কাজের তাগিদে ইউক্রেনে গিয়েছিলেন শান্তিপুরের ছেলে সুমন অধিকারী। শেষ পর্যন্ত প্রাণ হাতে নিয়ে বাড়ি ফিরে এসেছেন ঠিকই। কিন্তু চিন্তা হচ্ছে সংসার কীভাবে চলবে। বাড়ির ছেলেকে ফিরে পেলেও দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন সুমনের পরিবারের সদস্যরা। গতকাল যুদ্ধ বিধ্বস্ত ইউক্রেন থেকে দিল্লি হয়ে বাড়িতে ফিরেছেন শান্তিপুরের কাশ্যপ পাড়ার যুবক সুমন অধিকারী। যুদ্ধের সেই রোমহর্ষক স্মৃতি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে শান্তিপুরের যুবক জানান, ‘২০–২৫ মিনিট ধরে বোমা বর্ষণ হয়েছিল। তার মধ্যে থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছিলাম। প্রথমে ভেবেছিলাম, পরিবারের লোকজনদের দেখতে পাব কিনা। কিন্তু যাই হোক ভগবানের আশির্বাদে বেরিয়ে আসতে পেরেছি। আমার সঙ্গে দুই বন্ধুও ছিল। অমিত কুমার বিশ্বাস ও সমীর বিশ্বাস। তাঁরা আমার সঙ্গেই ছিল। তাঁরাও আসতে পেরেছে।’ একইসঙ্গে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের যৌথ উদ্যোগে যেভাবে তিনি বাড়িতে ফিরতে পেরেছেন, সেবিষয়েও উভয় সরকারকেই ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘পোল্যান্ড সীমান্তে চলে আসার পর থেকে দিল্লি সরকারের তরফে চিকিৎসা, খাবার দাওয়ারের ব্যবস্থা করা হয়। এরপর দিল্লিতে চলে আসার পর রাজ্য সরকারও আমাদের সাহায্য করেছে। বিডিও অফিস থেকেও তাঁকে ফোন করা হয়েছিল। বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার জন্য গাড়িও পাঠানো হয়েছিল।’ নিজের পেশার কথা বলতে গিয়ে সুমন জানান, ‘আমি ওখানে একটি কুরিয়ার কোম্পানি কাজ করতে গিয়েছিলাম। অন্তরাষ্ট্রীয় ব্যাপার। এখানে তো আমাদের কোনও হাত নেই। যুদ্ধ যে লাগবে, সেকথা প্রথমে বুঝতে পারিনি। জন্মের পর থেকে প্রথম কার্গিল যুদ্ধ দেখেছিলাম। গত ২৪ তারিখে যখন শুয়েছিলাম, তখন শুনতে পাই ফাইটার জেটের আওয়াজ। লোকাল চ্যানেল চালিয়ে বুঝতে পারি, রাশিয়া আক্রমণ করেছে। তখন আর দেরি করিনি। দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করি। ২৪ তারিখে বেরিয়েছিলাম। ১ তারিখ পোল্যান্ড সীমান্তে পৌঁছই। পোল্যান্ড সীমান্ত পর্যন্ত পৌঁছতে পারব কিনা, সেই নিশ্চয়তা ছিল না।’ তবে যে কাজের জন্য তাঁর ইউক্রেনে যাওয়া সেই কাজ না থাকায়, কীভাবে সংসার চলবে সেই চিন্তা আরো কুরে কুরে খাচ্ছে সুমনকে।