বাংলাদেশে থেকে ভারতে এসেছিলেন দুই পর্যটক। দার্জিলিং এবং সিকিমের পাহাড় ঘুরে দেখার ইচ্ছে ছিল তাদের। কিন্তু, ট্রেনে উঠতেই ঘটল বিপত্তি। চায়ের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে পর্যটকদের কাছ থেকে সর্বস্ব লুট করে নিল দুষ্কৃতীরা। এমনই ঘটনা ঘটেছে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে। ঘটনায় দুই পর্যটককে ভর্তি করা হয় নিউ জলপাইগুড়ি রেল হাসপাতালে। টাকা, পয়সা থেকে শুরু করে লাগেজ এবং অন্যান্য মূল্যবান সামগ্রীর পাশাপাশি চুরি হয়ে গিয়েছে তাদের পাসপোর্ট, ভিসা। এই অবস্থায় কীভাবে তারা দেশে ফিরবেন তা কিছুতেই বুঝে উঠতে পারছেন না। একইসঙ্গে ঘটনায় জিআরপির বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলেছেন পর্যটকরা।
আরও পড়ুন: গভীর রাতে বাড়িতে ঢুকে ব্যবসায়ীকে খুন, সবকিছু লুটপাট করে পালাল দুষ্কৃতীরা
জানা গিয়েছিলেন, পর্যটকরা গত রবিবার মালদা থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে উঠেছিলেন। তাদের নামার কথা ছিল শিলিগুড়িতে। এই দুই পর্যটক গত শনিবার বনগাঁ সীমান্ত হয়ে ভারতে আসেন। শিলিগুড়ি থেকে তাদের পাহাড়ে ঘুরতে যাওয়ার কথা ছিল। আর পাহাড় ঘোরার পর আবার দেশের পরার পরিকল্পনা ছিল পর্যটকদের। কিন্তু, ট্রেনে ওঠার পরেই ঘটে বিপত্তি। জানা গিয়েছে, ট্রেনে দুজন অচেনা যাত্রীর সঙ্গে তাদের পরিচয় হয়। তাদের সঙ্গে বেশ গল্প জমে ওঠে তখন বাংলাদেশের পর্যটকদের। শুধু তাই নয়, পর্যটকদের সঙ্গে ভাব জমাতে নিজেদের আসন পর্যন্ত ছেড়ে দেয় ওই যাত্রীরা। ভারতীয় নাগরিকদের এমন ব্যবহার দেখে আপ্লুত হয়েছিলেন বাংলাদেশি পর্যটকরা। এমনকী, তাদের চাও খাইয়েছিলেন ওই যাত্রীরা। কিন্তু, চা খাওয়ার পরেই তারা ঘুমিয়ে পড়েন বাংলাদেশি নাগরিকরা। পরে জিআরপি তাদের অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করে নিউ জলপাইগুড়ি রেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সোমবার রাতে জ্ঞান ফিরেই দুই বাংলাদেশি পর্যটক বুঝতে পারেন সহযাত্রীর বেশে তাদের সবকিছু লুটপাট করেছে দুষ্কৃতীরা।
সেই ঘটনার পরে তারা শিলিগুড়ি জংশনের টাউন জিআরপিতে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তাদের অভিযোগ, জিআরপি সবরকমের সহযোগিতা অশ্বাস দিলেও সেটা করা হয়নি। এক পর্যটকের বক্তব্য ভারতের এরকম পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে তা তারা বুঝতে উঠতে পারেননি। পুলিশের তরফ থেকে সহযোগিতা পাওয়া যায়নি। ভিসা পাসপোর্ট চুরি হয়ে যাওয়ায় এখন কীভাবে দেশে ফিরবেন তা বুঝে উঠতে পারছেন না।
এবিষয়ে রেল পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, বেশ কয়েক বছর আগে এই ধরনের ঘটনা ঘটত উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন ট্রেন। তখন অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকজন দুষ্কৃতিকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। সম্প্রতি আবার এই ধরনের ঘটনা ঘটছে। এর পিছনে জহরখুরানি গ্যাংয়ের হাত রয়েছে। তাই রেলের তরফে আবার অভিযান শুরু করা হয়েছে।