আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ট্র্যাভিস হেডকে করা প্রথম বলেই বাজিমাত করলেন বরুণ চক্রবর্তী। আর তারপরই ভারতীয় ক্রিকেটার, দুবাইয়ের মাঠে থাকা ভারতীয় ফ্যান এবং নেটিজেনরা এমনভাবে উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়লেন, যেন মনে হল যে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিই জিতে গিয়েছেন রোহিত শর্মারা। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ল অসংখ্য মিম। প্রত্যেকেরই চোখেমুখেই একরাশ স্বস্তি ধরা পড়েছে। অনেকের বক্তব্য, হেড এখন ভারতের কাছে ‘মেন্টাল ব্লক’ হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। অস্ট্রেলিয়ার বাকি খেলোয়াড়রাও ভালো। কিন্তু বিরাট কোহলি যেমন পাকিস্তানের ত্রাস, তেমনই ভারতের ত্রাস হলেন হেড। তাই তিনি আউট হতেই হাঁফ ছেড়ে বেঁচে গিয়েছেন নেটিজেনরা।
কমপক্ষে ৩ বার একটুর জন্য আউট হননি হেড!
আর হাঁফ ছেড়ে বাঁচারই কথা। গত কয়েক বছরে হেড শুধু ভারতের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াননি, রোহিতদের আতঙ্কের নাম উঠেছেন। তারইমধ্যে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালের প্রথম বলেই হেডের ক্যাচ ফস্কে ফেলেন মহম্মদ শামি। ৩.৫ ওভারে রবীন্দ্র জাদেজার মুখে পড়েও রান-আউট হওয়া থেকে বেঁচে যান। আর তারপর ৪.৪ ওভারে ব্যাটের কাণায় লেগে বল স্টাম্পের একচুল দূর দিয়ে বেরিয়ে যায়।
'মনে হয়ে মুখে দই-চিনি পুুড়ে এসেছেন হেড', বলছিল নেটপাড়া
আর সেইসব দেখে ভারতীয় ফ্যানদের রক্তচাপ বেড়ে যাচ্ছিল। ভয়ে, আতঙ্কে অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় মিম পোস্ট করতে থাকেন। কেউ-কেউ বলতে শুরু করে দেন, ‘আজ মনে হয়ে মুখে দই-চিনি পুুড়ে এসেছেন হেড।’ কেউ-কেউ তো আবার হেডের উইকেট চেয়ে যজ্ঞের ছবি পোস্ট করতে শুরু করে দেন। মাঠে রোহিতদেরও কার্যত সেই অবস্থা হয়েছিল।
বিরাট ও রোহিতদের বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস
তারইমধ্যে নবম ওভারে কলকাতা নাইট রাইডার্সের (কেকেআর) তারকাকে বোলিংয়ে নিয়ে আসেন রোহিত। প্রথম বলটা করেন স্টিভ স্মিথকে। দ্বিতীয় বলে স্ট্রাইকে আসেন হেড। বরুণের মাথার উপর দিয়ে বলটা তুলে দেন অস্ট্রেলিয়ার তারকা। ব্যাটের নীচের দিকে অংশে লাগে বলটা। লং অফের বাঁ-দিকে দৌড়ে এসে ক্যাচটা ধরে নেন শুভমন গিল। আর তারপরই উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন ভারতীয় ক্রিকেটার ও ভারতীয় ফ্যানরা। বিরাট, রোহিতের উচ্ছ্বাস তো দেখার মতো ছিল।
বরুণকে দিয়ে ‘হেডাস্ত্র’-কে দমনের পরামর্শ দিয়েছিলেন সৌরভ
আর রোহিত যে বরুণকে দিয়ে ‘হেডাস্ত্র’-কে দমন করলেন, সেই টোটকাটা দিয়েছিলেন ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক তথা ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) প্রাক্তন সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। সেমিফাইনালের আগে সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকায় সৌরভ জানিয়েছিলেন যে হেডের জন্য রোহিত ব্যবহার করতে পারেন বরুণকে। কারণ কেকেআর তারকাকে বেশিবার খেলেননি হেড। আর নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে পাঁচ উইকেট নেওয়ার পরে বরুণের আত্মবিশ্বাসও তুঙ্গে আছে।
আরও পড়ুন: IND vs AUS: থাপ্পড়ে ভয় পাই না, নক-আউটে হলুদ জার্সিকে ভয় লাগে! অজিদের হারানো রায়নাও আতঙ্কে
সৌরভের সেই পরামর্শ রোহিত পেয়েছিলেন কিনা, তা জানা নেই। সৌরভ নিজে রোহিতকে কোনও টিপস দিয়েছিলেন কিনা, সেটাও তাঁরা ছাড়া সম্ভবত আর কেউ জানেন না। কিন্তু যাই হোক না কেন, ৩৯ রানেই (৩৩ বল) হেডকে ফিরিয়ে দেওয়ার পরে ভারতীয়রা হাঁফ ছেড়ে বেঁচে গিয়েছেন। প্রবল উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েছেন তাঁরা। ছড়িয়ে পড়েছে অসংখ্য মিম।