খোদ রাজ্যের মুখ্য়মন্ত্রীর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সেই মামলাকে ঘিরে রাজনৈতিক মহলেও শোরগোল পড়ে গিয়েছিল। তবে সেই মামলা দায়েরের ক্ষেত্রে পদ্ধতিগত ত্রুটি রয়েছে বলে জানিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। সেই কারণে সেই মামলার শুনানি বুধবার পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানি হবে। সেকারণে ফের মামলা করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি কৃষ্ণা রাও।
রাজ্যপালের তরফে যিনি আইনজীবী ছিলেন সেই আইনজীবী ধীরজ ত্রিবেদী আদালতে জানান, তৃণমূল বিধায়ক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্য়ায় রাজভবনে গিয়ে শপথ নেবেন না বলে জানিয়েছিলেন। রাজভবনে না যাওয়ার কারণ নিয়েও রাজ্য়ের মুখ্য়মন্ত্রী তির্যত মন্তব্য করেছিলেন। তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষও রাজ্যপাল সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্য করেছিলেন বলে দাবি করেন রাজ্যপালের আইনজীবী।
এরপর বিচারপতি প্রশ্ন করেন, রাজ্যপালের মানহানি করা হয়েছে সেটা আপনি শুধুমাত্র কিছু সংবাদমাধ্য়মের খবরের ভিত্তিতে প্রমাণ করবেন কীভাবে? তারা কি এই মামলায় পার্টি?
এরপর রাজ্যপালের আইনজীবী জানিয়ে দেন, রাজ্যপালের বিরুদ্ধে যা বলা হয়েছে তা ইউটিউবে আছে। যে কেউ সেটা দেখে নিতে পারে। শুনতে পারে। আর রাজ্যপালের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে তার পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যপালের ওএসডি সহ তিনজনকে ১৬০ ধারায় নোটিশ দিয়ে জেরা করার জন্য ডাকা হয়েছিল। তবে বিচারপতি জানিয়েছেন, আপনি মামলা তুলে নিয়ে ফের নথিভুক্ত করুন। না হলে পদ্ধতিগত ত্রুটি থেকে যাচ্ছে। আগামীকাল ফের মামলা শোনা হবে। জানিয়েছেন বিচারপতি।
সেক্ষেত্রে নতুন করে মামলা দায়ের করতে হবে। তারপরই সেই মামলার শুনানি।
রাজ্যপাল মঙ্গলবার শিলিগুড়িতেই বলেছিলেন মামলাটি দায়ের হয়ে গিয়েছে। রাজ্যপাল বলেছিলেন, কেউ যদি আমার সম্মান নষ্ট করার চেষ্টা করেন তবে তিনি যেই হোন তাকে ভুগতেই হবে। তিনি বলেন, মুখ্য়মন্ত্রী আমার সাংবিধানিক কলিগ। আমি সেই হিসাবেই তাঁকে মর্যাদা দিয়েছি। কিন্তু আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তোলা হয়েছে তা নিয়ে মানহানির মামলা দায়ের করা হয়েছে। বাকিটা আদালত বিচার করবে।
কেন এই মানহানির মামলা?
তবে সামগ্রিক পরিস্থিতিতে রাজভবন আর রাজ্যের মধ্যে সংঘাতে এবার বড় মোড় আসতে চলেছে বলে খবর। এবার একেবারে আইনি পথে গেলেন রাজ্যপাল। সূত্রের খবর, তৃণমূলের দুই জয়ী প্র্রার্থীর শপথকে কেন্দ্র করে জটিলতা তৈরি হয়েছিল। রাষ্ট্রপতিকে হস্তক্ষেপের আবেদন জানিয়েছিলেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্য়ায়। সেই পরিস্থিতিতে মুখ খুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। আর তাতেই অপমানিত হয়েছিলেন রাজ্যপাল। এমনটাই বলা হয়েছিল তারপরেই এবার একেবারে মমতার বিরুদ্ধে মামলা করলেন রাজ্যপাল।