কত দাম হবে একটা চিপসের প্যাকেটের? ৫ বা ১০ টাকা? খুব বেশি হলে ২০ টাকা। সেই চিপসের প্যাকেটের জন্য এক নাবালককে মারধোর আর উঠবোস করাতে পিছপা হল না দোকানদার। শুধু দোকানদার নন, শুভঙ্কর পেশায় সিভিক ভলান্টিয়ারও। ফলে ‘পুলিশ’গিরি করতে হাত পা কাঁপেনি। অভিযোগ উঠছে, ওই সিভিক নাকি বাইকে তাড়া করে নাবালককে ধরেন রাস্তার মধ্যে। বাজারের মধ্যে তাকে উঠবোস করতে বাধ্য করা হয়। মারধোর করা হয়। পরে মায়ের কাছেও বকা খায় সে। আর তার পরেই বাড়ি ফিরে বিষ খায় অপমানে লজ্জায়। উদ্ধার হয়েছে তার লেখা একটি ছোট নোট — ‘মা, আমি … চুরি করিনি!’
রাস্তার মধ্যে মারধোর, উঠবোস
পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ার গোঁসাইবেড় এলাকার বাসিন্দা নিহত স্কুল পড়ুয়া কৃষ্ণেন্দু দাস। সংবাদ প্রতিদিনের রিপোর্ট, রবিবার সে চিপস কিনতে বাজারে গিয়েছিল। কিন্তু সেদিন ওই দোকানে কোনও চিপস ছিল না। দোকানদার দোকানের ভিতরে ছিলেন। অনেক ডাকাডাকি করেও তাঁর সাড়া পাওয়া যায়নি। তখন নিচে পড়ে থাকা একটি চিপসের প্যাকেট দেখতে পায় সে। সেটি কুড়িয়ে নিয়ে বাড়ি ফিরতে থাকে। ইতিমধ্যে ওই দোকানদার তথা সিভিক ভলান্টিয়ার বাইক নিয়ে বেরিয়ে ধাওয়া করে সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র কৃষ্ণেন্দুকে। এরপর বাজারের মধ্যে তাকে মারধোর আর উঠবোস করানো হয়।
আরও পড়ুন - বিছানায় কিং কোবরা! না নড়ে শান্তভাবে ভিডিয়ো করলেন ব্যক্তি, তারপরেই ঘটে গেল ভয়ঙ্কর ঘটনা
টাকা দেওয়ার পরেও মার
কৃষ্ণেন্দু সে সময় তাঁকে টাকা দিয়ে দেয়। কিন্তু তারপরেও চলে মারধোর ও নীতিপুলিশি। অবশেষে সেখানে উপস্থিত হয় কৃষ্ণেন্দুর মা। তিনি পুরো ঘটনা শুনে ছেলেকে বকাঝকা করেন। তারপর বাড়ি ফিরিয়ে আনেন। কিন্তু ততক্ষণে অপমানে লজ্জায় কুঁকড়ে গিয়েছে ওই নাবালক। সে নিজের ঘরে চলে যায়। কিছুক্ষণ পর তার অচেতন দেহ উদ্ধার হয়।
আরও পড়ুন - থামছে না চুরি, এবার চরম সিদ্ধান্ত নিলেন প্রবীণ সাহিত্যিক সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়, কী বললেন ভিডিয়োতে?
খাতায় লেখা শেষ নোট
পরিবারের দাবি, ঘরে থাকা কীটনাশক খেয়েছে কৃষ্ণেন্দু। তমলুক হাসপাতালে নিয়ে গেলেও তাঁকে আর বাঁচানো যায়নি। ছেলের মৃত্যুতে গোটা পরিবার শোকাহত। কৃষ্ণেন্দু তার নোটে লিখে গিয়েছিল ‘মা আমি বলে যাচ্ছি যে আমি কুড়কুড়াটি রাস্তার ধারে কুড়িয়ে পেয়েছিলাম, চুরি করিনি।’
কী বলছেন ওই সিভিক পুলিশ?
এই ঘটনায় সংবাদমাধ্যমের তরফে সিসিটিভি ফুটেজ চাওয়া হয় শুভঙ্করের কাছে। কিন্তু তিনি সেসব দেখাতে রাজি হননি। এই নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি তিনি। কিন্তু আইনের লোক হয়েও কীভাবে আইন হাতে তুলে নিলেন শুভঙ্কর? ইতিমধ্যে ওর শাস্তির দাবি তুলেছে এলাকাবাসীরা।
(সুইসাইড প্রিভেনশনস ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশন: 8047096367
লাইফলাইন ফাউন্ডেশন: 9088030303
আইকল: 9152987821
ওয়ানলাইফ ফাউন্ডেশন: 7893078930
স্যামারিটানস: 8422984528
শুশ্রূষা কাউন্সেলিং: 9422627571
মন টকস: 8686139139
স্নেহ ফাউন্ডেশন: +9144-24640050)