সুপ্রিম কোর্টের রায়ে গত বৃহস্পতিবার বাতিল হয়ে গিয়েছে ২০১৬ সালের এসএসসির পুরো প্যানেল। তারফলে এক ধাক্কায় চাকরি গিয়েছে ২৬ হাজার জনের। কোনও স্কুলে ১১ জন আবার কোনও স্কুলে ৩০ জনেরও বেশি শিক্ষকের চাকরি গিয়েছে। স্কুলগুলিতে শিক্ষকের অভাব তৈরি হওয়ায় এখন পরিস্থিতি সামাল দিতে হচ্ছে পার্শ্ব শিক্ষকদের। ফলে তাঁদের উপর চাপ বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে এবার বেতন বৃদ্ধির দাবিতে রাজ্য সরকারের উপর চাপ বাড়াতে চলেছেন পার্শ্ব শিক্ষকরা। তাঁদের দাবি, বেতন না বাড়ালে তাঁরা অতিরিক্ত কাজ করবেন না। এই দাবিতে আজ সোমবার থেকে বুধবার পর্যন্ত তিন দিন স্কুল বয়টকের ডাক দিয়েছেন পার্শ্ব শিক্ষকরা। (আরও পড়ুন: ৩০০০ পয়েন্ট পতন সেনসেক্সে, নিফটি পড়ল ১৩০০ পয়েন্ট, শেয়ার বাজারে হাহাকার)
আরও পড়ুন: পোর্টালে নথি আপলোডের জন্য পার্শ্বশিক্ষকদের ৮দিন সময় দিল স্কুল সার্ভিস কমিশন
পার্শ্ব শিক্ষকদের দাবি, চাকরি বাতিলের পর তাঁদের বেশি সংখ্যায় ক্লাস নিতে হচ্ছে। এমনিতে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত সপ্তাহে ২০টি ক্লাস নেওয়ার কথা তাঁদের। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে সেই জায়গায় এই সব ক্লাসের সঙ্গে দশম এমনকী একাদশ, দ্বাদশের ক্লাসও নিতে হচ্ছে। আর এইসবের পাশাপাশি সপ্তাহে একটা দিন বাড়ি বাড়ি গিয়ে স্কুলছুটদের শিক্ষার স্রোতে ফেরানোর কাজ করতে হচ্ছে। এত কিছু করার পরেও মাত্র ১৩০০০ টাকা বেতন পাচ্ছেন পার্শ্ব শিক্ষকরা। যাতে কোনওভাবেই সংসার চালানো সম্ভব নয়। এই অবস্থায় ফের বেতন বৃদ্ধির দাবিতে সরব হয়েছেন পার্শ্ব শিক্ষকরা। (আরও পড়ুন: বাংলাদেশে হিন্দু মহিলার দেহ টুকরো-টুকরো করে কার্টনে ভরে ফেলে আসা হল রাস্তার পাশে)
আরও পড়ুন: পার্কসার্কাসে রামভক্তদের গাড়িতে ভাঙচুরের অভিযোগ বিজেপির, কলকাতা পুলিশ বলল…
সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, পার্শ্ব শিক্ষক ঐক্য মঞ্চের আহ্বায়ক ভগীরথ ঘোষ জানিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে পার্শ্ব শিক্ষকরা বঞ্চনার শিকার। ফলে বাধ্য হয়ে পার্শ্ব শিক্ষকরা স্কুলে পড়ানোর পাশাপাশি কেউ ফলের দোকান দিচ্ছে, কেউ রাজমিস্ত্রির কাজ করছেন বা অন্য কাজ করছেন। তবে তাঁরা কোনওভাবেই দায়িত্ব থেকে সরে আসেন না। এই বঞ্চনার প্রতিবাদে তিন দিনের স্কুল বয়কটের ডাক দেওয়া হয়েছে। পার্শ্ব শিক্ষকদের দাবি, উৎসশ্রী পোর্টালের মাধ্যমে বহু শিক্ষক গ্রাম থেকে শহরে চলে গিয়েছেন। যার ফলে প্রত্যন্ত এলাকার স্কুলে শিক্ষকের অভাব রয়েছে। অথচ পড়ুয়াদের কথা ভেবে পরিশ্রম করে চলেছেন পার্শ্ব শিক্ষকরা। এমনকী মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিকের খাতাও দেখেন। ফলে অবিলম্বে তাঁদের বেতন বাড়াতে হবে।
উল্লেখ্য সম্প্রতি বিধানসভায় শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেছিলেন, স্থায়ী শিক্ষক এবং পার্শ্বশিক্ষকদের পদ আলাদা। তবুও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের জন্য অনেক কিছু করেছেন। পার্শ্ব শিক্ষকদের একাংশের দাবি, স্কুল ছুটদের ফেরাতে দেশে প্রথম সারিতে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। আর এই কৃতিত্ব তাঁদের। অথচ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাফল্যের কথা বললেও যারা এই সাফল্যের নেপথ্যে রয়েছেন তাঁদের কথা উল্লেখ করেননি।
পার্শ্ব শিক্ষকরা ক্লাস নেওয়া বন্ধ করে দিলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে বলে মনে করছেন শিক্ষক মহলের একাংশ। এবিষয়ে শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারী জানিয়েছেন, পূর্ণ সময়ের শিক্ষকদের মতো পার্শ্ব শিক্ষকদের কাজ করতে হয়, তারপরেও তাঁরা বঞ্চনার শিকার। ফলে তিনি বয়কটকে সমর্থন করেছেন।