে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে গেলেন ওই যুবক।