তখন এই অনুসন্ধান খারিজ করার দাবিতে সেন্ট্রাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইবুনালের কলকাতা বেঞ্চে আবেদন করেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। পাল্টা দিল্লিতে সরানোর জন্য আবেদন জানায় ডিপার্টমেন্ট অফ পার্সোনাল অ্যান্ড ট্রেনিং। সেন্ট্রাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনালের প্রিন্সিপ্যাল বেঞ্চে সেই আবেদন জানানো হয়।
পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়।
বাংলার প্রাক্তন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবসরকালীন ভাতা নিয়ে জট কাটেনি। তা নিয়ে মামলা হয়েছে। এবার সেই মামলার শুনানি হবে দিল্লি হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে। ট্রাইব্যুনালের প্রিন্সিপাল বেঞ্চের (ক্যাট) নির্দেশ ছিল, আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই অবসরকালীন ভাতা সংক্রান্ত মামলা চলবে দিল্লি হাইকোর্টে। কিন্তু প্রাক্তন মুখ্যসচিব মামলা কলকাতায় রাখতে কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন করেন। তাতে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ স্থগিতাদেশ দেয় এবং কলকাতাতেই মামলা চলবে বলে রায় দেয়। সেই রায়কে খারিজ করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। এবার সর্বোচ্চ আদালত জানাল, দিল্লি হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চেই হবে শুনানি।
এদিকে কলকাতা হাইকোর্টের দেওয়া রায় বাতিল করে দেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এএম খানউইলকর ও বিচারপতি সিটি রবিকুমারের বেঞ্চ। তাতে বেশ চাপে পড়ে যান আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এই নির্দেশ বাতিল করে সেটা কলকাতা হাইকোর্টের এক্তিয়ারের মধ্যে পড়ে না বলে জানিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ডাকা একটি পর্যালোচনা বৈঠকে অংশ নেননি আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলে অভিযোগ। তাই প্রাক্তন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ তোলে কেন্দ্রীয় সরকার। ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের পর কলাইকুণ্ডাতে প্রধানমন্ত্রী রিভিউ বৈঠক ডাকেন। তখন রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় অনুপস্থিতি ছিলেন। যা নিয়ে তোলপাড় হয়।
অন্যদিকে এই ঘটনার পরই আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে নয়াদিল্লিতে ডেকে পাঠানো হয়। তাঁকে শোকজ করা হয়। ২০০৫ সালের বিপর্যয় মোকাবিলা আইন কাজে লাগানো হয়। আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ডিপার্টমেন্ট অফ পার্সোনাল অ্যান্ড ট্রেনিংয়ের পক্ষ থেকে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ তোলা হয়। শুরু হয় অনুসন্ধানও। তখন এই অনুসন্ধান খারিজ করার দাবিতে সেন্ট্রাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইবুনালের কলকাতা বেঞ্চে আবেদন করেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। পাল্টা দিল্লিতে সরানোর জন্য আবেদন জানায় ডিপার্টমেন্ট অফ পার্সোনাল অ্যান্ড ট্রেনিং। সেন্ট্রাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনালের প্রিন্সিপ্যাল বেঞ্চে সেই আবেদন জানানো হয়। তারই প্রেক্ষিতে নয়াদিল্লিতে স্থানান্তরিত হয়।
এছাড়া এই নিয়ে অনেক জলঘোলা হতে থাকে। ২০২১ সালে রাজ্যের মুখ্যসচিব পদ থেকে অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। তখন সেখানে দায়িত্বে আসেন হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। এই ঘটনার পর তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘একটা চিঠি এসেছে। আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে নর্থ ব্লকে কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে। তবে সেই চিঠিতে আর কিছুই তাতে লেখা নেই।’ এই ঘটনাটিকে প্রতিশোধমূলক আচরণ বলে মন্তব্য করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এখন এই মামলা দিল্লিতে চলে গেলে নতুন করে লড়াই করতে হবে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে।