স্ত্রী যদি নাবালিকা হয়, অর্থাৎ - বিবাহিতা কোনও নারীর বয়স যদি ১৮ বছরের কম হয়, এবং যদি তার সম্মতি নিয়েই তার সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করা হয়, তাহলেও সেই সঙ্গম বা মিলন ধর্ষণ হিসাবেই গণ্য করা হবে।
পাশাপাশি, এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, অর্থাৎ নাবালিকার স্বামী তার সঙ্গে বিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও আইনের চোখে তিনি হবেন ধুর্ষক। গত ১২ নভেম্বর এমনই রায় দিয়েছে মহারাষ্ট্রের বম্বে হাইকোর্ট।
পকসো আইনের অধীনে, নিম্ন আদালতে দোষী সাব্যস্ত এক ব্যক্তির রুজু করা মামলার ভিত্তিতে এই রায় দিয়েছে বম্বে হাইকোর্টের বিচারপতি গোবিন্দ সনপের সিঙ্গল বেঞ্চ।
মামলা সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ওই ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল ওয়ার্ধা জেলার একটি আদালত। তার বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও নাবালিকার যৌন নিগ্রহের অভিযোগ নিম্ন আদালতে প্রমাণিত হয়েছিল। কিন্তু, নিম্ন আদালতের সেই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় ওই ব্যক্তি। তারই ভিত্তিতে গত ১২ নভেম্বর উপরোক্ত পর্যবেক্ষণটি করে বম্বে হাইকোর্ট।
এক্ষেত্রে নিম্ন আদালতের রায় ও ঘোষিত দণ্ড বহাল রেখেছেন বিচারপতি সনপ। সেইসঙ্গে, মামলাকারীর যুক্তিও খারিজ করে দিয়েছেন তিনি। উল্লেখ্য, মামলাকারীর বক্তব্য ছিল, তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করা যেতে পারে না।
কারণ, যে নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ করা হয়েছে, সেই কিশোরী তার বিবাহিতা স্ত্রী এবং তার সম্মতিক্রমেই, তার বিবাহিত স্বামী হিসাবে ওই ব্যক্তি তার সঙ্গে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছিল।
এখানেই আপত্তি তুলেছেন বিচারপতি সনপ। তিনি বলেন, ১৮ বছরের কম বয়সী একজন কিশোরীর সম্মতি কখনই তার সঙ্গে কারও যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হওয়ার আইনি বৈধতা দিতে পারে না। কারণ, সেই নারী তখনও নাবালিকা। সে যদি কারও বিবাহিতা স্ত্রী হয়, তাতেও কিছু যায় আসে না।
এই মামলা নিয়ে 'লাইভ-ল'-এ যে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে বলা হয়েছে - এই বিষয়ে আদালতের পর্যবেক্ষণ ছিল, বিবাহিতার স্ত্রীর সম্মতিক্রমে যদি তাঁর স্বামী তাঁর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করেন, তাহলে তা সাধারণত ধর্ষণ বা সেরকম কোনও অপরাধ হিসাবে গ্রাহ্য করা হয় না।
সুপ্রিম কোর্ট এমন বিধির কথা বললেও, এই মামলায় সেই বিধি বা আইন কার্যকর হতে পারে না। কারণ, এখানে সংশ্লিষ্ট নারীর বয়স ১৮ বছরের কম। তাই সে বিবাহিত কিনা এবং সে সঙ্গমের কোনও সম্মতি দিয়েছিল কিনা, সেই যুক্তি অপ্রাসঙ্গিক।