পুলিশকে লক্ষ্য করে তৃণমূল নেতাদের লাগাতার আক্রমণ এবং বিস্ফোরক মন্তব্য অব্যাহত। বোলপুরের আইসিকে উদ্দেশ্য করে অশালীন মন্তব্য করে বিতর্কের কেন্দ্রে উঠে এসেছেন তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল। তার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার প্রকাশ্যে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিলেন মুর্শিদাবাদের ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। দলীয় অনুষ্ঠানের মঞ্চে দাঁড়িয়ে প্রকাশ্যে উর্দিধারীদের কার্যত হুমকি দিতে দেখা গেল তাঁকে। এতেই রাজনীতির পারদ চড়েছে আরও এক ধাপ।
আরও পড়ুন: অনুব্রত খুব অসুস্থ, বেড রেস্টে রয়েছেন, পুলিশকে জানিয়ে গেলেন আইনজীবী
রবিবার ভরতপুরে তৃণমূলের সভায় মঞ্চ থেকে হুমায়ুন কবীর বলেন, লালগোলা, বড়ঞা, সামশেরগঞ্জ ও ভরতপুর থানায় কিছু ঘটনা ঘটে, তাতে সাধারণ মানুষকে হয়রানির শিকার হতে হয়। হুমায়ুন এরপর হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, তিনি বিরোধী থাকলে শায়েস্তা করতে ২৪ ঘণ্টা সময় লাগত না। কিন্তু এখন সরকারে থাকায় হাতে-পা বাঁধা অবস্থায় রয়েছে।
এমন মন্তব্য সামনে আসতেই রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে বিতর্কের ঝড়। বিরোধীদের দাবি, সরকারে থেকেও পুলিশকে এভাবে প্রকাশ্য হুমকি দেওয়া কি এক জন জনপ্রতিনিধির কাজ?
সম্প্রতি এমনই ঘটনার জেরে বিতর্কে জড়িয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। সদ্য ভাইরাল হওয়া একটি অডিয়ো ক্লিপে (সত্যতা যাচাই করেনি হিন্দুস্থান টাইমস বাংলা) শোনা যায়, বোলপুর থানার আইসিকে অকথ্য ভাষায় আক্রমণ করছেন প্রাক্তন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি। ওই ঘটনা সামনে আসতেই প্রবল চাপ আসে দলের অন্দর থেকেও। তৃণমূলের সর্বভারতীয় নেতৃত্ব তাঁকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে বলেন। অনুব্রত যদিও ক্ষমা চান, তবে এখানেই থেমে থাকেনি বিতর্ক।
পুলিশি তলব এড়িয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে অনুব্রতের বিরুদ্ধে। শনিবার এবং রবিবার—পরপর দু’দিন তাঁকে থানায় হাজিরা দিতে বলা হলেও, তাঁর আইনজীবীরা বারবার দাবি করেন তিনি অসুস্থ। চিকিৎসকদের পরামর্শে বেড রেস্ট-এ রয়েছেন। রাজনৈতিক মহলের মতে, বারবার পুলিশি তলব এড়িয়ে যাওয়া এবং সেই সঙ্গে দলের ভেতরে চাপ, তাঁকে কোন পথে নিয়ে যাবে, তা নিয়ে এখনই জল্পনা তুঙ্গে।
এই আবহেই প্রকাশ্যে পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানিয়ে নতুন করে দলকে অস্বস্তিতে ফেললেন হুমায়ুন কবীর। তৃণমূল নেতাদের একের পর এক এমন আচরণ, রাজ্য রাজনীতিতে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। বিরোধীদের কটাক্ষ, এই ধরনের মন্তব্য শুধু দায়িত্বজ্ঞানহীন নয়, পুলিশি ব্যবস্থার উপর হুমকি । তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব যদিও এখনও পর্যন্ত হুমায়ুন কবীরের মন্তব্য নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি। তবে অনুব্রতের ঘটনার পরে পার্টির শৃঙ্খলারক্ষার তৎপরতা চোখে পড়ায়, এবারও বিধায়কের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়, তা দেখার অপেক্ষায় রাজনৈতিক মহল।