বেঙ্গালুরুর সফ্টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার অতুল সুভাষের আত্মহত্যা গোটা দেশকে কাঁপিয়ে দিয়েছিল। সেই ঘটনায় আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার হয়েছেন অতুলের স্ত্রী নিকিতা সিংহানিয়া, শাশুড়ি এবং নিকিতার ভাই। এই অবস্থায় সন্তানকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে কোনওভাবেই যাতে নিকিতা জামিন পেতে না পারেন সেই দাবি জানিয়েছেন অতুলের আইনজীবী আকাশ জিন্দাল। তিনি বলেছেন বিচার প্রক্রিয়া এড়ানোর জন্য এবং জামিনের জন্য সন্তানকে নিকিতা ব্যবহার করতে পারেন। সেই আশঙ্কা আগেই করেছিলেন অতুল। সেই আশঙ্কা প্রকাশ করে আইনজীবী জানান, জামিনের জন্য সন্তানকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা উচিত নয়।
আরও পড়ুন: ‘অতুলের ব্যাপারটা একটু দেখুন,’ রাহুল গান্ধীর কনভয়ের পাশে উঠল আওয়াজ, তারপর যা হল…
আদালতে জামিনের আবেদন জানিয়েছেন নিকিতা। আগামী ৪ জানুয়ারি সেই আবেদনের পরবর্তী শুনানি হওয়ার কথা। অতুলের আইনজীবী সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, অভিযুক্ত স্ত্রীকে জামিন পেতে সন্তানকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে দেওয়া উচিত নয়। আগামী ৪ জানুয়ারি বেঙ্গালুরু আদালতে নিকিতার জামিনের মামলার শুনানি হবে। সোমবার জামিন আবেদনটি তালিকাভুক্ত করা হয়। অতুলের আইনজীবী আকাশ জিন্দাল সোমবার বলেন, ‘নিকিতা ও তার পরিবারের জামিনের আবেদন আজ তালিকাভুক্ত হয়েছে। অতুল তার আত্মহত্যার ভিডিয়োতে উল্লেখ করেছিলেন যে বিচারক প্রক্রিয়া এড়াতে শিশুকে অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করা উচিত নয়। আর এটাই হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘শিশুর অভিযুক্ত মা এবং পুরো পরিবারকে আটক করা হয়েছে। তাই শিশুটির যত্ন নেওয়ার কেউ নেই। এই যুক্তি দেখিয়ে জামিনের অবদান জানাতে পারেন নিকিতার আইনজীবী। তবে পলাতক অবস্থায় নিকিতাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। আদালত থেকে জামিন পেলে তিনি শিশুকে নিয়ে আবারও পালানোর চেষ্টা করবেন।’ বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন অতুলের আইনজীবী।
এদিকে, অতুলের বাবা পবন কুমার মোদীও বলেছিলেন যে তাঁরা অতুলের সন্তানের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত। আদালত যদি অতুলের স্ত্রীকে জামিন দেয়, তাহলে তিনি শিশুটির ওপর হামলা করে তার জীবনকে বিপদে ফেলতে পারে। তিনি বলেন, ‘যদি নিকিতা আমার ছেলেকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করতে পারে, তাহলে সে শিশুর সঙ্গেও তা করতে পারে।’
তিনি আরও অভিযোগ করেন, যে তাঁর নাতিকে তারা এটিএম হিসেবে ব্যবহার করেছিল। তার দেখাশোনার নামে টাকা হাতিয়ে নিত। তিনি বলেন, ‘৪০ হাজার টাকা দাবীর মামলায় আমরা হাইকোর্টে গিয়েছিলাম। তিনি ৮০ হাজার টাকার আবেদন করেন। এরপরও সে টাকা চাইতে থাকে। এমন পরিস্থিতিতে আমরা শিশুটির হেফাজতের জন্য সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছি, যাতে সে আমাদের কাছে নিরাপদ থাকে।’
উল্লেখ্য, গত ৯ ডিসেম্বর আত্মহত্যা করেন অতুল। তিনি প্রায় দেড় ঘণ্টার একটি ভিডিয়ো এবং ২৪ পৃষ্ঠার একটি সুইসাইড নোটও রেখে যান। তাতে তিনি স্ত্রী নিকিতা, শাশুড়ি নিশা সিংহানিয়া, স্ত্রীর ভাই ও আরেক আত্মীয়ের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলেছিলেন। পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (বিএনএস)-এর ১০৮ এবং ৩ (৫) ধারার অধীনে একটি এফআইআর নথিভুক্ত করেছে।