মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, দিঘার জগন্নাথধাম ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক পর্যটন কেন্দ্র হয়ে উঠবে। এবার যেন সেই ভবিষ্যদ্বাণী মিলে গেল। কারণ সকল ধর্ম, বর্ণের মানুষ যেমন এখানে আসছেন তেমনই জগন্নাথদেবের পদতলে এসে হাজির হলেন বিদেশি ভক্তরা। কারও বাড়ি রাশিয়া, কারও ইউক্রেন, বেলারুশ, লাটভিয়া অথবা লিথুয়ানিয়া। সকলেই এসেছেন দিঘার জগন্নাথধামে জগন্নাথ দর্শন করতে। জগন্নাথ মন্দির পরিদর্শন করে আবেগে ভাসলেন বিদেশ থেকে আসা ২০ জনের একটি প্রতিনিধি দল। জগন্নাথ মন্দির দর্শন করে তাঁরা গোটা মন্দির চত্বর ঘুরে দেখেন। জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার বিগ্রহ দর্শন করে তাঁরা আনন্দিত।
এদিকে দিঘার জগন্নাথ মন্দির দর্শন করে এবং জগন্নাথদেবকে পুজো দিয়ে ২০ জন বিদেশি ভক্তদের চোখে জল। কেউ প্রভু জগন্নাথের নামগানে পর্যন্ত মাতলেন। আজ, রবিবার ছুটির দিনে জমজমাট দিঘা। তার উপর বাড়তি আকর্ষণ জগন্নাথধাম। এখন স্কুলে গরমের ছুটি পড়ে গিএছে। তাই ভিড়ের ঢেউ আছড়ে পড়েছে দিঘায়। আগেও দিঘার জগন্নাথ মন্দিরে বিদেশি ভক্তরা এসেছেন। কিন্তু একসঙ্গে এতজন বিদেশি ভক্তদের মন্দির দর্শন এই প্রথম। ইউক্রেন থেকে এসে ভাদিম ক্রিস্তভ বলেন, ‘আজ জীবনের অন্যতম মুহূর্ত। মন্দিরে এসে জগন্নাথদেবের দর্শন পেলাম। এটি প্রভু জগন্নাথদেবের করুণা। এই অপূর্ব সুযোগ করে দেওয়ার জন্য বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে অন্তর থেকে ধন্যবাদ জানাই।’
আরও পড়ুন: তৃণমূল কংগ্রেস নেতা–কর্মীদের উদ্দেশে সার্কুলার জারি, ভোটারদের বাড়িতে কারা যাচ্ছে?
অন্যদিকে একঝাঁক বিদেশি ভক্তদের দেখে সেলফিতেও মেতে ওঠেন বহু পর্যটক। রোজ এখানে ভিড় রেকর্ড ভাঙছে। স্থানীয় মানুষজনের কর্মসংস্থান হয়েছে এখানে। তার উপর বর্ষা আসছে। সুতরাং পরিবেশ এখন থেকেই অত্যন্ত মনোরম। এই কারণে ভিড় আরও বাড়ছে। বিদেশি ভক্তরা জগন্নাথের প্রসাদ গ্রহণ করেন। প্রবেশ করেন মূল মন্দিরে। আর কপাল ঠুকে মন্দিরে পা রাখেন। তারপর সরাসরি চলে যান গর্ভগৃহে। খোল–খরতালে নামগানে এক আধ্যাত্মিক বাতাবরণ তৈরি হয়। জগন্নাথ মন্দিরের দায়িত্বে থাকা ইসকন সহ–সভাপতি রাধারমন দাসের বক্তব্য, ‘এই মন্দির শুধুমাত্র একটি স্থাপনা নয়। এটি প্রভু জগন্নাথের করুণা ও তাঁর সর্বজনীন আহ্বানের প্রতীক।’
এছাড়া এই জগন্নাথ মন্দির দিঘার অর্থনীতির উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। কারণ এখানে প্রচুর তীর্থযাত্রী থেকে শুরু করে বিদেশি পর্যটকরা আসছেন। এটি দিঘাকে এক আধ্যাত্মিক এবং অর্থনৈতিক কেন্দ্রে পরিণত করেছে। এদিন এখানে আসা লিথুয়ানিয়ার বাসিন্দা মিস ভায়োলেটা জিগোর কথায়, ‘জগন্নাথদেবের দর্শন পেয়ে আমি গভীর আত্মিক সংযোগ অনুভব করতে পেরেছি। অনেকেই বহুদিন ধরে জগন্নাথদেবের দর্শনের অপেক্ষায় ছিলেন। বিশেষ করে বিদেশি ভক্তরা। এই অসাধারণ দর্শন এবং যে অভিজ্ঞতা হল তার জন্য আমরা বাংলার সরকারের কাছে কৃতজ্ঞ।’