রাত পোহালেই ৮ জানুয়ারি। ওইদিন থেকে শুরু হয়ে যাচ্ছে গঙ্গাসাগর মেলা। যা চলবে আগামী ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত। তার আগেই আজ, মঙ্গলবার জেলায় একাধিক প্রকল্পের উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। আর সেই অঙ্কটা প্রায় ১৫৩ কোটি টাকার। যার দ্বারা ১৯ লক্ষ মানুষ উপকৃত হবেন বলে দাবি করা হচ্ছে। ১২টি জেটি করা হয়েছে ৫৫ কোটি টাকা দিয়ে। ভেসেল সার্ভিস করা হয়েছে ২১ কোটি ২০ লক্ষ টাকা দিয়ে। আজ গঙ্গাসাগরে দাঁড়িয়ে মেলার প্রস্তুতি সম্পর্কে যাবতীয় বিষয় জানান রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। আর সাগর এলাকার জন্য আজ ১৬১ কোটি টাকার সরকারি প্রকল্প–কর্মসূচির শিলান্যাস এবং উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিনও মুড়িগঙ্গা নদীর উপর গঙ্গাসাগর সেতু তৈরি করবে রাজ্য সরকার বলে জানিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। কেন্দ্রীয় সরকার জাতীয় মেলার স্বীকৃতি দেয়নি গঙ্গাসাগর মেলাকে। টাকাও দেয়নি। কুম্ভমেলার থেকে এটা যে কোনও অংশ ছোট মেলা নয় সেটাও আজ বোঝান বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তবে সময় এলে জাতীয় মেলা হিসেবে স্বীকৃতি পাবে গঙ্গাসাগরও বলে আজ জানিয়ে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গঙ্গাসাগরকে জাতীয় মেলা আদায়ের দাবি থেকে সরে আসবে না বাংলা উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা কেন্দ্রকে অনুরোধ করেছিলাম এই মেলাকে জাতীয় মেলার স্বীকৃতি দেওয়া হোক। সব তীর্থ বারবার গঙ্গাসাগর কিন্তু আর আগের মতো একবার নয়। আগামী দিনে আপনারা গাড়ি নিয়ে এখানে চলে আসতে পারবেন। মুড়িগঙ্গা নদীর উপরে সেতু তৈরির জন্য আমাদের বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট তৈরি হয়ে গিয়েছে। দেড় হাজার কোটি টাকা মতো খরচ হবে। তার বেশিরভাগ টাকা আমরা আলাদা করে রেখে দিয়েছি।’
আরও পড়ুন: পূর্ব মেদিনীপুরে পঞ্চায়েতও হাতছাড়া বিজেপির, দুই সদস্যের দলবদলে শুভেন্দুর গড়ে ঘাসফুল
গঙ্গাসাগর মেলা নিয়ে উস্কানি ছড়ানো হতে পারে। তাই সকলকে খেয়াল রাখতে হবে বলেও সতর্ক করেন মুখ্যমন্ত্রী। সুরক্ষাকে বারবার প্রাধান্য দেওয়ার কথা বলেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুণ্যার্থীদের জন্য পরিবহণ পরিষেবার বিস্তারিত তথ্য তিনি দেন। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘গঙ্গাসাগর মেলায় আগত পুণ্যার্থীদের জন্য ২২৫০টি সরকারি বাস, ২৫০টি বেসরকারি বাস, ৯টি বার্জ, ৩২টি ভেসেল, ১০০টি লঞ্চ, ২১টি জেটি ব্যবহার করা হবে। বার্জ, ভেসেল লঞ্চে জিপিএস এবং স্যাটেলাইট ট্র্যাকিংয়ের ব্যবস্থা থাকবে। গঙ্গাসাগর যাওয়ার জন্য মুড়িগঙ্গা নদীর উপর সেতু তো করে দিচ্ছি। সুযোগ পেলে আমাদের দলের পাশাপাশি সবাই মিলে গঙ্গাসাগর মেলাকে জাতীয় মেলাও করব। আমরাও করব সময় পেলে।’
এবার গঙ্গাসাগর মেলায় ২৫০০ সিভিল ডিফেন্স এবং অন্যান্য ভলান্টিয়ার নিয়োগ করা হচ্ছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। চিকিৎসার জন্য সাগরের হাসপাতালগুলিতে শুধু মেলার জন্য ৫১৫টি বেডের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আইসিইউ’র ব্যবস্থা থাকবে বলে জানান তিনি। সেখানে থাকবেন পর্যাপ্ত চিকিৎসক, নার্স এবং প্যারামেডিক্সও। গঙ্গাসাগর মেলা উপলক্ষ্যে ১০০টি অ্যাম্বুল্যান্স, ৪টি ওয়াটার অ্যাম্বুল্যান্স, ১টি এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সেরও ব্যবস্থা থাকছে। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘নতুন ৩টি সেতু তৈরি হচ্ছে। পাথরপ্রতিমায় ৪টি ভেসেল পরিষেবা চালু হচ্ছে। পুণ্যার্থীদের জন্য থাকছে পরিবেশবান্ধব ব্যাগ। বার্জ, ভেসেল, লঞ্চে থাকছে জিপিএস ট্র্যাকিং। মেলা নিয়ে যাতে কোনও নেগেটিভ ন্য়ারেটিভ না তৈরি হয় তার জন্য আমাদের সকলকে নজর রাখতে হবে। দ্বারকা, পিয়ালি নদীর ওপর ৩টি সেতু তৈরি করতে খরচ হবে ৪০ কোটি টাকা।’