'কেন গোটা বিশ্ব পাকিস্তানের সঙ্গে রয়েছে, ভারতের পাশে নেই?' নয়াদিল্লির কূটনৈতিক অভিযানের মধ্যে বিস্ফোরক প্রশ্ন তুলেছেন কংগ্রেস নেত্রী শামা মহম্মদ।জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁও-এ জঙ্গি হামলার পর ভারতের পাল্টা সামরিক পদক্ষেপ ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর প্রেক্ষিতে এবার আন্তর্জাতিক স্তরে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের অবস্থান তুলে ধরেছেন সাত সদস্যের সর্বদলীয় প্রতিনিধি দল। এই দলগুলিতে রয়েছেন দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মোট ৫৯ জন প্রতিনিধি, যার মধ্যে ৩১ জন এনডিএ জোটভুক্ত এবং বাকি ২৮ জন বিরোধী দলের সদস্য। প্রতিনিধি দলগুলি ৩২টি দেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদর দফতরে ব্রাসেলস সফর করছেন। (আরও পড়ুন: শর্মিষ্ঠা কাণ্ডে সরব পবন, 'গন্দা ধর্ম' মন্তব্যের জন্য চাইলেন মমতার গ্রেফতারি)
আরও পড়ুন: CRPF জওয়ানের গুপ্তচরবৃত্তিকাণ্ডে কলকাতায় ৩ জায়গায় হানা, ২ জনকে তলব NIA-র
এই আবহে সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে কংগ্রেস নেত্রী বলেন, 'মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বারবার বলেছেন... ১১ বার... এর ফলে যুদ্ধবিরতি হয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসন স্পষ্ট বলেছে যে আমরা যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করতে ভারত ও পাকিস্তানের উপর বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছি। তিনি ভারত ও যুদ্ধবিরতিকে একই ঝুড়িতে ফেলেছেন। তারা সন্ত্রাসবাদের অপরাধী, আর আমরা তাদের শিকার। ২৬/১১-এর পর, পুরো বিশ্ব আমাদের সঙ্গে ছিল, এখন কে আমাদের সঙ্গে আছে? পাকিস্তান কেন চুক্তি এবং সমঝোতা স্মারক (মউ) পাচ্ছে?...কেন সবাই পাকিস্তানের সঙ্গে, ভারতের সঙ্গে নয়?' (আরও পড়ুন: পাকিস্তানের বন্ধুরা আশা করে না যে আমরা ভিক্ষার বাটি নিয়ে তাদের কাছে যাব: শেহবাজ)
আরও পড়ুন-করোনার ভ্রূকুটি দেশজুড়ে! সক্রিয় রোগী ৩০০০ পার, বাংলায় পরিস্থিতি কেমন?
এদিকে, শনিবারই সিঙ্গাপুরে শাংগ্রি-লা ডায়ালগে অংশ নেওয়ার সময় এক সাক্ষাৎকারে ভারতের চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল অনিল চৌহান প্রথমবার নিশ্চিত করেছেন যে, ৭ মে পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘর্ষে ভারতীয় বায়ুসেনা কিছু যুদ্ধবিমান খোয়া গেছে। তিনি বলেন, 'বিমান ধ্বংসের তথ্যটি গুরুত্বপূর্ণই নয়। কেন তা ধ্বংস হল এবং তার পর আমরা কী করলাম, আমাদের কাছে সেটাই গুরুত্বপূর্ণ।' তিনি পাকিস্তানের সেই দাবিকে ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা’ বলে উড়িয়ে দেন যে, তারা ছয়টি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ধ্বংস করেছে, যার মধ্যে তিনটি রাফাল বিমান ছিল।একইসঙ্গে তিনি বলেন, 'যেটা ইতিবাচক দিক তা হল আমরা আমাদের কৌশলগত ভুলটা তখনই বুঝেছি এবং ভুল শুধরে দুদিন পর আবার সেই কৌশল প্রয়োগ করেছি। আমরা সমস্ত যুদ্ধবিমান উড়িয়েছি এবং দূরের লক্ষ্যবস্তুকে নিশানা করে তা গুঁড়িয়ে দিয়েছি।' (আরও পড়ুন: নয়া বেতন কমিশন নিয়ে সরকারি কর্মীদের ওপর শঙ্কার মেঘ, সঙ্গে আছে স্বস্তির বাতাস)
অপারেশন সিঁদুর
গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁও-এ ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় ২৬ জন নিরীহ মানুষের মৃত্যু হয়। এরপর ৭ মে ভারত চালায় কৌশলগত প্রতিরক্ষা অভিযান ‘অপারেশন সিঁদুর’, যেখানে পাকিস্তান ও পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে একাধিক সন্ত্রাসী ঘাঁটি লক্ষ্য করে আঘাত হানা হয়।পাকিস্তান এর পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানাতে চাইলেও ভারতের আধুনিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তা রুখে দেয়। ১০ মে, দু’দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা হয়। এরপরে অপারেশন সিঁদুর-পরবর্তী পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের অবস্থান তুলে ধরতে এবং সিন্ধু জলচুক্তি স্থগিতের সিদ্ধান্তকে আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাখ্যা করতে, ভারত সরকার সাতটি রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক প্রতিনিধি দলকে বিশ্বের ৩২টি দেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নে পাঠায়।