পহেলগাঁও হামলার পরবর্তী সময়ে তাঁর নানা আচরণ নিয়ে এবার সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিশানা করল তৃণমূল কংগ্রেস। বাংলার শাসকদলের ভার্চুয়াল দেওয়াল থেকে আক্রমণ শানানো হল সোজাসুজি দেশের প্রশাসনিক প্রধানকে লক্ষ্য করে। আর, সেটা করা হল দেশের নানা প্রান্তে হতে চলা 'মক ড্রিল'-এর ঠিক আগের রাতে!আজ (মঙ্গলবার - ৬ মে, ২০২৫) সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের ভেরিফায়েড সোশাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট থেকে বাংলায় একটি পোস্ট করা হয়েছে। তাতে লেখা হয়েছে - ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এখনও কাশ্মীরে যাননি বা কোনো নিহত পরিবারের সঙ্গে দেখা করেননি। এমনকি পহেলগাঁও হামলা নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠকে উপস্থিত থাকাও প্রয়োজন মনে করেননি।... তাহলে তিনি তাঁর বিদেশ সফর থেকে এত তাড়াতাড়ি ফিরলেন কেন?... বিহারে নির্বাচনী সভা করার জন্য?... নাকি ABP-এর India@2047 সম্মেলনে ক্যামেরার সামনে পোজ দেওয়ার জন্য?... আর কত মানুষকে বোকা বানাবেন?’ প্রসঙ্গত, মোদীর দিকে আজ যেসমস্ত প্রশ্নবাণ তৃণমূল কংগ্রেসের সোশাল মিডিয়া পেজ থেকে ছুড়ে দেওয়া হয়েছে, এই প্রশ্নগুলি নতুন কিছু নয়। গত কয়েক দিন ধরে শুধুমাত্র তৃণমূল কংগ্রেস নয়, অন্যান্য অবিজেপি এবং বিজেপিবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিও একই প্রশ্ন বারবার তুলেছে।গত ২২ এপ্রিল (২০২৫) কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে কাপুরুষোচিত, পৈশাচিক হামলা চালায় জঙ্গিরা। প্রাণ যায় ২৬ জনের। প্রধানমন্ত্রী সেই সময় বিদেশ সফরে ছিলেন। তড়িঘড়ি সেই সফরে ছেঁটে দেশে ফেরেন তিনি।এরপর জঙ্গি হামলা পরবর্তী পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে সর্বদলীয় বৈঠকের ডাক দেওয়া হয়। সেই বৈঠকে সমস্ত রাজনৈতিক দল স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, সন্ত্রাস মোকাবিলায় সরকার যা যা পদক্ষেপ করবে, সমস্ত রাজনৈতিক দল তাকে সমর্থন করবে।কিন্তু, সেই সর্বদলীয় বৈঠকে মোদীর অনুপস্থিতি নিয়ে নানা মহল প্রশ্ন তোলে। সেই সমস্ত প্রশ্নবাণ আরও তীক্ষ্ণ হয়, যখন দেখা যায়, মোদী বিহারে ভোটের প্রচারে জনসভা করছেন! এমনকী সেই সভার মঞ্চে ভোটমুখী বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার ও প্রধানমন্ত্রীকে নরেন্দ্র মোদীকে পাশাপাশি বসে হাসিমুখে কথা বলতেও দেখা যায়। যদিও সেই একই মঞ্চ থেকে সন্ত্রাস মোকাবিলায় কড়া পদক্ষেপের হুঁশিয়ারিও দেন মোদী। এবং সেই বার্তা তিনি দেন ইংরেজি ভাষায়!মোদীর এই আচরণে ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের ব্যাখ্য়া, ভারত যে সন্ত্রাস মোকাবিলায় হাত গুটিয়ে বসে নেই, বিশ্বকে সেই বার্তা দিতেই ইংরেজিতে ওই হুঁশিয়ারি দেন মোদী।এদিকে, পহেলগাঁও হামলার পর মোদী কাশ্মীরে না গেলেও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সেখানে যান। অন্যদিকে, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংও জানান, এই ন্যক্কারজনক হামলার কড়া জবাব দেওয়া হবে। আর, এবার তো রাত পোহালেই দেশের নানা প্রান্তে মক ড্রিল করা হবে। যা দেশবাসীর কাছে অত্যন্ত ব্যতিক্রমী একটি বিষয়।এমন একটি প্রেক্ষাপটে তৃণমূল কংগ্রেস সরাসরি প্রধানমন্ত্রীকে নিশানা করে সমাজমাধ্যমে কড়া বার্তা দিল! যা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।