সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার ও আইনের ছাত্রী শর্মিষ্ঠা পানোলির বিরুদ্ধে মামলাকারী ব্যক্তি ওয়াজাহাত খান এবার নিজেই নিখোঁজ হয়ে গিয়েছেন। এমনটাই দাবি করা হয়েছে ইন্ডিয়া টুডে-র এক রিপোর্টে।ওয়াজাহাতের পরিবারের অভিযোগ, গত রবিবার রাত থেকে তাঁকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। পানোলির গ্রেফতারির পর থেকেই তাঁদের পরিবার হুমকি ফোন পেয়ে চলেছে।
গত শুক্রবার শর্মিষ্ঠা পানোলি কলকাতা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন। শর্মিষ্ঠা পানোলির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিলেন ওয়াজাহাত খান নামের ওই ব্যক্তি। ঘটনাটি ঘটে গুরগাঁওয়ে। এরপর তাঁকে কলকাতায় আনা হয় এবং ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে পেশ করে ১৪ দিনের জেল হেফাজতে পাঠানো হয়। পানোলির গ্রেফতারিকে ঘিরে রবিবার রাজনৈতিক মহলে প্রবল বিতর্ক ছড়ায়। বিজেপি-র একাধিক নেতা তাঁর মুক্তির দাবি তোলেন।যে ভিডিওটি পোস্ট করেছিলেন পানোলি, সেটিতে অশ্লীল ভাষা এবং সাম্প্রদায়িক মন্তব্য ছিল। তিনি অভিযোগ করেন, বলিউডের কিছু সেলেব্রিটি ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর ঘটনার পরে চুপ করে রয়েছেন। সেই ভিডিওটি পরে মুছে দেওয়া হয় এবং পানোলি প্রকাশ্যে ক্ষমা চান।
ওয়াজাহাত খানের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ
ইন্ডিয়া টুডে-র প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওয়াজাহাত খানের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে শ্রী রাম স্বাভিমান পরিষদ নামে একটি সংগঠন। সোমবার অভিযোগটি জমা পড়েছে গার্ডেনরিচ থানায়। ওই সংগঠনের দাবি, সোশ্যাল মিডিয়ায় হিন্দু সম্প্রদায়কে নিয়ে অবমাননাকর এবং উস্কানিমূলক মন্তব্য করেছেন ওয়াজাহাত খান।২ জুনের ওই চিঠিতে পুলিশকে অনুরোধ করা হয়েছে, যেন ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৯৬(১)(এ), ২৯৯, ৩৫২, ৩৫৩(১)(সি) ধারায় এবং তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৬৬এ ও ৬৭ ধারায় তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়।অভিযোগে বলা হয়েছে, ওয়াজাহাত খান হিন্দুদের উদ্দেশ্যে কুরুচিকর শব্দ ব্যবহার করেছেন। এছাড়াও তিনি অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করে ধর্মীয় উৎসব নিয়ে কটাক্ষ করেছেন।অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, তিনি সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়ানোর জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে কনটেন্ট ছড়াচ্ছেন। এর ফলে জনশান্তি ব্যাহত হচ্ছে এবং ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলির মধ্যে শত্রুতা বাড়ছে। অতএব, যাতে আর কোনও বিশৃঙ্খলা না ছড়ায়, তার জন্য অবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানানো হয়েছে।
এদিকে, অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে কামাখ্যা দেবী-সহ বেশ কিছু হিন্দু দেবদেবীর অপমান করার অভিযোগে রাজ্যে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। অসম সরকার তাকে হেফাজতে নেওয়ার জন্য পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। তিনি আরও বলেন, 'সময়ই বলবে তারা এই অনুরোধে কীভাবে সাড়া দেবে এবং আমাদের সঙ্গে সহযোগিতা করবে।'
ওয়াজাহাত খানের বাবার অভিযোগ
ওয়াজাহাত খানের বাবা সাদাত খান দাবি করেছেন, রবিবার রাত থেকেই নিখোঁজ তাঁর ছেলে।তাঁর কথায়, 'আমার ছেলে নির্দোষ এবং ধর্মনিরপেক্ষ। ও কখনও হিন্দুধর্মকে অপমান করতে পারে না। পানোলির গ্রেফতারির পর থেকেই আমাদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে।'ছেলের বিরুদ্ধে হিন্দুধর্মকে অপমান করার অভিযোগ নিয়ে তিনি জানান, ওয়াজাহাতের প্রোফাইল হয়তো হ্যাক হয়েছে। তাঁর দাবি, ছেলের বিরুদ্ধে গত কয়েকদিনে বহু কুৎসিত এবং হুমকিসূচক ফোন এসেছে। তিনি বলেন, 'এসব ফোনে বলা হয়েছে, ও নাকি পানোলির জীবন নষ্ট করেছে।' সাদাত খান নিজেও একই ধরনের ফোন পেয়েছেন এবং কুমন্তব্যের শিকার হয়েছেন।