আমাদের কানের পিছনের পেশীগুলি নিষ্ক্রিয় বা অকেজো, আগে এমনটাই মনে করতেন বিজ্ঞানীরা। যাইহোক, ফ্রন্টিয়ার্স ইন নিউরোসায়েন্সে প্রকাশিত একটি নতুন গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে এই পেশীগুলি, যাকে বলা হয় অরিকুলারিস পোস্টেরিয়র, আসলে সক্রিয় হয়ে ওঠে যখন আমরা কোনও শব্দ মনোযোগ সহকারে শুনি।
এই পেশীগুলি দীর্ঘদিন ধরে মানুষের মধ্যে খুব বেশি ব্যবহার হয় না, তবে আমরা যখন কঠিন শব্দগুলিতে ফোকাস করি তখন তারা 'জাগ্রত' হয়ে ওঠে বলে মনে করা হয়। জার্মানির সারল্যান্ড ইউনিভার্সিটির আন্দ্রেয়াস শ্রোয়ার বলেন, 'তিনটি বড় পেশী আছে যা বাইরের কানকে মাথার খুলি এবং স্ক্যাল্পের সঙ্গে সংযুক্ত করে। বিশেষ করে সুপিরিয়র অরিকুলার পেশীগুলো, যখন আমরা কঠোরভাবে শুনি তখন আরও সক্রিয় হয়ে ওঠে।
কীভাবে সবটা জানতে পারলেন বিজ্ঞানীরা
এই বিষয়ে গবেষণার জন্য, শ্রবণ সমস্যা নেই এমন ২০ জনকে বেছে নেওয়া হয়েছিল। অডিয়োবুক জাতীয় কিছু শোনার সময় বিজ্ঞানীরা একটি বিশেষ টুল ব্যবহার করে তাঁদের কানের পেশীতে বৈদ্যুতিক কার্যকলাপ রেকর্ড করেছেন। তারপরেই সুপ্ত পেশীগুলোর আসল সত্য সামনে এসেছে। বিভ্রান্তিকর শব্দের সংখ্যা এবং পিচ, তারই সঙ্গে ব্যাকগ্রাউন্ডের শব্দের পরিমাণ পরিবর্তন করে তিনটি ভিন্ন স্তর থেকে গবেষণা করতে গিয়ে বিজ্ঞানীরা দেখেছেন যে শোনার কাজটি যত কঠিন হয়ে উঠল, কানের পিছনের পেশীগুলি আরও সক্রিয় হয়ে উঠেছিল। সহজ এবং মাঝারি কাজের সময় এই পেশিগুলো চুপচাপ থাকত, কিন্তু যখন কাজটি কঠিন হলেই তারা প্রচুর কার্যকলাপ করত।
আরও পড়ুন: (Bizarre: প্রেমিকাকে আকৃষ্ট করতে 'ভিলেন' নিয়োগ করবেন প্রেমিকরা! অদ্ভুত বিজনেস শুরু)
গবেষণায় আর কী কী দেখা গিয়েছে
গবেষণায় আরও দেখা গিয়েছে যে কানের পেশীগুলি আরও স্পষ্টভাবে শব্দ ধরার জন্য কানকে কিছুটা সরিয়ে দিয়ে নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে আমাদের আরও ভালোভাবে শুনতে সাহায্য করতে পারে। গবেষকরা আরও বলেছেন যে এই ফলাফলগুলি আমাদের বুঝতে বা শ্রবণ সমস্যাগুলির জন্য চিকিৎসা করার ক্ষেত্রে সহায়তা করতে পারে।
যদিও এটি স্পষ্ট নয় যে কেন এই পেশীগুলি প্রায় ২৫ মিলিয়ন বছর আগে সম্পূর্ণরূপে কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছিল। তবে গবেষকরা মনে করেন যে মানুষ আরও ভালোভাবে তাদের চোখ এবং কণ্ঠস্বর ব্যবহার করতে শিখে যাওয়ায়, আমাদের কান নাড়ানোর আর প্রয়োজন পড়ত না।