কদিন আগে দিদি নম্বর ১-এর এক প্রতিযোগীকে দেখা গিয়েছিল শ্রীরামপুরের বিখ্যাত মাহেশের রথ নিয়ে কথা বলেছিলেন। তিনি ছিলেন এক সেবায়েতের কন্যা, নাম স্তুতি অধিকারী। আর সেখানেই পুরীর রথযাত্রার সঙ্গে মাহেশের তুলনা টানতে দেখা যায় ওই মহিলাকে। শুধু তাই নয়, তিনি দাবি করেন মাহেশের রথ বিশ্বের সব থেকে উঁচু, সব থেকে বড়। আর এই তুলনা টানার সময়, তিনি টেনেছিলেন পুরীর প্রসঙ্গ। যা প্রভু জগন্নাথের অনেক ভক্তের মনেই আঘাত দেয়।
ইতিমধ্যেই পদ্মাবতী মণ্ডল নামে এক সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার এই নিয়ে একটি ভিডিয়ো বানিয়ে ফেলেছেন। তিনি জানান, মাহেশের রথ মোটেও সবচেয়ে উঁচু রথ নয়।
আরও পড়ুন: শুনশান অন্ধকার দার্জিলিংয়ের ম্যালে ঘুরছেন সৌমিতৃষা, নতুন কোনও প্রোজেক্টের শ্যুট?
কী বলেছিলেন স্তুতি অধিকারি?
নিজেদের রথযাত্রার প্রশংসা করার সময় তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘পুরীর থেকেও বড় আমাদের রথ। মাহেশের রথ ৫০ ফুট লম্বা। যা পুরীর রথও নয়।’ সেই ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় আসতেই, অনেকে প্রতিবাদ করেছিলেন। পুরীধামের ঐতিহ্যশালী ‘রথযাত্রা’কে খাটো করার অভিযোগও উঠেছিল। এবার খানিকটা সেই সুর শোনা গেল পদ্মাবতী মণ্ডলের কথাতেও।
আরও পড়ুন: মুসলিম ছেলে বিয়ে করেও, ভোলেননি নিজের ধর্ম! বাড়িতে সত্যনারায়ণ পুজো করলেন ‘গোপি বহু’ দেবলীনা
পদ্মাবতীর প্রতিবাদ:
ফেসবুকে শেয়ার করা ভিডিয়োতে পদ্মাবতীকে বলতে শোনা যায়, ‘তুমি মাহেশের রথের একজন সেবায়েতের মেয়ে। তুমি নিজেদের রথযাত্রার প্রশংসা তো করবেই। কিন্তু সেটা করতে গিয়ে তুমি অনেককে মনে কষ্ট দিয়ে ফেলেছ। তোমাদের রথের বয়স ১৩৯ বছর। আর পুরীর রথ সৃষ্টি ১৫৭৫ খ্রীষ্টাব্দ। আর এটা থেকেঅ স্পষ্ট পুরীর রথ আদি। তার থেকেই সব জায়গায় রথযাত্রার সৃষ্টি হয়েছে। পুরীর জন্নাথ দেবকে কেন্দ্র করেই তো সবটা সৃষ্টি হচ্ছে।’
আরও পড়ুন: ভক্তদের দিকে উপহার ছুঁড়লেন অমিতাভ, জলসার বাইরে রবিবার কী উপহার দিলেন বিগ বি
‘তুমি ঠিকই বলেছ, মাহেশের রথের উচ্চতা হচ্ছে ৫০ ফুট। আর পুরীর নন্দিঘোষ (জগন্নাথের রথের নাম), তালধ্বজ (বলভদ্রের রথের নাম), দর্পদলন (সুভদ্রার রথের নাম) রথের উচ্চতা ৪৫ ফুট। ৫ ফুটে তোমাদের রথ এগিয়ে। কিন্তু তোমাদের মাহেশের রথ বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু রথ নয়। উড়িষ্যার কেওনঝড়ের বালদেবজিওর রথ হচ্ছে ৭২ ফুট উচ্চতার অধিকারী। এই রথের নাম ব্রহ্মাতালধ্বজ। যে রথ সৃষ্টি হয়েছিল ১৬৭১ খ্রিষ্টাব্দে। স্তুতি অধিকারী বোন এটা জানতেনই না। তাই তাঁর কথার মধ্যে অহংকার ফুটে উঠেছে। আমি বিশ্বাস করি ভগবানের থাকার জন্য ৫০ ফুট-৪৫ ফুট-৭২ ফুট উচ্চতার প্রয়োজন পড়ে না। ভক্তের হৃদয়ের মধ্যেই অবস্থান করে। এটা মানতে পারলেই, অমুকের রথ বড়, এসব করার দরকার পড়বে না।’
‘হয়তো তুমি করতে চাওনি। কিন্তু পুরীর জগন্নাথ দেবের মন্দিরের রথকে ছোট করে ফেলেছ। তোমার সেই ভিডিয়োর ভিউজ হয়েছে ১.৭ মিলিয়ন। তুমি ১৭ লাখ মানুষকে ভুল তথ্য দিয়েছ। তাঁরা জেনেছে মাহেশের রথই সবচেয়ে উঁচু। আমি চাই না আমাদের সনাতন ধর্ম নিয়ে কোনও ভুল তথ্য মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে যাক।’
সমর্থন নেটিজেনদের:
এই ভিডিয়োর সমর্থনে গলা চড়িয়েছেন নেট-নাগরিকরা। একজন লেখেন, ‘ধন্যবাদ দিদি আপনাকে। সঠিক তথ্যটি যেন সম্মুখে উত্থান করার জন্য। জয় জগন্নাথ, জয় উড়িষ্যা, জয়পুরী ধাম’