চাকরিহারা 'যোগ্য' শিক্ষকদের আন্দোলনে কি বড়সড় ফাটল ধরে গেল? আজ (সোমবার - ১৯ মে,২০২৫) সাংবাদিক সম্মেলন করে অন্তত এমনই দাবি তুলে ধরলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তিনি জানান, চাকরিহারা শিক্ষকদেরই একটি অংশ আলাদা মঞ্চ তৈরি করেছেন। যার নাম - ওয়েস্ট বেঙ্গল আনটেন্টেড টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন (ডাব্লিউবিইউটিএ)। সেই সংগঠনের সদস্য সংখ্যা প্রায় আড়াই হাজার। তাঁদের তরফে চিঠি দিয়ে শিক্ষামন্ত্রীকে জানানো হয়েছে, তাঁরা এই লড়াইয়ে রাজ্য সরকারের পাশেই রয়েছেন!
সংশ্লিষ্ট সংগঠনের তরফে ওই চিঠিটি লিখেছেন মৃণ্ময় মণ্ডল। একই চিঠি পাঠানো হয়েছে - মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ এবং স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)-এর চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদারকেও। চিঠিতে রাজ্য সরকারকে জানানো হয়েছে, চাকরিহারা শিক্ষকদের নিয়োগ ফেরাতে রাজ্য সরকার যেসমস্ত আইনি পদক্ষেপ করবে, তাতে ওই সংগঠন প্রশাসন তথা সরকারের পাশে থাকবে।
লক্ষ্যণীয় বিষয় হল, গত বৃহস্পতিবার যখন বিকাশ ভবনের সামনে কার্যত রণক্ষেত্র তৈরি হয়, সেই সময় এই মৃণ্ময় মণ্ডলও সেখানেই ছিলেন। তিনি সংবাদমাধ্যমকে চিঠি প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, 'আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে, সুপ্রিম কোর্টে যে আইনি লড়াই চলছে, সেটা যাতে আমরা জিততে পারি। এর জন্য যে মঞ্চটা ছিল, তার সঙ্গে কিছু মতানৈক্য রয়েছে। আমাদের আলাদা মঞ্চ তৈরি হয়েছে। সরকারকে স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়েছে। সরকার কী কী ভূমিকা পালন করছে, তা বলতেই হবে। সরকারের প্রতি আমরা তো আস্থা রাখব।'
যদিও শিক্ষকদের সংশ্লিষ্ট দুই সংগঠনের মধ্যে এই মতানৈক্যের কথা মানতে রাজি হননি যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চের নেতা চিন্ময় মণ্ডল। তিনি বলেন, 'আন্দোলন নিয়ে ওই সংগঠনের (মৃণ্ময়দের সংগঠন) সঙ্গে আমাদের কোনও মতানৈক্য নেই। কাউন্সেলিং নিয়ে একটা মতানৈক্য ছিল। আমরাও চাই সরকার আমাদের বাঁচাক। কারণ সরকার আমাদের চাকরিটা দিয়েছে। আবার তাদের দুর্নীতির কারণেই আমরা আজ রাস্তায়। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে আমরাও সরকারকে সমর্থন করব যদি তাদের পদক্ষেপে আমাদের চাকরিটা ফিরে আসে।'
অন্যদিকে, শিক্ষামন্ত্রী এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, ‘শিক্ষা দফতর অনেক বার জানতে চেয়েছে যে, ওই আন্দোলনকারীদের কোনও বক্তব্য আছে কি না। তাঁরা কিছু লিখিত দিতে চান কি না। কিন্তু তাঁরা কোনও যোগাযোগ করেননি।... (তবে) আমরা আন্দোলনরত শিক্ষকদের পাশে রয়েছি। মুখ্যমন্ত্রী নেতাজি ইন্ডোরে তাঁদের সদর্থক বার্তা দিয়েছেন। আমাদের এখন একটাই বার্তা দেওয়ার আছে, ওঁরা আবার স্কুলে যান এবং রিভিউ পিটিশনে আমাদের সাহায্য করুন।’