আবারও প্রকাশ্য়ে তৃণমূল কংগ্রেসের ঘরের কোন্দল। যে পুরসভায় ক্ষমতায় রয়েছে রাজ্যের শাসকদল, সেই পুরসভারই বোর্ড ভেঙে দিতে হল তৃণমূলেরই নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের বিরোধিতার জেরে। এমনকী, মহকুমাশাসক (এসডিও)-কে প্রশাসক পদে বসিয়েও বিতর্ক এড়ানো গেল না। উলটে, কেন এসডিও-কে প্রশাসক পদে বসানো হল, সেই প্রশ্ন তুলে এবং রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে এবার কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন পুরুলিয়ার রঘুনাথপুর পুরসভার কাউন্সিলররা। যাঁদের অধিকাংশই তৃণমূলের সদস্য!
ঘটনা প্রসঙ্গে জানা গিয়েছে, রঘুনাথপুর পুরসভার মোট আসন ১৩টি। বর্তমানে মোট ১৩টি ওয়ার্ডের মধ্য়ে তৃণমূল কংগ্রেসের দখলে রয়েছে ১০টি ওয়ার্ড, কংগ্রেসের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি রয়েছেন দু'টি ওয়ার্ডে এবং একটি ওয়ার্ড রয়েছে বিজেপির দখলে। এত দিন পুরপ্রধান পদে আসীন ছিলেন তরণী বাউরি।
গত ২৪ এপ্রিল (২০২৫) তরণীর বিরুদ্ধে অনাস্থা পেশ করেন তাঁরই দলের ৬ কাউন্সিলর। তাঁদের সঙ্গ দেন কংগ্রেসের ১ কাউন্সিলরও। অভিযোগ ছিল, পুরপ্রধান দুর্নীতিতে ডুবে রয়েছেন, তাই তাঁকে তাঁর পদ থেকে সরিয়ে দিতে হবে। সেই অনাস্থা নিয়ে আলোচনা ও ভোটাভুটি হওয়ার কথা ছিল ২৩ মে। কিন্তু, তার আগেই পুরোনো পুরবোর্ড ভেঙে দেয় রাজ্য পুর ও নগরন্নয়ন দফতর। এরপর মহকুমাশাসককে পুরসভার প্রশাসক পদে নিয়োগ করা হয়।
রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তে বেজায় চটেছেন তরণীকে বাদ দিয়ে বাকি কাউন্সিলররা। তাঁরা সকলে সমবেতভাবে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা রুজু করেছেন। তাঁদের বক্তব্য, অনাস্থা নিয়ে ভোটাভুটির আগেই যেভাবে পুরবোর্ড ভেঙে প্রশাসক নিয়োগ করা হয়েছে, তাতে তাঁরা ভোটদানের ন্য়ায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। তাই, তাঁরা সরকারের এই পদক্ষেপের বিরোধিতা জানাচ্ছেন। আগামী ২৮ মে এই মামলার শুনানি করা হবে।
অন্যদিকে, দুর্নীতিতে অভিযুক্ত অপসারিত পুরপ্রধান পালটা পুরসভার বাকি কাউন্সিলরদেরই কাঠগড়ায় তুলেছেন। সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, 'কয়েকজন কাউন্সিলারের মনোভাব কীভাবে চুরি করব, কীভাবে টাকা পাব! তাদের শুধু টাকা চাই! তারই প্রতিবাদ করে গিয়েছি। সরকারের সিন্ধান্ত অনুযায়ী মহকুমাশাসককে দায়িত্ব দিয়েছি। দলের কাউন্সিলরদের আচরণ জেলা ও রাজ্যকে জানানো হয়েছে। রাজ্যের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছি।'