শাড়ি পরতে ভালোবাসেন না এমন বঙ্গনারী খুঁজে পাওয়া বেশ কঠিন কাজ। শুধু বাঙালি নয়, ভারতীয় নারীর সৌন্দর্যের প্রতীক হিসাবে ধরা হয় শাড়িকে। শাড়ি মানেই নারীর আবেগ। সেই আবেগে সুড়সুড়ি দিয়েই আস্ত একটা ছবি! হ্যাঁ এই কাণ্ডই ঘটিয়ে ফেলেছেন পরিচালক জুটি সুদেষ্ণা রায় ও অভিজিত্ গুহ। ছবির নাম 'সুদক্ষিণার শাড়ি'। জি বাংলা অরিজিন্যাসের এই ছবিতে নাম ভূমিকায় অভিনয় করলেন শ্রীলেখা মিত্র। রবিবার টেলিভিশনে সম্প্রচারিত হল এই ছবি।ছবিতে একদম সাধারণ মধ্যবিত্ত গৃহবধূর ভূমিকায় ধরা দিলেন শ্রীলেখা। শাড়ির প্রতি তাঁর মারত্মক অবসেশন। শাড়ির প্রতি প্রেম কী মারাত্মক হতে পারে তা খুব সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন শ্রীলেখা। সুদেষ্ণা-অভিজিতের ছবি মানেই তার মধ্যে মনের সূক্ষ্ম অনুভূতিগুলো খুব সুন্দরভাবে প্রাধান্য পায়। এখানেও তাঁর ব্যতিক্রম হয়নি। তবে শুধুই কি শাড়ি নিয়ে অবসেশন নাকি তার ভিতরেও রয়েছে অন্য কোনও গল্প? শাড়ি এখানে নিছকই প্রতীকীসু মাত্র। এ গল্প আসলে নারীর উত্তরণের গল্প, নারীর ক্ষমতায়নের গল্প। যা এগিয়েছে শাড়িকে কেন্দ্র করে। প্রচেত গুপ্তর লেখা গল্প সুদক্ষিণার সিদ্ধান্ত নিল অবলম্বনে তৈরি হয়েছে এই ছবির চিত্রনাট্য, যা লিখেছেন পদ্মনাভ দাশগুপ্ত।১২ হাত শাড়ি তৈরির উপর নির্ভর করে বহু মানুষের জীবন। সাংবাদিক বন্ধুর(বাদশা মৈত্র) সুদক্ষিণাকে প্রস্তাব দেয় তন্তুবায় সম্প্রদায়কে নিয়ে একটা আর্টিকেল লিখতে। কারণ শাড়ির নাড়ি-নক্ষত্র সবটাই খুব ভালোভাবে জানা সুদক্ষিণার। কিন্তু আর্টিকেলের রসদ সংগ্রহ করতে গিয়ে সে দেখে সেইসব মানুষগুলোর দুরাবস্থা, যাদের হাতে তৈরি শাড়ি সুদক্ষিণার কাছে প্রাণের চেয়েও প্রিয়। তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় সুদক্ষিণা। কিন্তু শ্বশুরবাড়ির অগোচরে, কারণ বিয়ের আগেই তাঁকে শর্ত দেওয়া হয়েছিল গৃহবধূ হয়েই থাকতে হবে তাঁকে। বাংলা অনার্সের ডিগ্রী থাকলেও তাই কোনদিনই বাইরে গিয়ে কাজ করার স্বপ্ন দেখতে পারেনি সে। তবে তাঁতিপাড়ার মেয়েদের দুঃখ-দুর্দশা তাঁকে সেই শর্ত ভুলিয়ে দেয়। জীবনের সবচেয়ে বড় সিদ্ধান্তটা নিয়ে নেয় সুদক্ষিণা। সুদক্ষিণার এই সিদ্ধান্ত কীভাবে পাল্টে দেবে তাঁর জীবন সেই নিয়েই এগোবে ছবির গল্প। ৬ গজের শাড়িকে ঘিরে নারীর ক্ষমতায়ণের এক অভিনব গল্পের বুনন শ্রীলেখার 'সুদক্ষিণার শাড়ি'।