বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ-র শাসনে কি দেশজুড়েই পঠনপাঠনের হার কমছে? দেশের সর্বত্রই বাড়ছে স্কুলছুট হওয়া ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা? এই অনিবার্য প্রশ্ন তুলে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারেরই প্রকাশ করা একটি রিপোর্ট।
কেন্দ্রীয় সরকারের শিক্ষা মন্ত্রকের অধীনস্ত 'ইউনিফায়েড ডিস্ট্রিক্ট ইনফরমেশন সিস্টেম ফর এডুকেশন' (ইউডিআইএসই)-এর পক্ষ থেকে প্রকাশ করা এই রিপোর্ট অনুসারে, ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে সারাদেশের স্কুলগুলিতে পড়ুয়া ভর্তির সংখ্যা কমেছে হু হু করে! সংখ্য়াটা আগের শিক্ষাবর্ষের তুলনায় প্রায় ৩৭ লক্ষ কম!
প্রসঙ্গত, ইউডিআইএসই-এর মাধ্যমে সারা দেশের স্কুল সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করে কেন্দ্রীয় সরকার। আর, তাদের রিপোর্টেই ধরা পড়ল এই চাঞ্চল্যকর তথ্য!
যেখানে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে সারা দেশে নথিভুক্ত পড়ুয়ার সংখ্যা ছিল ২৫.১৭ কোটি, সেখানে তার পরের বছরই - অর্থাৎ - ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে সংখ্যাটা কমে হয় ২৪.৮০ কোটি! এই সময়ের মধ্যে ছাত্রীদের সংখ্যা প্রায় ১৬ লক্ষ কমে গিয়েছে! আর ছাত্রদের সংখ্যা প্রায় ২১ লক্ষ কমেছে!
সংশ্লিষ্ট সময়কালে ভারতের স্কুলগুলিতে মোট নথিভুক্ত পড়ুয়াদের মধ্যে সংখ্যালঘু ছাত্রছাত্রীদের প্রতিনিধিত্ব ছিল প্রায় ২০ শতাংশ। এই ২০ শতাংশ সামগ্রিক ধরলে তার মধ্য়ে ৭৯.৬ শতাংশ মুসলমান, ১০ শতাংশ খ্রিস্টান, ৬.৯ শতাংশ শিখ, ২.২ শতাংশ বৌদ্ধ, ১,৩ শতাংশ জৈন এবং ০,১ শতাংশ পার্সি পড়ুয়া রয়েছে।
এছাড়াও, ইউডিআইএসই-এর তথ্যভাণ্ডার অনুসারে, জাতীয়স্তরে নথিভুক্ত পড়ুয়াদের মধ্যে ২৬.৯ শতাংশ সাধারণ শ্রেণি, ১৮ শতাংশ তফসিলি জাতিভুক্ত, ৯.৯ শতাংশ তফসিলি উপজাতিভুক্ত এবং ৪৫.২ শতাংশ অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণীভুক্ত ছাত্রছাত্রী রয়েছে।
ইউডিআইএসই কর্তৃপক্ষ এই তথ্যভাণ্ডার নির্মাণের জন্য আধার নম্বর-সহ পড়ুয়া-ভিত্তিক তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করেছে। সামগ্রিকভাবে, ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে ১৯.৭ কোটিরও বেশি পড়ুয়া তাদের আধার নম্বর জমা করেছে।
তাদের এই রিপোর্টেই উঠে এসেছে, বিভিন্ন রাজ্যে পঠনপাঠনের জন্য বরাদ্দ স্কুল এবং শিক্ষক শিক্ষিকা ও পড়ুয়াদের সংখ্যাও ভিন্ন।
যেমন - উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, অসম, ওডিশা, অন্ধ্রপ্রদেশ, হিমাচল প্রদেশ, জম্মু ও কাশ্মীর, উত্তরাখণ্ড এবং রাজস্থানের মতো রাজ্যগুলিতে নথিভুক্ত পড়ুয়াদের তুলনায় স্কুলের সংখ্য়া বেশি। অর্থাৎ - এই রাজ্যগুলিতে পরিকাঠামো থাকা সত্ত্বেও তার উপযোগিতা কম।
অন্যদিকে, তেলেঙ্গানা, পঞ্জাব, পশ্চিমবঙ্গ, হরিয়ানা, গুজরাট, মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, দিল্লি এবং বিহারের মতো রাজ্যগুলিতে নথিভুক্ত পড়ুয়াদের প্রয়োজনের তুলনায় স্কুলের সংখ্যা কম। যা থেকে মনে করা হচ্ছে, এই রাজ্যগুলিতে মজুত পরিকাঠামো যথেষ্ট পরিমাণেই ব্যবহার করা হচ্ছে।