চাকরি ফিরিয়ে দিতে হবে। এই দাবিতে বিকাশ ভবনের সামনে বৃহস্পতিবার থেকে টানা অবস্থান চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষকরা। সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর ও সরকারি কর্মচারীদের কাজে বাধা দেওয়া–সহ নানা অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে আন্দোলনরত চাকরিহারা শিক্ষক–শিক্ষিকাদের বিরুদ্ধে। এমনকী এইসব অভিযোগে পাঁচ শিক্ষককে ডেকে পাঠিয়েছে বিধাননগর নর্থ থানা। অবস্থানের জেরে নানা সমস্যা হচ্ছে বলে স্থানীয়দের একাংশের বলেও কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই আবহে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর বার্তা দিলেন।
আজ, সোমবার চাকরিহারাদের বার্তা দিলেন ব্রাত্য বসু। টিটাগড়ে দলীয় কার্যালয়ে এসে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানান, কোন দাবি নিয়ে এত কিছু সেটাই জানেন না। লিখিতভাবে কোনও কিছু তাঁদের কাছে আসেনি। আর শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য, চাকরিহারাদের যাঁরা অবস্থানে বসেছেন, তাঁরা অচলাবস্থার জন্যই সেখানে বসে রয়েছেন। যা একেবারেই কাঙ্ক্ষিত নয়। এই গোটা বিষয়ে ব্রাত্য বলেন, ‘মিডিয়ার থেকে সব কিছু শুনছি। আমি বলব, এসএসসি বা বিকাশ ভবন অবরোধ করাটা কাজের কথা নয়। সরকারি আধিকারিকদের কাজ করতে দেওয়া হোক। কনটেম্পট অফ কোর্ট হলে সেটা শুধু সরকার নয়, তাঁরাও হবেন। তাঁদের ভবিষ্যতের জন্য সেটা খুব একটা সমীচীন বা বাঞ্ছনীয় নয়।’
আরও পড়ুন: ‘পেন্ডিং কিয়া তো এন্ডিং হো গ্যায়া’, শিলিগুড়িতে কাজ ফেলে না রাখার নির্দেশ মমতার
এদিকে এই আন্দোলন করতে গিয়ে তা হিংসার আকার নিয়েছে বলে অভিযোগ। বিকাশ ভবনে বিধাননগর পৌরসভার চেয়ারম্যান সব্যসাচী দত্তের সঙ্গেও অভব্য আচরণ করা হয় বলে অভিযোগ। পুলিশের উপর আক্রমণ নামিয়ে আনা হলে পাল্টা লাঠিচার্জ করা হয়। যা নিয়ে রাজ্য–রাজনীতি সরগরম হয়ে ওঠে। এই ঘটনার পর রাজ্য পুলিশের পক্ষ থেকে মুখ খোলেন এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার। আজ সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় চাকরিহারা শিক্ষক–শিক্ষিকাদের সংযত আন্দোলন করার বার্তা দেন। আর আজ ব্রাত্য বসুর বক্তব্য, ‘চাকরিহারাদের সাত দফা দাবির কথা আমি সংবাদমাধ্যম মারফত শুনেছি। কিন্তু কোনও লিখিত দাবিপত্র জমা পড়েনি। বরং তিন হাজার শিক্ষক শিক্ষা দফতরে চিঠি দিয়ে বলেছেন, তাঁরা সরকারের সঙ্গে আছেন।’
অন্যদিকে এই আন্দোলনরত শিক্ষকদের পাশে রাজ্য সরকার আছে এবং সবটাই করা হচ্ছে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে বলে শিক্ষামন্ত্রী জানান। তার সঙ্গে রিভিউ পিটিশনও ওই সমস্ত শিক্ষক–শিক্ষিকাদের চাকরি ফেরানোর জন্য যে করা হয়েছে সেটাও জানিয়ে দেন শিক্ষামন্ত্রী। তাই শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর কথায়, ‘আমার চোখে সকলেই সমান। কে যোগ্য আর কে অযোগ্য, সেটা বেছে দেওয়া তো আমার কাজ নয়। শুনেছি অবস্থানরত শিক্ষকদের দাবি আছে। কিন্তু সেটা তো লিখিত আকারে জানাতে হবে। সবটাই তো এখনও মৌখিক।’