ঠিক ২২ বছরের ব্যবধানে আবার সংসদে হামলার ঘটনা ঘটল। এই ঘটনায় আলোড়ন পড়েছে গোটা দেশে। স্বাভাবিকভাবেই বিরোধী সাংসদরা সংসদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন। সেখানে চুপ করে আছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এই পরিস্থিতিতে কর্নাটকের বিজেপি সাংসদ প্রতাপ সিনহাকে অবিলম্বে বহিষ্কারের দাবি তুলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। আজ, বুধবার দলের এক্স হ্যান্ডেলে এই ঘটনার প্রেক্ষিতে তুলে আনা হয়েছে মহুয়া মৈত্রের প্রসঙ্গ। স্বাভাবিকভাবেই এখন চাপে পড়ে গিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।
এদিকে মহুয়া মৈত্রকে টাকার বিনিময়ে প্রশ্ন করার অভিযোগ তুলে সদ্য লোকসভা থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এমনকী মহুয়া মৈত্রকে বলতে পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। আর আজ বুধবার বিকেলে সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা বলেন, ‘শুধুমাত্র অভিযোগের ভিত্তিতে আমাদের সাংসদ মহুয়া মৈত্রকে সংসদ থেকে বহিষ্কার করেছে বিজেপি। মহুয়ার জন্য নাকি জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছিল। এখন বুধবার সংসদে যা ঘটল, তাতে কি জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হল না? অবিলম্বে কর্নাটকের বিজেপি সাংসদ প্রতাপ সিনহাকে লোকসভা থেকে বহিষ্কার করতে হবে।’
অন্যদিকে একইভাবে এক্স হ্যান্ডেলে বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দাগা হয়েছে। কারণ এই বিজেপি সাংসদ পাস দিয়েছিলেন। তাতেই দুষ্কৃতীরা ঢুকে পড়ে সংসদে বলে অভিযোগ উঠেছে। আজ এক্স হ্যান্ডেলে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে লেখা হয়েছে, ‘আমাদের সাংসদ মহুয়া মৈত্রকে অবিচার করে সংসদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। বলা হয়েছিল জাতীয় নিরাপত্তা লঙ্ঘন করে লগিন আইডি শেয়ার করা হয়েছে। আজ বিজেপির কর্নাটকের সাংসদ প্রতাপ সিনহা গোটা সংসদকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিয়েছেন পাস দিয়ে বহিরাগতদের। কেন তাঁকে বহিষ্কার করে থামানো হচ্ছে না? কেন একই ধরণের পদক্ষেপ করা হচ্ছে না তাঁর সঙ্গে? কোন অধিকারে তাঁকে সংসদে থাকতে দেওয়া হচ্ছে এমন ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করার পর?’
আরও পড়ুন: সীমান্ত পেরিয়ে পিঁয়াজ পাচার হচ্ছে বাংলাদেশে, নতুন পথে ভারতের ফসল পদ্মাপারে
এই ইস্যুতে তৃণমূল কংগ্রেস জোরদার প্রতিবাদে নেমেছে। মহুয়া মৈত্রের সঙ্গে যদি এমন ঘটনা ঘটে তাহলে বিজেপি সাংসদের সঙ্গে একই ঘটনা ঘটা উচিত। এটা নিয়ে এবার সোচ্চার হবে তৃণমূল কংগ্রেস। ইতিমধ্যেই সিনিয়র সাংসদ তথা বিশিষ্ট আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় সুর সপ্তমে চড়িয়ে বলেন, ‘পার্লামেন্টের নিরাপত্তা নেই। আর মন্ত্রী শশী পাঁজা বলেন, ‘বিজেপি যদি সত্যি জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে থাকে তাহলে অবিলম্বে দেরি না করে প্রতাপ সিনহাকে সংসদ থেকে বহিষ্কার করবে। কারণ, উনি কাদের সঙ্গে মেলামেশা করেন সেটা এই ঘটনা থেকেই প্রমাণিত। কেন এরকম মানুষকে উনি সংসদে ঢোকার অনুমতি দিয়েছিলেন? তদন্ত হওয়া উচিত। দেশের আইন প্রণয়ন যেখানে হয় সেখানের নিরাপত্তা কেমন তা তো বুধবারের ঘটনা আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল। তাহলে এত কোটি কোটি টাকা খরচ করে নতুন সংসদ ভবন তৈরি করা হল, নিরাপত্তার গাফিলতির দায় কে নেবে?’