সম্প্রতি ক্রিকেট থেকে অবসরের কথা ঘোষণা করেছেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। এরকম পরিস্থিতিতে ভারতের স্পিন অ্যাটাক বাছাই করতে বেশ সমস্যায় পড়তে হবে ম্যানেজমেন্টকে। অশ্বিনের সতীর্থ রবীন্দ্র জাদেজার বয়সও ৩৬ বছর হয়ে গিয়েছে, ফলে তাঁকেও আর কতদিন ভারতের জার্সি গায়ে মাঠে দেখা যাবে সেই বিষয়ে সন্দেহ রয়েছে। অক্ষর প্যাটেল এবং ওয়াশিংটন সুন্দর এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ভালো করেছে, কিন্তু অশ্বিন বা জাদেজাকে ছাড়া স্পিন আক্রমণে নেতৃত্ব দেওয়া সম্পূর্ণ ভিন্ন বিষয়। এই ধরনের পরিস্থিতি সব ধরণের ফরম্যাটের ক্ষেত্রে কুলদীপ যাদবের ভূমিকাকে আরও গুরুত্বপূর্ণ করে তোলে।
বাঁ হাতি এই স্পিনার অক্টোবরে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে বেঙ্গালুরু টেস্টের পর বাম দিকের কুঁচকির সমস্যার কারণে খেলার বাইরে ছিলেন। এই কারণে তাঁকে চলতি বর্ডার গাভাসকর ট্রফির দল থেকেও বাদ পড়তে হয়েছে। সম্প্রতি জার্মানিতে অস্ত্রোপচারের পরে, কুলদীপ বর্তমানে বেঙ্গালুরুতে বিসিসিআই সেন্টার অফ এক্সিলেন্সে রয়েছেন এবং সেখানে রিহ্যাব প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। এখন প্রশ্ন তাঁকে ক্রিকেট মাঠে আবার কবে দেখা যাবে? ফেব্রুয়ারির চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলতে দেখা যাবে তাঁকে? যদিও তার আগে ভারত ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৫টি টি-২০ এবং ৩টি ওডিআই ম্যাচ খেলবে। যা ২২ জানুয়ারি থেকে ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে।
BCCI সূত্রে জানা যাচ্ছে, ‘কুলদীপ এখনও বোলিং শুরু করতে পারেনি। বোলিং শুরু করার আগে তাঁকে গ্রিন সিগন্যাল পাওয়ার জন্য একটি বা দুটি ম্যাচ সিমুলেশনে উপস্থিত হতে হবে। ইংল্যান্ডের ম্যাচগুলির জন্য, এটি অসম্ভব নয় তবে কঠিন (কুলদীপের জন্য ফিরে আসা), কারণ সেই সিরিজ শুরু হতে আর মাত্র এক মাসের মতো সময় বাকি। তবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি সম্পর্কে যদি বলতে হয়, তবে তাঁর প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনা থাকতে পারে, কারণ এটির জন্য এখনও আরও অনেকটা সময় বাকি আছে।’
যদিও, কুলদীপের ব্যক্তিগত এবং দীর্ঘ সময়ের কোচ কপিল পান্ডে মনে করেন যে তাঁর প্রত্যাবর্তন করতে আর খুব বেশি সময় নেওয়া উচিত নয়। তিনি এক সংবাদপত্রকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আসলে, বেঙ্গালুরু টেস্ট খেলার সময়ও কুলদীপ কিছুটা ব্যথা অনুভব করেছিল। তারপর আমি তাকে বলেছিলাম আর না খেলতে, কারণ তার অবস্থা আরও খারাপ হতে পারত। এর পর, গত মাসে জার্মানিতে ওর কুঁচকিতে একটি সফল অস্ত্রোপচার হয়েছে। নভেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে সেন্টার অফ এক্সিলেন্সে ও রিহ্যাবের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। যার মধ্যে স্কোয়াট সহ বেশ কিছু পায়ের ব্যায়াম অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘অস্ত্রোপচারটি এত ভালোভাবে করা হয়েছিল যে ও যখন জার্মানি থেকে ফিরেছিল, তখন মনে হয়নি যে সে কোনও অপারেশন করিয়ে এসেছে। যাইহোক, তবে এখন সব নির্ভর করছে ও কত ভালোভাবে রিহ্যাব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারে তার ওপর।’ তিনি আশা করছেন কুলদীপ এই মাসের মধ্যেই বল হাতে ফিরে আসবেন বলে। পান্ডে বলেন, ‘এই মাসেই তার বোলিং শুরু করা উচিত। আমি বেশ আত্মবিশ্বাসী।’
তিনি আরও জানান, ‘ও আগামী সপ্তাহের মধ্যে এখানে (কানপুরে) আসবে এবং তারপরে আমরা আরও পরিকল্পনা করব। এখনই কুলদীপের জাতীয় দলে প্রত্যাবর্তনের ভবিষ্যদ্বাণী করা কিছুটা তাড়াতাড়ি হতে পারে, কারণ সে প্রথমে বোলিং শুরু করবে। তারপরে অন্যান্য পরীক্ষা এবং প্রক্রিয়াগুলির মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময় একটি বা দুটি অনুশীলন ম্যাচ খেলতে হবে।’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘বোলিং তার জন্য কোনও সমস্যা হবে না, তবে তার পা কেমন বোধ করে এবং রান আপে সে কতটা স্বাচ্ছন্দ্য অনুভব করছে তা গুরুত্বপূর্ণ। সুতরাং, যদি এই সমস্ত দিকগুলি ঠিক থাকে, তবে ইংল্যান্ড ম্যাচের সময় সে জাতীয় দলে ফিরে আসলে আমি খুব বেশি অবাক হব না।’