চিনের শ্যানডং প্রদেশের একটি রাসায়নিক কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণে কমপক্ষে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ ৬। ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়বে আশঙ্কা করছে প্রশাসন। বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে, কয়েক কিলোমিটার দূর থেকে তার আওয়াজ পাওয়া গিয়েছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি। ভয়াবহ বিস্ফোরণে গোটা এলাকা কেঁপে ওঠে। মুহূর্তের মধ্যে গোটা এলাকা কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায়। ঘটনার একাধিক ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। দেখা যাচ্ছে, বিস্ফোরণের ফলে এক বিশালাকার আগুনের গোলায় আকাশ আলোকিত হয়ে উঠেছে। শেষে দেখা যাচ্ছে ‘মাশরুম-ক্লাউড’ বা ব্যাঙের ছাতার মতো দেখতে ধোঁয়ার মেঘ। পরমাণু বোমা বিস্ফোরণের পর যে ধরণের ‘মাশরুম-ক্লাউড’ দেখা যায়, অনেকটা সেই রকম।
আরও পড়ুন-আমেরিকার ৫১তম অঙ্গরাজ্য হবে কানাডা? ফের প্রস্তাব ট্রাম্পের, সঙ্গে রয়েছে গোল্ডেন ডোম ‘টোপ’
সিনহুয়া সংবাদসংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চিনের রাজধানী বেজিং থেকে প্রায় ৪৫০ কিলোমিটার (২৮০ মাইল) দক্ষিণ-পূর্বে শ্যানডং প্রদেশের গাওমি শহরে অবস্থিত ইউদাও রাসায়নিক কারখানায় স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা নাগাদ বিস্ফোরণ ঘটে। বেজিংয়ের সংবাদপত্র ‘জিনজিংবাও’ কর্তৃক সম্প্রচারিত ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, বিস্ফোরণে আকাশে ধূসর ধোঁয়ার একটি বিশাল কুণ্ডলী উঠে যাচ্ছে। এই সময় একটি শিল্প অঞ্চল এবং দোকানের জানালা ভেঙে গেছে।
এছাড়াও রাস্তার ওপর ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ধ্বংসাবশেষ, ভাঙা গাড়ির উইন্ডস্ক্রিন এবং গাঢ় কমলা রঙের আগুনের শিখা দেখা গিয়েছে। অনেকে আবার দাবি করেছেন, জোরালো কম্পন অনুভূত হয়েছে। প্রথমে তাঁরা ভেবেছিলেন ভূমিকম্প হয়েছে। পরে জানতে পারেন রাসায়নিক কারখানায় বিস্ফোরণের জেরে এই কম্পন। তবে কী থেকে বিস্ফোরণ হয়েছে, তা জানা যায়নি। এ বিষয়ে প্রশাসনের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়াও জানানো হয়নি।
আরও পড়ুন-আমেরিকার ৫১তম অঙ্গরাজ্য হবে কানাডা? ফের প্রস্তাব ট্রাম্পের, সঙ্গে রয়েছে গোল্ডেন ডোম ‘টোপ’
জাতীয় জরুরি ব্যবস্থাপনা মন্ত্রক এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, জরুরি পরিষেবাগুলি ৫৫টি গাড়ি এবং ২৩২ জন উদ্ধারকর্মীকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছে। চিনা অনলাইন মিডিয়া দ্য পেপারের মতে, ইউদাও কেমিক্যাল ‘কম-বিষাক্ত’ কীটনাশক তৈরি করে এবং ৪৭ হেক্টর (১১৬ একর) জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত এই কারখানাটিতে প্রায় ৩০০ জনকে নিয়োগ করেছিল। চিনে নিয়মিত শিল্প দুর্ঘটনা ঘটে, কারণ সে দেশে অগুণিত কারখানায় নিরাপত্তা মান অধিকাংশ ক্ষেত্রে বজায় রাখা হয় না। প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালে বন্দর নগরী তিয়ানজিনে এক গুদামে বিস্ফোরণে ১৭০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত এবং ৭০০ জন আহত হয়।