মার্কিন নিষেধাজ্ঞা অগ্রাহ্য করে ইরান থেকে ভারতে পেট্রোকেমিক্যাল পণ্য আমদানির অভিযোগে ভারতীয় শিল্পপতি গৌতম আদানির সংস্থার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে। এমনটাই দাবি করা হয়েছে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক রিপোর্টে। ফলে ঘুষকাণ্ডের পর মার্কিন মুলুকে নতুন করে উদ্বেগ বাড়ল গৌতম আদানির।যদিও নতুন অভিযোগ অস্বীকার করছে আদানি গোষ্ঠী। তাদের দাবি, এমন কোনও তদন্ত শুরু হয়েছে বলেও জানা নেই।
নতুন অভিযোগে আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে এবার তদন্ত শুরু করেছে মার্কিন বিচার বিভাগ(ডিওজে)। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে ইরান থেকে ভারতে এলপিজি আমদানি করছে আদানি গোষ্ঠী। নিয়মিত পারস্য উপসাগর থেকে গুজরাটের মুন্দ্রা বন্দরে পৌঁছচ্ছে এলপিজি ট্যাঙ্কার, যে বন্দরের নিয়ন্ত্রণ আদানি পোর্টস এন্ড এসইজেড লিমিটেড-এর হাতে রয়েছে। সম্প্রতি বেশ কয়েকটি তেলের ট্যাঙ্কার সেখানে দেখা গিয়েছে।
আরও পড়ুন-দোকানের মধ্যেই যুবককে এলোপাথাড়ি হাঁসুয়ার কোপ! সিসিটিভি-তে ভয়ঙ্কর দৃশ্য
যদি এই অভিযোগ খারিজ করে আদানি গোষ্ঠীর মুখপাত্র বলেন, 'ইরান থেকে গোপনে আমরা কোনও তেল আমদানি করিনি। এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। ইচ্ছাকৃতভাবে আদানি গোষ্ঠীর সুনাম নষ্ট করার জন্য এই ধরণের যড়যন্ত্র করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, মার্কিন বিচার বিভাগ কর্তৃক যে তদন্তের কথা বলা হচ্ছে, তা সম্পর্কেও আমরা অবগত নই।' শুধু তাই নয়, ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের-এ যে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছেন বেন ফোল্ডি এবং ডেভ মাইকেলস, আদানি গোষ্ঠীর সঙ্গে ইরানের বাণিজ্য় সংক্রান্ত যে তথ্য তুলে ধরা হয়েছে, তাকে ভিত্তিহীন এবং অনিষ্টকর বলেও উল্লেখ করেছে আদানি গোষ্ঠী। তাদের দাবি, ইরান থেকে আসা কোনও জাহাজ, ইরানের পতাকা লাগানো বা ইরানের কোনও ব্যক্তির মালিকানাধীন জাহাজ নোঙর করতে দেওয়া হয় না আদানিদের বন্দরে। বিদেশ থেকে যেটুকু এলপিজি আমদানি করা হয়, তা আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে করা হয়।
উল্লেখ্য, গত মাসেই মার্কিন প্রোসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্পষ্ট ভাষায় নিজের অবস্থান জানিয়ে দিয়েছেন। ট্রাম্প জানান, ইরান থেকে তেল বা পেট্রোকেমিক্যাল পণ্য কেনা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। কেউ যদি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে, সেই দেশের উপরও নিষেধাজ্ঞা চাপাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এই ধরনের লেনদেন যদি অনুমোদনকারী দেশের এক্তিয়ারের মধ্যে নাও পড়ে, সেক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা চাপতে পারে।এই আবহে আদানির গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ওঠা এই নয়া অভিযোগকে কেন্দ্র করে শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
আরও পড়ুন-দোকানের মধ্যেই যুবককে এলোপাথাড়ি হাঁসুয়ার কোপ! সিসিটিভি-তে ভয়ঙ্কর দৃশ্য
প্রসঙ্গত, গত বছর ঘুষ দেওয়ার অভিযোগে গৌতম আদানিকে অভিযুক্ত করে মার্কিন আদালত। আদালত গৌতম এবং তাঁর ভাইপো সাগর আদানির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিল।চলতি বছরে সেই নিয়ে তদন্তে ভারত সরকারের সাহায্য চাওয়া হয়।ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের বরাত পেতে বিভিন্ন সরকারি আধিকারিকদের আদানি গোষ্ঠী ২০০০ কোটি টাকার বেশি ঘুষ দিয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে।মার্কিন বাজার থেকে তোলা টাকাতেই ঘুষ দেওয়া হয়েছিল এবং বিনিয়োগকারীদের কাছে সেই তথ্য গোপন রাখা হয়েছিল বলে জানা যায়।