জম্মু-কাশ্মীরে সফরে যাওয়ার পথে কার্যত মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এলেন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিনিধিদলের পাঁচ সদস্য-সহ সংশ্লিষ্ট বিমানে সওয়ার প্রায় ২০০ জন যাত্রী এবং বিমানকর্মীরা। কেবলমাত্র পাইলটের দক্ষতায় প্রাণ বাঁচল সকলের!
পহেলগাঁও হামলার পর পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়াতে বাধ্য হয় ভারত। পরবর্তীতে অপারেশন সিঁদুরের সাফল্যের জেরে ভারতের সঙ্গে সংঘর্ষবিরতি ও সন্ধি করতে বাধ্য পাকিস্তানও। কিন্তু, তার মধ্যেই অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পাক সেনার কাপুরুষোচিত হামলার শিকার হতে হয়েছে জম্মু-কাশ্মীরের সাধারণ মানুষকে।
সংঘর্ষবিরতির পর কেমন আছেন আমাদের সেই সহনাগরিকরা? সেই বিষয়ে খোঁজখবর নিতেই উপত্যকায় পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। সেই দলে রয়েছেন সাগরিকা ঘোষ, মমতাবালা ঠাকুর, ডেরেক ও'ব্রায়েন, মানস ভুঁইয়া এবং নাদিমুল হক।
বুধবার (২১ মে, ২০২৫) এই প্রতিনিধিদলটি দিল্লি থেকে বিমানে শ্রীনগর রওনা দেয়। কিন্তু, মাঝ-আকাশেই প্রকৃতির রুদ্র রূপের সাক্ষী হতে হয় বিমানে সওয়ার প্রত্যেককে। আবহাওয়া প্রতিকূল হওয়ায় থরথর করে কাঁপতে শুরু করে ইন্ডিগোর ৬ই২১৪২ উড়ানটি। সঙ্গে সঙ্গে আপৎকালীন পরিস্থিতি ঘোষণা করেন পাইলট। ওই বিমানে প্রায় ২০০ যাত্রী সওয়ার ছিলেন। সঙ্গে ছিলেন বিমানকর্মীরা। তাঁদের সকলের সুরক্ষার স্বার্থে প্রবল প্রাকৃতিক বাধার মুখেও বিমান শ্রীনগরে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন পাইলট।
কিন্তু, শ্রীনগরের আকাশে প্রবেশ করতেই শুরু হয় তীব্র শিলাবৃষ্টি! প্রবল ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে বিমানের ভিতর যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। সোশাল মিডিয়ায় সেই সময়কার যে ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে, তা দেখা গিয়েছে, সকলেই উদ্বিগ্ন হয়ে বসে রয়েছেন। অনেক যাত্রী আতঙ্কে চিৎকার করছেন। অনেকেই উচ্চস্বরে ঈশ্বরের কৃপা প্রার্থনা করছেন!
শেষমেশ অবশ্য শ্রীনগরের মাটি ছোঁয় বিমানটি। যাত্রী এবং বিমানকর্মী - সকলকে অক্ষত অবস্থায় সঙ্গে নিয়েই অবতরণ করতে সক্ষম হন পাইলট। বিমান থেকে নামতে যাত্রীরা দেখতে পান, তার একেবারে সামনের অংশ - যেটিকে বিমানের 'নোজ' বলা হয়, সেটি ভেঙে উড়ে গিয়েছে!
এভাবে তাঁদের জীবন বাঁচানোর জন্য সকলেই পাইলটকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান। ব্যতিক্রম নন তৃণমূল সাংসদ সাগরিকা ঘোষও। তিনি বলেন, ‘প্রায় মৃত্যুর অভিজ্ঞতা হল। আমি তো ভেবেছিলাম জীবন শেষ হয়ে গেল। আশেপাশে সবাই চিৎকার করছিল, প্রার্থনা করছিল, আতঙ্কে ছিল।... পাইলটকে হ্যাট্স অফ যে ওই আবহাওয়ার মধ্যে দিয়ে নিয়ে এসেছেন। আমরা ল্যান্ড করার পর দেখি যে বিমানের সামনের অংশ ভেঙে গিয়েছে।’
শিবসেনা (ইউবিটি) সাংসদ প্রিয়ঙ্কা চতুর্বেদীও এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তৃণমূল সাংসদরা ঠিক রয়েছেন, একথা তিনি এক্স হ্যান্ডেলে লিখে সকলকে জানান।