বাঙালির কাছে তিনি ঠাকুরের মতোই। রবীন্দ্রনাথের আদর্শ, ভাবনা প্রতিনিয়ত চালিত করে একটি গোটা জাতিকে। বাঙালি তথা ভারতের অন্যতম শ্রেষ্ঠ প্রতিভা ছিলেন রবি ঠাকুর। জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ির সন্তান হওয়ায় উত্তরাধিকার সূত্রে ঠাকুর পদবি পান রবীন্দ্রনাথ। কিন্তু তাঁর আসল পদবি কিন্তু ঠাকুর ছিল না। ঠাকুর পরিবারের পদবি কীভাবে ঠাকুর হল, তার কাহিনি আজও চমৎকৃত করে।
মাংসের গন্ধ শোঁকার অপরাধে
ঠাকুুরবাড়ির আদি পদবি ছিল কুশারী। তবে তাঁরা ব্রাহ্মণ সমাজে একপ্রকার বঞ্চিত ছিলেন। কেন? কথিত আছে, এক বিশেষ ধরনের মাংসের গন্ধ শোঁকার অপরাধে তাদের ‘একঘরে’ করা হয়েছিল ব্রাহ্মণ সমাজে। সুন্দরবনে ✅তখন থাকতেন ওই চার ভাই। রতিদেব কুশারি, কামদেব কুশারি, শুকদেব কুশারি, জয়দেব কুশারি। এঁদেরই পরবর্তী পুরুষে জন্ম হয় জগন্নাথ কুশারি। তার থেকেই ঠাকুরবাড়ির বংশধারা এসেছে। জগন্নাথের বংশধর ছিলেন রামানন্দ, তাঁর দুই ছেলে মহেশ্বর আর শুকদেব। তখন কলকাতা বলে আলাদা কোনও শহর ছিল না। ছিল তিনটি গ্রাম - ডিহি কলিকাতা, সুতানুটি ও গোবিন্দপুরে। সুন্দরবন থেকে এই গোবিন্দপুরেই চলে আসেন মহেশ্বর আর শুকদেব। সেখানে থাকাকালীন গ্রামের দরিদ্র মানুষদের নিয়মিত সেবা করতেন দুই ভাই। পাশাপাশি প্রচুর দান-ধ্যান করতেন গ্রামবাসীদের। স্থানীয় মানুষদের মনে এভাবেই ধীরে ধীরে বিশেষ স্থান তৈরি হয় দুই ভাইয়ের জন্য।
গ্রামবাসীদের সম্বোধন
মনে করা হয়, দুই 🍸ভাইকে গ্রামবাসীরা ঈশ্বরপ্রতিম বলে সম্বোধন করতেন প্রায়ই। তাই একটা সময় ঠাকুর বলে ডাকা হত তাদের। এই ঠাকুর ডাককেই নিজের উপাধি হিসেবে প্র🏅থম গ্রহণ করেন শুকদেব। পরে তাঁর ভাই মহেশ্বরের পুত্র পঞ্চাননও কাকাকে অনুসরণ করে ঠাকুর উপাধি গ্রহণ করেন।
গঙ্গার কাছাকাছি দেড় বিঘা জমিতে ঠাকুরবাড়ি
কুশারী পরিবার তখন থেকেই ধীরে ধীরে ঠাকুর পরিবার হিসেবে পরিচিত হতে শুরু করল। এর মাঝেই এক বংশধর নীলমণি ব্যবসায়িক সূত্রে ঘনিষ্ঠ হয়ে পড়লেন কলকাতার আরেক ধনী ব্যবসায়ী বৈষ্ণবচরণ শেঠের। বৈষ্ণবচরণ নীলমণিকে গঙ্গার কাছাকাছি বড়বাজার অঞ্চলে একটি জমি উপহার দেন। বন্ধুত্বের স্মারক হিসেবে ওই দেড় বিঘা জমিতেই তৈরি হয় আজকের জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি। উনিশ শতকের গোড়া থেকেই এই বাড়ি হয়ে উঠেছিল বাংলার সংস্কৃতির প্রাণকেন্দ্র। আজও সেই বাড়ি বা𒅌ঙালির কাছে তীর্থের মতোই!