দীর্ঘ ২২ বছর পরে ইংল্যান্ডের মাটিতে টেস্ট খেলেতে নেমেচে জিম্বাবোয়ে। সেই নিরিখে ক্রেগ আরভাইন, সিকন্দর রাজাদের কাছে এটি ঐতিহাসিক টেস্ট ম্যাচ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। যদিও এমন ঐতিহাসিক টেস্টের শুরুটা দুঃস্বপ্নের মতো হয়ে থাকল জিম্বাবোয়ের কাছে।
এমনিতেই ব্রেন্ডন ম্যকালামের কোচিংয়ে টেস্টে ইংল্যান্ডের ব্যাজবল শৈলী নিয়ে বিস্তর চর্চা হয়। এবার সামনে জিম্বাবোয়ের মতো দুর্বল দলকে পেয়ে ব্রিটিশ ব্যাটাররা ব্যাজবলের চূড়ান্ত নমুনা পেশ করেন। ইংল্যান্ডের টপ অর্ডার ব্যাটাররা জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে নটিংহ্যাম টেস্টের প্রথম দিনে যে রকম তাণ্ডব চালান, তাতে তারা সাদা পোশাকে ওয়ান ডে খেলেন বলে মনে হওয়া স্বাভাবিক।
ট্রেন্ট ব্রিজে সিরিজের একমাত্র টেস্টে টস হেরে শুরুতে ব্যাট করতে নামে ইংল্যান্ড। তারা লাঞ্চের বিরতিতে ২৬ ওভার ব্যাট করে বিনা উইকেটে ১২৬ রান সংগ্রহ করে। চায়ের বিরতিতে ইংল্যান্ডের স্কোর ছিল ৫৩ ওভারে ১ উইকেটে ২৯৫ রান। শেষমেশ প্রথম দিনের শেষে ৮৮ ওভার ব্যাট করে ইংল্যান্ড তাদের প্রথম ইনিংসে সংগ্রহ করে ৩ উইকেটে ৪৯৮ রান।
অল্পের জন্য টেস্ট ক্রিকেটের সার্বিক ইতিহাসে প্রথম দিনে সব থেকে বেশি রান তোলার রেকর্ড হাতছাড়া করে ইংল্যান্ড। যদিও এই রেকর্ড তাঁদের দখলেই রয়েছে। ইংল্যান্ড ২০২২ সালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের প্রথম দিনে ৪ উইকেটে ৫০৬ রান তোলে। বৃহস্পতিবার নটিংহ্যামে নিজেদের পুরনো রেকর্ড ভাঙতে না পারলেও ইংল্যান্ডের ৩ উইকেটে ৪৯৮ সেই তালিকার দ্বিতীয় স্থানে জায়গা করে নেয়। অর্থাৎ, টেস্টের প্রথম দিনে সব থেকে বেশি রান খরচের লজ্জার রেকর্ড থেকে মুক্তি পেল না পাকিস্তান। জিম্বাবোয়ে সেই তালিকার দ্বিতীয় স্থানে জায়গা করে নেয়।
টেস্টের প্রথম দিনের ওঠা সব থেকে বেশি রান
১. ইংল্যান্ড- ৪ উইকেটে ৫০৬ রান বনাম পাকিস্তান (রাওয়ালপিন্ডি, ২০২২)
২. ইংল্যান্ড- ৩ উইকেটে ৪৯৮ রান বনাম জিম্বাবোয়ে (নটিংহ্যাম, ২০২৫)।
৩. অস্ট্রেলিয়া- ৬ উইকেটে ৪৯৪ রান বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা (সিডনি, ১৯১০)।
টেস্ট ক্রিকেটের একদিনে ওঠা সব থেকে বেশি রানের তালিকায় ছয় নম্বরে জায়গা করে নেয় ইংল্যান্ডের এদিনের ৩ উইকেটে ৪৯৮ রান। এই নিরিখেও রেকর্ড রয়েছে ব্রিটিশদের নামেই। ১৯৩৬ সালে ম্যাঞ্চেস্টারে ভারতের বিরুদ্ধে টেস্টের দ্বিতীয় দিনে ইংল্যান্ড ৬ উইকেটে ৫৮৮ রান সংগ্রহ করে।
বৃহস্পতিবার জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে প্রথম ইনিংসে শতরান করেন ইংল্যান্ডের প্রথম তিনজন ব্যাটার। বেন ডাকেট ১৫টি বাউন্ডারির সাহায্যে ১০০ বলে ব্যক্তিগত শতরান পূর্ণ করেন। তিনি ১৩৪ বলে ১৪০ রান করে আউট হন। মারেন ২০টি চার ও ২টি ছক্কা।
জ্যাক ক্রলি ১২টি বাউন্ডারির সাহায্যে ১৪৫ বলে ব্যক্তিগত শতরানের গণ্ডি টপকান। তিনি ১৭১ বলে ১২৪ রান করে মাঠ ছাড়েন। মারেন সাকুল্যে ১৪টি বাউন্ডারি। তিন নম্বরে ব্যাট করতে নেমে ওলি পোপ ১৪টি চার ও ১টি ছক্কার সাহায্যে ১০৯ বলে ব্যক্তিগত শতরান পূর্ণ করেন। তিনি প্রথম দিনের শেষে নট-আউট থাকেন ব্যক্তিগত ১৬৯ রানে। ১৬৩ বলের আগ্রাসী ইনিংসে তিনি মোট ২৪টি চার ও ২টি ছক্কা মারেন।
জো রুট ৩টি বাউন্ডারির সাহায্যে ৪৪ বলে ৩৪ রান করে সাজঘরে ফেরেন। হ্যারি ব্রুক ১৮ বলে ৯ রান করে প্রথম দিনে অপরাজিত থাকেন।