শহর এবং তার আশপাশের গ্রামীণ চেনা দৃশ্য পাল্টাতে চলেছে জেলা প্রশাসন। এবার সড়কে দেখা যাবে মহিলাদের হাতে যাত্রীবাহী বাস কিংবা পণ্যবাহী গাড়ির স্টিয়ারিং। যদিও পেশাগতভাবে বর্তমানে অনেক মহিলা চালক রয়েছেন, তবে এবার মহিলাদের স্বনির্ভর করে তুলতে গুরুত্বপুর্ণ পদক্ষেপ করতে চলেছে পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন। গৃহবধূ ও যুবতীদের জন্য চালক হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাওয়ার নতুন পথ খুলে দেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে জেলা প্রশাসনের তরফে। এরজন্য তাঁদের গাড়ি চালানো শেখাবে জেলা প্রশাসন।
আরও পড়ুন: ‘মেয়েদের মতো গাড়ি চালান,’ পরামর্শ রাজ্য পুলিশের, বাংলায় কত মহিলা চালক জানেন?
এবিষয়ে পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক আয়েশা রানি জানিয়েছেন, মহিলাদের আর্থিক স্বনির্ভরতার লক্ষ্যে এক অভিনব পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে বিশেষ প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন করা হবে। সেখানে গৃহবধূ এবং ১৮ বছর পেরোনো যুবতীরা চালক হিসেবে প্রশিক্ষণ পাবেন। অগ্রাধিকার দেওয়া হবে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের। সঠিক নিয়মে প্রশিক্ষণ নেওয়ার পরই তাঁদের ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
জেলাশাসকের কথায়, অনেক মহিলাই হয়তো আগে থেকেই গাড়ি চালাতে জানেন, কিন্তু বড় গাড়ির জন্য আলাদা দক্ষতা ও নিয়ম জানা প্রয়োজন। জেলা প্রশাসনের তরকে প্রশিক্ষণ দিয়ে, নিয়ম শেখানোর মাধ্যমে সেটাই নিশ্চিত করা হবে। প্রশাসনের এক আধিকারিক জানান, বর্তমানে জেলায় কোনও মহিলা বাস বা পণ্যবাহী গাড়ি চালাচ্ছেন এমন নজির নেই। তবে এ কাজ মেয়েদের পক্ষেও একেবারেই অসম্ভব নয়। প্রশিক্ষণ পেলে তাঁরাও দক্ষ চালক হয়ে উঠতে পারেন। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের জন্য এই প্রকল্পে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। অনেক গোষ্ঠী ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে নিজের গাড়ি কিনে তা চালিয়ে রোজগারের পথ খুলতে পারবেন। ট্রাফিক আইন শেখানো থেকে শুরু করে পথ নিরাপত্তার বিষয়ে সচেতন করা সব কিছুই প্রশিক্ষণের অংশ থাকবে। তিনি জানান, শহরের পাশাপাশি গ্রামীণ মহিলাদের জন্যও থাকছে সুযোগ। জেলা প্রশাসন নতুন কিছু রুটে অটো ও ট্রেকারের পারমিট দেওয়ার কথা ভাবনা চিন্তা করা হচ্ছে। সেখানে মহিলাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
যদিও মহিলাদের স্বনির্ভর করতে এটা জেলা প্রশাসনের বড় পদক্ষেপ, তবে নিয়ম ভাঙলে কেউই রেহাই পাবে না বলে জানানো হয়েছে।প্রশাসন সাফ জানিয়ে দিয়েছে, অন্যান্য চালকদের মতো মহিলা চালকদের ক্ষেত্রেও আইন একইভাবে প্রয়োগ করা হবে। মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানো, হেলমেট না পরা কিংবা ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন সব ক্ষেত্রেই কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।