পাকিস্তানে অজ্ঞাত পরিচয় বন্দুকবজের হামলায় বিগত দিনে এের পর এক ভারত বিরোধী সন্ত্রাসী নেতা খতম হয়েছে। আর কয়েকদিন আগে ফের এক ভারত বিরোধী জঙ্গিকে খতম করা হল পারিস্তানের মাটিতে। রিপোর্ট অনুযায়ী, জইশ-ই-মহম্মদ প্রধান মওলানা মাসুদ আজহারের আত্মীয় কারি এজাজ আবিদকে হত্যা করা হয়েছে পেশাওয়ারের। খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের পেশাওয়ারের পিসখারা এলাকায় মসজিদ থেকে বের হওয়ার সময় হামলাকারীরা আবিদকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। হামলায় কারি এজাজের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত কারি শহিদও গুরুতর জখম হয়েছে। (আরও পড়ুন: একজন, দু'জন নয়… ৫ বাংলাদেশি সেনা কর্তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ ইউনুসের? কোন ছক কষছে ঢাকা?)
পাক পুলিশ জানিয়েছে, কারি এজাজ আহলে সুন্নত ওয়াল জামাত নামে একটি সংগঠনের সদস্য ছিল। সে খতম-এ-নবুওয়াত নামক একটি আন্তর্জাতিক সংগঠনের প্রাদেশিক নেতাও ছিল। অভিযোগ, সে তার সংগঠনের মাধ্যমে জইশ-ই-মহম্মদের জন্য সন্ত্রাসীদের নিয়োগ করত। কারি এজাজ ভারতের শত্রু মওলানা মাসুদ আজহারের আত্মীয় ছিল এবং দেওবন্দী মতাদর্শের সাথে যুক্ত ছিল। এর আগে বেশ কয়েকবার মাসুদ আজহারের সাথে একই মঞ্চে দেখা গিয়েছিস তাকে।
জানা যায়, সন্ত্রাসী নেতা মাসুদ আজহারের পরিকল্পনা অনুযায়ী নিজের সংগঠনকে কাজে লাগাত কারি। এজাজ প্রথমে তার সংগঠনের সমাবেশে যুবকদের ডাকত। তারপর ধীরে ধীরে সে তাদের ব্রেনওয়াশ করত এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে তাদের জড়িয়ে ফেলত। সে জইশ-ই-মহম্মদের ক্যাম্পে যুবকদের অস্ত্র ও বিস্ফোরক প্রশিক্ষণের জন্য পাঠাত।
প্রসঙ্গত, এই বছর এখনও পর্যন্ত সন্ত্রাসী সংগঠনের সাথে যুক্ত প্রায় এক ডজন ব্যক্তিকে একইভাবে হত্যা করা হয়েছে পাকিস্তানে। পুলিশের মতে, কারি এজাজ হত্যার সাথে জড়িত কোনও আক্রমণকারীকে এখনও গ্রেফতার করা যায়নি। পাকিস্তানি নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলিরও হাত খালি। তারাও আক্রমণকারীদের কাউকে শনাক্ত করতে পারেনি। এর কারণে দেওবন্দী মতাদর্শের সাথে যুক্ত ধর্মীয় সংগঠনগুলির মধ্যে পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করছে।
এর আগে ৩০ মার্চ সন্ধ্যায় কাচির লন্ধি একালায় খুন করা হয়েছিল আহলে সুন্নত ওয়াল জামাতের স্থানীয় নেতা আবদুল রহমানকে। সে লস্করের জন্যে টাকা জোগাড় করত বলে অভিযোগ। হাফিজ ঘনিষ্ঠ হিসেবেও পরিচিত ছিল এই আবদুল। তার আগে ২০২৪ সালের মে মাসেও আহলে সুন্নত ওয়াল জামাতের এক নেতাকে করাচিতে খুন করা হয়েছিল। সেই সময় নিষিদ্ধ দলটির তরফ থেকে অভিযোগ করা হয়েছিল, 'বিদেশি এজেন্টরা' এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। সেই ঘটনায় মৃত নেতার নাম ছিল ফয়াজ খান। তাকে অফিসে ঢুকে গুলি করে হত্যা করেছিল অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিরা। ফয়াজের আগে ২০২৪ সালের মাঝামাঝি সময় করাচিতে আরও দুই আহলে সুন্নত ওয়াল জামাত নেতাকে খুন করা হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছিল দলটি।