১৯ বছর বয়সী গুকেশের কাছেই হার স্বীকার করতে চেয়েছে দাবা বিশ্বের সর্বকালের অন্যতম সেরা দাবাড়ু ম্যাগনাস কার্লসেনকে। নিজের দেশেই নরওয়ে চেস ২০২৫ প্রতিযোগিতায় গুকেশের মুখোমুখি হয়ে ম্যাচ হেরে নিজেকে আর সামলাতে পারেননি কার্লসেন। রাগের বশে তিনি টেবিল চাপড়ে ফেলেছিলেন। এরপর নিজের কাজের জন্য ভারতীয় তারকা দাবাড়ুর কাছে দুঃখ প্রকাশ করে নিলেন নরওয়ের তারকা।
চলতি নরওয়ে চেস ২০২৫ টুর্নামেন্টে ক্লাসিকাল দাবায় ম্যাগনাস কার্লসেনকে হারিয়ে হতবাক করে দেন ভারতের দোম্মারাজু গুকেশ । একটা সময় মনে হচ্ছিল কার্লসেনের জয় স্রেফ সময়ের অপেক্ষা। আরও তিন পয়েন্টের ব্যবধান হয়ত বাড়িয়ে ফেলবেন তিনি, কিন্তু সেই সময়ই কিস্তিমাত করেন গুকেশ। চাপের সময়ও নিজের স্নায়ুচাপ ধরে রেখে দুর্ধর্ষ জয় ছিনিয়ে নেন কার্লসেলেনর বিরুদ্ধে। আর তারপরই ম্যাগনাস হতভম্ব হয়ে গিয়ে নিজের রাগ সামলাতে পারেননি।
নিজের ওপর রাগ করেই ফ্রাস্ট্রেশন লুকিয়ে রাখতে না পেরে তিনি সজোরে দাবার টেবিলেই আঘাত করেন বা চাপড় মারেন। প্রতিপক্ষ যেখানে সেই টেবিলেই রয়েছেন, সেখানে এমন কাজ করা চরম অপমানের। সেটা বুঝতে পেরেই নিজের ভুল স্বীকার করতে আর খুব বেশি দেরি করলেন না নরওয়ের এই তারকা। সঙ্গে সঙ্গেই ভারতীয় তারকা তথা বিশ্বচ্যাম্পিয়ন গুকেশকে ‘সরি’ বলে খেলার হল ছেড়ে বেরিয়ে যান কার্লসেন। ভারতীয় দাবাড়ু এমন অসাধারণ জয় তুলে নেওয়ার পর তাঁকে পিঠ চাপড়ে সাধুবাদও জানান কার্লসেন।
এই প্রতিযোগিতারই ওপেনিং রাউন্ডের ম্যাচে কার্লসেনের বিরুদ্ধে হেরে গেছিলেন গুকেশ। তবে এদিনের এই জয়ের ফলে আপাতত প্রতিযোগিতার পয়েন্ট তালিকায় তিন নম্বরে উঠে এলেন ভারতীয় দাবাড়ু। তাঁর পয়েন্ট এখন ৮.৫। গুকেশের সামনে রয়েছেন ম্যাগনাস কার্লসেন এবং ফ্যাবিয়ান কারুয়ানা।
কার্লসেনকে হারানোর পর গুকেশ নিজেই স্বীকার করে নিয়েছেন, দিনটা তাঁর জন্য বেশ ভালোই ছিল। তিনি বলছিলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, আজ আমার হাতে করার মতো তেমন কিছুই ছিল না। মনে হচ্ছিল খেলায় হার নিশ্চিত, তাই আমি এমন কিছু দান দিতে চাইছিলাম, যেগুলো আটকাতে ওকে একটু বুদ্ধিমত্তা দেখাতে হত। আমার তো মনে হচ্ছিল ১০০ বারের মধ্যে ৯৯বারই এই ম্যাচ হারব। তবে আজকে আমার ভাগ্য আমার সঙ্গে ছিল। আজকে ও সময়ের চাপেই গুলিয়ে ফেলেছে। আমি এর থেকে একটা শিক্ষা নিতে পেরেছি যে সময়ের চাপে ভুল যখন তখন হয়ে যেতেই পারে। ’। আর হারের পর কার্লসেন কোনও জবাবই দিতে পারলেন না। অসন্তোষের সুরেই শুধু বলে গেলেন, ‘আমি তো বুঝতেও পারছি না, কীভাবে আজকে এটা হয়ে গেল ’।