পুরুষতান্ত্রিক সমাজে কিছুটা দম্ভের সঙ্গেই বলা হয়ে থাকে যে, মর্দ কো কভি দর্দ নেহি হোতা। তবে প্রসঙ্গ যখন দেশের সম্মান, আবেগে গলা বুজলে বোঝা যায় যে, মর্দ কো ভি দর্দ হোতা হ্য়ায়। ভারতের বিরুদ্ধে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালের আগে ম্যাট হেনরিকে দেখে বোঝা গেল, কতটা মানসিক যন্ত্রণায় রয়েছেন তিনি। ভিজে যাওয়া চোখ শারীরিক যন্ত্রণার থেকেও মনের ব্যথাই সামনে নিয়ে আসে বেশি করে।
এবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে আগাগোড়া দুর্দান্ত পারফর্ম্যান্স উপহার দেন ম্যাট হেনরি। নিউজিল্যান্ডকে ফাইনালে তুলতে বল হাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন তিনি। চারটি ইনিংসে বল করে টুর্নামেন্টের সব থেকে বেশি ১০টি উইকেট দখল করেন হেনরি।
করাচিতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে লিগের প্রথম ম্যাচে ২৫ রানে ২টি উইকেট নেন হেনরি। রাওয়ালপিন্ডিতে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে লিগের দ্বিতীয় ম্যাচে তিনি ৫৭ রানে ১টি উইকেট দখল করেন। দুবাইয়ে ভারতের বিরুদ্ধে লিগের তৃতীয় তথা শেষ ম্যাচে ৪২ রানে ৫ উইকেট পকেটে পোরেন হেনরি। শেষে লাহোরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে সেমিফাইনালে ৪৩ রানে ২টি উইকেট সংগ্রহ করেন তিনি।
তবে সেমিফাইনাল ম্যাচের সময়ই কাঁধে চোট পেয়ে বসেন নিউজিল্যান্ডের তারকা পেসার। ফলে ফাইনালের আগে ঘোর দুশ্চিন্তায় পড়ে যায় কিউয়ি শিবির। শেষমেশ অশঙ্কাই সত্যি প্রমাণিত হয়। রবিবার দুবাইয়ে ভারতের বিরুদ্ধে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে মাঠে নামতে পারেননি হেনরি। টসের পরেই নিউজিল্যান্ড দলনায়ক মিচেল স্যান্টনার জানিয়ে দেন যে, চোটের জন্য ফাইনালে মাঠে নামতে পারছেন না হেনরি। সন্দেহ নেই দলের সেরা বোলার ছিটকে যাওয়ায় ফাইনালে নিউজিল্যান্ডের শক্তি অনেকটা কমে যায়।
ফিটনেস টেস্টে ফেল করে কান্নায় ভেঙে পড়েন হেনরি
হেনরি যে চেষ্টা করেননি এমনটা নয় মোটেও। বরং ফাইনালের আগে মাঠে নেমে নিজের ফিটনেস প্রমাণ করতে মরিয়া দেখায় কিউয়ি পেসারকে। দৌড়তে বিশেষ অসুবিধা হয়নি। তবে গোটা কয়েক বল করার পরেই বুঝে যান যে, যন্ত্রণা নিয়ে ম্যাচে বল করা সম্ভব হবে না তাঁর পক্ষে। ফলে হাল ছাড়তে হয় তাঁকে। কার্যত ফিটনেস টেস্টে ফেল করার পরেই মাঠ ছাড়েন ম্যাট হেনরি।
সাজঘরে ফেরার সময় কান্না লুকোতে পারেননি হেনরি। তাঁকে সান্ত্বনা দিতে দেখা যায় নিউজিল্যান্ডের সাপোর্ট স্টাফদের। আসলে দলকে ফাইনালে তুলেও খেতাবি লড়াইয়ে মাঠে নামতে না পারার যন্ত্রণাতেই ভেঙে পড়েন হেনরি। ম্যাট জানতেন যে, তাঁকে ছাড়া ফাইনালে নিউজিল্যান্ড দল দুর্বল হয়ে পড়বে।