বছর পাঁচেকের ওই শিশুর নাম তুষার দাস। শিশুকে ঘরে বসিয়ে রেখে তার মা রান্নাঘরে তরকারি আনতে গিয়েছিলেন। সেই সময় একটি সাপ শিশুকে ছোবল মারে। শিশুর চিৎকারে শুনে তার মা সেখানে ছুটে এসে একটি বিষধর সাপ দেখতে পান। দ্রুত শিশুটিকে কাকদ্বীপ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যান পরিবারের সদস্যরা।
উদ্ধার হওয়া সেই ভেলা। নিজস্ব ছবি।
একবিংশ শতকেও মধ্যযুগীয় কুসংস্কার। পৌরাণিক কাহিনিতে বিশ্বাস করেই লক্ষিন্দরের মতো সাপে কাটা শিশুর দেহ ভেলায় দিল শিশুর পরিবার। তাদের বিশ্বাস ছিল ভেলায় ভাসিয়ে দিলে লক্ষিন্দরের মতোই শিশু বেঁচে ফিরবে। তবে শেষমেষ প্রশাসনের তরফে শিশুর দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। এমন ঘটনা ঘটেছে সুন্দরবনের কাকদ্বীপের হারুর পয়েন্ট কোস্টাল থানার প্রসাদপুর এলাকায়। এমন ঘটনাকে কেন্দ্র ব্যাপক শোরগোল পড়ে যায় এলাকায়।
জানা গিয়েছে, বছর পাঁচেকের ওই শিশুর নাম তুষার দাস। শিশুকে ঘরে বসিয়ে রেখে তার মা রান্নাঘরে তরকারি আনতে গিয়েছিলেন। সেই সময় একটি সাপ শিশুকে ছোবল মারে। শিশুর চিৎকার শুনে তার মা সেখানে ছুটে এসে একটি বিষধর সাপ দেখতে পান। দ্রুত শিশুটিকে কাকদ্বীপ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যান পরিবারের সদস্যরা। সেখানে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। শিশুর মৃত্যুতে কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিবারের সদস্যরা। তবে চিকিৎসকরা শিশুকে মৃত ঘোষণা করলেও আশা ছাড়িনি পরিবার। পৌরাণিক কাহিনী অনুযায়ী, সাপে কাটার পর লক্ষিন্দরের দেহ ভেলায় ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তাতে তিনি জীবন ফিরে পেয়েছিলেন। ফলে শিশুকে ভেলায় ভাসিয়ে দিলে সেও জীবন ফিরে পাবে। তাই পৌরাণিক কাহিনীর উপর আস্থা রেখেই শিশুকে ভেলায় ভাসিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন পরিবারের সদস্যরা। পরের দিন বুধবার সেই মতোই তাঁরা একটি কলার ভেলা বানিয়ে শিশুর মৃতদেহ ভাসিয়ে দেন মুড়িগঙ্গা নদীতে। শুধু তাই নয়, শিশু জীবিত হয়ে উঠলে যাতে তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায় তারজন্য ভেলায় একটি নাম ঠিকানা এবং ফোন নম্বর দিয়ে একটি চিরকুটও রেখে দেন পরিবারের সদস্যরা।