ভারতীয় ক্রিকেটমহল শেষ ১ মাস ধরে অবসরের ধাক্কায় বেসামাল। রোহিত শর্মা, হঠাৎ করেই ৭ মে, টেস্ট থেকে অবসর ঘোষণা করেছিলেন। বিরাট কোহলিও হঠাৎ করেই টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর ঘোষণা করে দিলেন রোহিতের পর। তাঁদের অবসর নেওয়ায় মন খারাপ শুরু হয়ে যায় টিম ইন্ডিয়ার সদস্যদেরও। এরপর ভারতীয় দল ঘোষণা করা হয় আসন্ন ইংল্যান্ড সফরের জন্য। এই সফরের জন্য ভারতের অধিনায়কের পদে বুমরাহ এগিয়ে থাকলেও, চোটের জন্য তাঁকে অধিনায়ক বাছা হয়নি। কারণ ওয়ার্কলোড বেশি পড়লেই বুমরাহর চোট পাওয়ার প্রবণতা রয়েছে, তাই তাঁর পরিবর্তে গিলকেই প্রাধান্য দেওয়া হয় ভারতের অধিনায়ক হিসেবে।
মাত্র ৩১ বছর বয়সেই একাধিকবার জসপ্রীত বুমরাহ চোটের কবলে পড়েছেন। বিশেষ করে পিঠের চোট তাঁকে দীর্ঘদিন ধরেই ভোগাচ্ছে। তবে মাত্র ৪৫টি টেস্ট খেলেই বুমরাহ জায়গা করে নিয়েছেন জাহির খান, কপিল দেবদের আসনে। কারণ তাঁর বোলিং দক্ষতা, ইয়র্কার, ভ্যারিয়েশন দেখে মুগ্ধ ক্রিকেট বিশ্ব। যদিও বুমরাহ মেনে নিচ্ছেন, একদিন থামতেই হবে। মাইকেল ক্লার্কের এক পডকাস্টে তিনি বলছেন, ‘আমি এই খেলাটা ভালোবাসি। আমি যখন অস্ট্রেলিয়ায় গেলাম এবারে, দেখছিলাম অনেক যুব ক্রিকেটাররা আমার বোলিং অ্যাকশন কপি করতে চাইছে। যেটা আমার কাছে অত্যন্ত আনন্দের, কারণ আমিও একদিন সেটা করতাম। তবে এই যাত্রা তো সারাজীবন থাকবে না, তবে যখনই শেষ হোক না কেন আমি আবার এই খেলাকেই কিছু ফিরিয়ে দিতে চাইব। কারণ আমার আজ যা আছে, আমি আজ যা শিখেছি, সবই এই খেলার জন্য। ’।
বুমরাহ জানেন, এত বেশি খেলা চলে এসেছে এখন তিন ফরম্যাট মিলিয়ে, যে তাঁর মন চাইলেও শরীর চাইবে না। এখনও পর্যন্ত তাঁর ঝুলিতে আইসিসি ট্রফি বলতে একমাত্র টি২০ বিশ্বকাপ। অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে কিছুদিন আগে টেস্টে দুর্ধর্ষ বোলিং করেছেন, কিন্তু পাঁচ দিনের টেস্ট পরপর খেলা তার পক্ষেও একটা সময় কঠিন হয়ে দাঁড়াবে, সেটা জানেন তিনি। তাই বুমরাহ বলছেন, ‘যে কোনও ক্রিকেটারের কাছেই সব ফরম্যাট দীর্ঘদিন খেলাটা কঠিন। আমি অনেকদিন ধরেই সেটা করছি, তবে একটা সময় বুঝতে হবে শরীর কি চাইছে, আর কোন প্রতিযোগিতাগুলো বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাই সেটা বাছাইয়ের ক্ষেত্রে একটু বুদ্ধিমত্তা কাজে লাগাতে হবে। ক্রিকেটার হিসেবে অবশ্যই আমি সবই খেলতে চাইব, কিন্তু সেটা একটা সময়ের পর সম্ভব নয়। আমার এমন কোনও টার্গেট নেই যে এই সংখ্যাটা আমায় পেতে হবে। এখনও পর্যন্ত সব ঠিকঠাকই যাচ্ছে, কিন্তু যেদিন বুঝব সেই ছন্দ পাচ্ছি না, চেষ্টা করেও ফল পাচ্ছি না, শরীরও সায় দিচ্ছেন, সেটাই হল সময় যখন অবসর নিয়ে ভাবতে হবে ’